রোজভ্যালিকাণ্ড: আদালতে নিজেই সওয়াল সুদীপের, আরও ৬ দিন সিবিআই হেফাজতে সাংসদ
ভূবনেশ্বর: ভুবনেশ্বরের আদালতে, নিজেই সওয়াল করলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। ফের বোঝানোর চেষ্টা করলেন, নোট-বাতিলের প্রতিবাদে সংসদে সরব হয়েছেন বলেই গ্রেফতার। পাল্টা সিবিআইয়ের দাবি, তাদের কাছে যাবতীয় তথ্য-প্রমাণ আছে। ৯ তারিখ পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ বিচারকের। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে উত্তেজনার আঁচ ভুবনেশ্বরের আদালতেও। এজলাসে নিজের হয়ে নিজেই সওয়াল করেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, সিবিআইকে আমি সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি। আমি আইনজীবী নই। আমি ভাল বক্তা। গৌতম কুণ্ডুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের যে অভিযোগ আনা হচ্ছে, তা আমার ভাবনার বাইরে। আমি রেলের স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান। নোট-বাতিল ইস্যু নিয়ে সামনেই কমিটির বৈঠক। আমি না থাকলে ওই বৈঠক ঘিরে অনিশ্চতা তৈরি হবে। মঙ্গলবার গ্রেফতারের পর ভুবনেশ্বর যাওয়ার আগে সুদীপ দাবি করেন, পার্লামেন্টে ভাল পারফরম্যান্সের ফল তাঁকে ভুগতে হচ্ছে। এ দিন আদালতেও এই অভিযোগেই সরব হন লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা। বলেন, নোট বাতিলের প্রতিবাদে আমি সংসদে সরব হয়েছি। সবাই আমার মুখ চেনে। সিবিআই সূত্রে অবশ্য দাবি, তারা যে সব অভিযোগ করছে, তার পক্ষে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ রয়েছে। তাদের দাবি, মহম্মদ কালাম নামে এক ব্যক্তি, ২০১০ সালে এবং গৌতম সরকার নামে আরেক ব্যক্তি, ২০১২ সালে, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে রোজভ্যালির থেকে পাঁচ লক্ষ করে মোট ১০ লক্ষ টাকা নেন। সিবিআই সূত্রে এও দাবি, মঙ্গলবার সুদীপকে জেরার সময় রোজভ্যালির তিনজন কর্মী হাজির ছিলেন। তাঁরা নথি দেখিয়ে বলেন, কবে, কারা সুদীপের হয়ে রোজভ্যালির থেকে টাকা নিয়েছেন। একজন ট্রাভেল এজেন্টও নথি তুলে ধরেন। যাতে স্পষ্ট, বিদেশ ভ্রমণের জন্য টাকা নিয়েছিলেন সুদীপ। সিবিআই সূত্রে দাবি, সেই নথির সত্যতা সুদীপও স্বীকার করেন। যদিও, এ দিন এজলাসে সুদীপ তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার বলেন, রোজভ্যালির টাকায় বিদেশে যাননি সুদীপ। তিনি ৫ লক্ষ টাকা ব্যাঙ্ক ড্রাফট করে ঘোরার খরচ দিয়েছিলেন। এ দিন, শুনানির সময় অবশ্য এজলাসে উপস্থিত থাকতে পারেননি সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা। গায়ের জোরে তাঁদের আটকে দেয় ওড়িশা পুলিশ ও আইনজীবীদের একাংশ। কোর্টে ঢোকার সময়ে তৃণমূল সাংসদের সঙ্গে কথা বলতে সাংবাদিকদের বাধা দিল সিবিআই ও ওড়িশা পুলিশ। হেনস্থা করা হয় এবিপি আনন্দ-সহ একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিকে। তারপর, শুধু আইনজীবীদের উপস্থিতিতে শুনানি চলে এজলাসে।