বাতিল নোট বদলাতে এসে মাফিয়াদের সঙ্গে গ্রেফতার রানিগঞ্জের বিজেপি নেতা, বাজেয়াপ্ত আগ্নেয়াস্ত্র
কলকাতা: সোর্সের খবর একেবার নির্ভূল ছিল! ফাঁদও পাতা হয়েছিল! কিন্তু ফাঁক গলে বেরিয়ে গিয়েছিল অভিযুক্তরা! তাতেও শেষরক্ষা হল না! কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের জালে ৩৩ লক্ষ টাকা ও আগ্নেয়াস্ত্র-সহ ধরা পড়লেন বিজেপি নেতা ও একাধিক কয়লা মাফিয়া! তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, পুলিশের দাবি অনুযায়ী, এই টাকার সবটাই নতুন দু’হাজার টাকা! এসটিএফ-এর সূত্রে দাবি, সম্প্রতি তারা জানতে পারে, কলকাতায় প্রচুর পরিমাণে কালো টাকা ঢোকানোর পরিকল্পনা হচ্ছে। আনা হবে সড়ক পথে। নেপথ্যে রয়েছে দুর্গাপুর-রানিগঞ্জ এলাকার কয়লা মাফিয়া রাজু ঝা। সেইমতো ক’দিন আগে ডানকুনি টোলপ্লাজায় ওঁত পাতেন তদন্তকারীরা। কিন্তু সূত্রের খবর, যানজটের ফাঁক গলে বেরিয়ে যায় কালো টাকার গাড়ি! সন্দেহভাজনদের মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন দেখে, বাগুইআটির এই আবাসনের কথা জানতে পারে এসটিএফ। আর সোমবার দুপুরে আচমকা হানা! ৩ ঘণ্টার তল্লাশিতে উদ্ধার হয়, ৩৩ লক্ষ টাকা! পাওয়া যায় ৩টি আগ্নেয়াস্ত্র! আবাসনের একটি ফ্ল্যাট থেকে হাতেনাতে ধরা পড়ে, কয়লা মাফিয়া রাজু ঝা, রানিগঞ্জের বিজেপি নেতা মনীশ শর্মা ওরফে চিন্টু, লোকেশ সিংহ, পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ সাত জন। ধৃতদের মধ্যে একজন গাড়ি চালক। অভিযান-পর্ব ছিল টানটান থ্রিলারে মোড়া। কারণ, কয়লা মাফিয়া রাজুক চিনতেন না এসটিএফ অফিসাররা। আবাসনের লিফটে তার সঙ্গেই ওঠেন তাঁরা! কিন্তু হোয়াটস অ্যাপে আসা একটি ছবিই চিনিয়ে দেয় রাজুকে! ধৃত সাতজনের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র ও অস্ত্র আইনে মামলা রুজু হয়েছে। এই টাকা অস্ত্র কেনার জন্য আনা হয়েছিল বলেও দাবি করে সরকারপক্ষ। ধৃতদের ৯ দিনের পুলিশ হেফাজত দেন বিচারক। যদিও পুলিশের আরেকটি সূত্রে দাবি, বদল করার জন্যই বাতিল নোট কলকাতায় আনা হয়েছিল। ইতিমধ্যে সেগুলি বদল করাও হয়ে গিয়েছিল। অর্থাত, কালো হয়ে গিয়েছিল সাদা! যদি তাই হয়, তাহলে কীভাবে সফল হল এই অপারেশন? সূত্রের খবর, গ্রেফতারের পরপরই রাজারহাট-নিউটাউন এলাকার সিন্ডিকেটের পাণ্ডারা বিধাননগর কমিশনারেট এলাকার কয়েকজন পুলিশ অফিসারকে ফোন করে। জানতে চায়, ধৃতরা কারা? কত টাকা উদ্ধার হয়েছে? জেরায় কারও নাম করেনি তো? প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি এই টাকার সঙ্গে সিন্ডিকেটের কোনও যোগ রয়েছে? সব সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখছে এসটিএফ।