করোনার জের, মুখ থুবড়ে পড়েছে শক্তিগড়ের ল্যাংচা শিল্প
দোকানগুলির চলে মূলতই রাস্তার যানবাহনের ওপর, যেহেতু বেশিরভাগ যানবাহনই বন্ধ, তাই দেখা মিলছে না খদ্দেরের। ছাঁটাই হচ্ছেন মিষ্টির দোকানের কর্মীরা।
কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান : করোনার ধাক্কায় প্রবল ধাক্কার সম্মুখীন বর্ধমানের বিশেষত্ব। মারণ ভাইরাস রুখতে রাজ্যজুড়ে জারি একাধিক বিষিনিষেধের মধ্যে মিষ্টির দোকান খোলা থাকলেও এখন গণ পরিবহন বন্ধ থাকায় ও প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বেরোনোয় নিষেধাজ্ঞা থাকায় ক্ষতির মুখে ল্যাংচা ব্যবসায়ীরা।
বর্ধমানের শক্তিগড় থেকে গাংপুরের কাছাকাছি পর্যন্ত দু'নম্বর জাতীয় সড়ক বরাবর রাস্তার দুপাশেই রয়েছে অসংখ্য ল্যাংচার দোকান। সাধারণ সময়ে এই সমস্ত দোকানগুলিতেই ভিড়ে ঠাসা থাকে। কিন্তু বর্তমানে মিষ্টির দোকানগুলিতে বিক্রি একেবারেই তলানিতে এসে ঠেকেছে। একটা সময় যখন প্রায় প্রতি দোকানেই গড়ে ১০-২০জন কর্মী নিয়ে কাজ করেও চাহিদা মেটাতে পারছিলেন না দোকানের মালিকরা, এখন সেই সমস্ত দোকানে চলছে কর্মী ছাঁটাই করে বা রোটেশন করে। বিক্রি নেই, কিভাবে তাঁরা কর্মীদের টাকা দেবেন। ফলে ল্যাংচা শিল্পেও চলছে কর্মী ছাঁটাই।
ল্যাংচার দোকানদাররা জানিয়েছেন, ল্যাংচার এই দোকানগুলির চলে মূলতই রাস্তার যানবাহনের ওপর। কিন্তু যেহেতু হাতে গোনা কয়েকটি ছোট চার-চাকা গাড়ি চললেও, বাস সহ বেশিরভাগ যানবাহন চলাচলই বন্ধ, তাই খদ্দের নেই। যার জেরে কার্যতই মুখ থুবড়ে পড়েছে বর্ধমানের এই ল্যাংচা শিল্প।তাই রাজ্য সরকারের কাছে তাদের অনুরোধ কিছুটা সময় যদি তাদের বাড়ানো যায়।
রাজ্যজুড়ে চলছে আংশিক লকডাউন। প্রথম ১৫দিনের বিধি নিষেধ পেরিয়ে ফের করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে আরও ১৫দিনের বিধিনিষেধ তথা আংশিক লকডাউন বাড়ানো হয়েছে। রাজ্যে জারি থাকা বিধিনিষেধের মাঝেও সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত খোলা থাকছে মিষ্ঠির দোকান। কিন্তু করোনার এই দ্বিতীয় ঢেউয়ে রীতিমত সঙ্গীন অবস্থা বর্ধমানের ঐতিহ্যশালী ল্যংচা শিল্পের।
কয়েকদিন আগেই শক্তিগড়ে ২ নং জাতীয় সড়কের ধারে ল্যাংচার দোকানগুলিতে দাড়িতে থাকতো সারি সারি ছোটো গাড়ি,সরকারি ও টুরিস্ট বাস।কিন্তু করোনার জেরে রাজ্যে বিধিনিষেধ জারি হওয়ায় হাতে গোনা কয়েকটি ছোটো গাড়ি দাড়ালেও দেখা নেই বাসের। জমজমাট শক্তিগড়ের চেনা ছবি কার্যত শূন্যতায় পরিনত হয়েছে। আপাতত কঠিন পরিস্থিতির মাঝেও দোকনদারদের প্রত্যাশা দ্রুত ফের পরিস্থিতি আগের মতো স্বাভাবিক হবে।