Hooghly: গোঘাটে মহিলা কর্মাধ্যক্ষকে হেনস্থা, জামিন অভিযুক্ত ৮ তৃণমূল কর্মীর!
গ্রেফতার পরেই অভিযুক্ত ২ তৃণমূল কর্মীর জামিন হয়ে যায়। পরে ধৃত আরও ৬ জনের জামিন হল। ৮ অভিযুক্ত জামিন পাওয়ায় আতঙ্কে আক্রান্ত তৃণমূল কর্মাধ্যক্ষ।
মোহন দাস, সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: গোঘাট তৃণমূলের পঞ্চায়েতে কর্মাধ্যক্ষের উপর হামলা। একজন বাদে ধৃত ৮ তৃণমূলকর্মীরই জামিন পেলেন। আতঙ্কে রয়েছেন আক্রান্ত তৃণমূল নেত্রী। তদন্ত করবে দল, আশ্বাস জেলা সভাপতির।
মহিলাকে ধাক্কা মারতে মারতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, সপাটে চড় মারা হচ্ছে।আক্রান্ত তৃণমূল।অভিযুক্তও তৃণমূল।আর দিনের আলোয় প্রকাশ্যে এই ঘটনা ঘটার পর গ্রেফতারির মাত্র ২৭ ঘণ্টার মধ্যে জামিন পেয়ে গেলেন ৬ অভিযুক্ত।গ্রেফতার হয়েছিলেন মঙ্গলবার রাতে...জামিন পেয়ে গেলেন বুধবার বিকেলে।এর আগেই আরও ২ জনও জামিন পেয়ে গেছেন।অর্থাত তৃণমূল নেত্রী নিগ্রহে অভিযুক্ত ৯ জনের মধ্যে ৮জনই এখন জামিনে মুক্ত!
মঙ্গলবার গোঘাট এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষকে মারধরের ছবি প্রকাশ্যে আসে। এক তৃণমূল নেতার হাতে, দলীয় নেত্রীর আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় তোলপাড় পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। আর এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার শুরু হল জামিন বিতর্ক। ধৃত ৯ জনের মধ্যে ৮ জনের বিরুদ্ধেই জামিনযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ।
একসঙ্গে অনেকে মিলে চিৎকার চেঁচামেচির করার অভিযোগে, ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৬১ নম্বর ধারা,একই উদ্দেশ্যে অপরাধ সংগঠনের অভিযোগে ৩৪ নম্বর ধারা এবং অবৈধ অনুপ্রবেশ ও জমায়েতের অভিযোগে ৪৪৭ নম্বর ধারায় মামলা রুজু করেছিল পুলিশ।
আর প্রত্যেকেই জামিনে ছাড়াও পেয়ে গেলেন।এরা এলাকায় তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক হিসাবেই পরিচিত।আর এই ঘটনায় বিরোধীরা তো অবশ্যই সরব, খোদ আক্রান্ত তৃণমূল নেত্রীও নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন।
আক্রান্ত তৃণমূল নেত্রী ও গোঘাট (১) পঞ্চায়েত সমিতি কর্মাধ্যক্ষ শ্যামলী ঘোষ অবাক। যে ব্যক্তি এভাবে মারধর করল, তাঁকে কীভাবে জামিন দেওয়া হল, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। বলেছেন, চাই সব দোষীরা শাস্তি পাক। আজ আদালতে গোপন জবানবন্দি দিতে এসেছিলাম।
এই ঘটনায় তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছেন আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি বিমান ঘোষ। তিনি বলেছেন, মহিলাদের যেখানে নিরাপত্তা নেই, সেখানে কী অবস্থা রাজ্যের। দলের কর্মাধ্যক্ষকে মারধর করা হচ্ছে। আমার মনে হয় উনিও নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। কীভাবে জামিন হল অভিযুক্তদের?
গোটা ঘটনায় তৃণমূল ও পুলিশের ভূমিকা যখন প্রশ্নের মুখে, তখন সাফাইয়ের সুর শাসক দলের জেলা নেতৃত্বের গলায়। হুগলি জেলার তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব বলেছেন, প্রশাসন প্রশাসনের মতো কাজ করেছে। আদালত কী রায় দেবে, সেখানে আমরা বলতে পারি না। এটা বলতে পারি, দলীয়গতভাবেও তদন্ত হবে। দোষী সাব্যস্ত হলে, দল অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।
রাস্তার ওপর এক মহিলাকে ধাক্কা-চড় মারার পরও...জামিনযোগ্য ধারা কেন দেবে পুলিশ? প্রশ্ন তুলছেন আইনজ্ঞরা। তৃণমূল নেত্রীকে মারধরের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত, তৃণমূল নেতা সুকুর আলি খান বর্তমানে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রয়েছেন।