'বন্দুককে ভয় পাইনা', পাহাড়ে গিয়ে মোর্চাকে হুঁশিয়ারি মমতার
দার্জিলিং: বৃহস্পতিবার পাহাড়ে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক। তার দু’দিন আগে মিরিক পুরসভা জয়ের পর প্রথম বার পাহাড় সফরে গিয়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে হুঁশিয়ারি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! বললেন, কাকে ধমকাচ্ছেন, কাকে চমকাচ্ছেন। বন্দুককে ভয় পাইনা। আমাকে ভয় দেখালে, প্রত্যাঘাত করব। সরকারের সঙ্গে টক্কর নিও না। সরকারের সঙ্গে যে টক্কর নেবে, সে চুরচুর হয়ে যাবে। সোমবার মিরিক যাওয়ার পথে, সৌরিনী বাজার এলাকায় মুখ্যমন্ত্রীকে কালো পতাকা দেখানোর চেষ্টা করেন কয়েকজন মোর্চা সমর্থক। জনসভায় পৌঁছেই, নাম না করে চড়া সুরে মোর্চাকে আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, আমাকে কালো পতাকা দেখানোর চেষ্টা করলো। আমি বললাম এসো এসো...পালিয়ে গেল...ভীতু কোথাকার! কাঞ্চনজঙ্ঘাকে দেখাও তোমাদের কত ক্ষমতা। আকাশ অনেক উঁচু। তোমাদের মাটিতে ঢুকিয়ে দেবে। মাসখানেক পরেই জিটিএ নির্বাচন। সেখানে ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া মোর্চা। অন্যদিকে, মিরিক জয়ের পর জিটিএ দখলে আত্মবিশ্বাসী তৃণমূলও। এই সংঘাতের আবহে জিটিএ-র হিসেব নিয়ে এদিন কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, জিটিএ সরকারের কাছ থেকে যে টাকা পেয়েছে, তার বিশেষ অডিট হবে। আইন আইনের পথে চলবে। আমি অর্থ দফতরকে বলেছি। চেয়ারম্যানকে দেখিয়ে বলছে, চেয়ারম্যানও ছাড় পাবে না। কেউ ছাড়া পাবে না। অডিট করানোর সিদ্ধান্তকে মোর্চা ইস্যু করতে পারে, সেই সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রী এদিন টেনে আনেন, তৃণমূল পরিচালিত কোচবিহার পুরসভার প্রসঙ্গ। বলেন, কোচবিহারের পুর চেয়ারম্যানকে সরিয়ে দিয়েছি। পাহাড়ে কেন ছাড়ব? মানুষের টাকা। যদি সঠিক থাকে, তাহলে আরও টাকা। না হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা। গোটা বক্তৃতায় একবারও গুরুঙের নাম নেননি মমতা। যদিও স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাঁর লক্ষ্য আসলে কে! বলেন, উনি নিজেকে ভগবান ভাবছেন। ভগবান নয়, শয়তান। ঘিসিং ভাল লোক ছিলেন। মদন তামাঙ্গকে কেন খুন করা হল? মদন-হত্যা মামলা যাদের বিরুদ্ধে চলছে, সে লোক আমাদের ভয় দেখাচ্ছে। এরকম করবে আইন আইনের পথছে চলবে। স্কুলে বাংলা ভাষা সংক্রান্ত সরকারি সিদ্ধান্তের জেরে, সন্ধে ছ’টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত, পাহাড়বাসীকে আলো নিভিয়ে রাখার আহ্বান জানিয়েছে মোর্চা। মিরিকের সভা থেকে তা নিয়েও তীব্র কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন মমতা। বলেন, বলছে আলো নিভিয়ে দিন। কী করবেন অন্ধকার করে? চুপচুপ! সবাই অন্ধকারে থাকবে, আর তোমরা আলো জ্বালাবে! উনি কি নিজেকে ভগবান ভাবছে। ভগবান নয়, শয়তান। সংঘাতের বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি, পাহাড়ের উন্নয়নে একাধিক ঘোষণাও করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, একমাস পরেই জিটিএ নির্বাচন। কার্শিয়ং পাইনি, কালিম্পং পাইনি, দার্জিলিং পাইনি। জিটিএ-তে আমদের জেতান। আমরা বাকিটা দেখে নেব। পাহাড় যখন রাজনীতির আঁচে ফুটছে, তখন বৃহস্পতিবারই পাহাড়ে বৈঠকে বসছে রাজ্য মন্ত্রিসভা।