Mukul Roy TMC Joining Speculation: বিজেপি ছেড়ে আজই তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরতে পারেন মুকুল রায়
আজই তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরতে পারেন মুকুল রায়। তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় বৈঠক রয়েছে আজ।
কলকাতা: আজই তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরতে পারেন মুকুল রায়। তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় বৈঠক রয়েছে আজ। এই বৈঠকে দলত্যাগীদের ফেরানো নিয়ে বৈঠক হবে। বৈঠকে থাকবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল ভবনে মুকুল রায়ের সঙ্গে তাঁর ছেলে শুভ্রাংশু রায়ও তৃণমূলে ফিরতে পারেন বলে সূত্রের খবর।
মুকুলের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন নিয়ে বেশ কিছুদিন জল্পনা চলছিল। তাঁর অসুস্থ স্ত্রীকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর থেকে জল্পনা আরও জোরাল হয়েছিল। এরইমধ্যে শুভ্রাংশু রায় ঘুরিয়ে বিজেপিতে আত্মসমালোচনার পরামর্শ দিয়েছিলেন। এই সব ঘটনাক্রমে মুকুলের তৃণমূলে ফেরার জল্পনা জোরাল হয়। শুভ্রাংশু রায় অভিষেকের সৌজন্যের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছিলেন।
সূত্রের খবর, বিজেপির সঙ্গে ক্রমশই দূরত্ব বেড়েছে মুকুলের। বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে কৃষ্ণনগর উত্তর লোকসভা আসনে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। এতে তিনি খুব একটা রাজি ছিলেন না বলে খবর। তাছাড়া, বিজেপিতে শুভেন্দু অধিকারীর গুরুত্ব বৃদ্ধিতেও অসন্তুষ্ট হয়েছেন বলে খবর। কয়েকদিন আগে দলের একটি বৈঠকে গরহাজির থাকেন তিনি। এরইমধ্যে আজ মুকুল রায়ের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের জোরাল সম্ভাবনা রয়েছে বলে সূত্রের খবর। তিনি কালীঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতেও যেতে পারেন বলে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে।
তৃণমূলে থাকাকালীন চাণক্য বলেই পরিচিত ছিলেন মুকুল রায়। তিনি এখন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি।তৃণমূলে থাকাকালীন লোকসভা থেকে রাজ্যসভা, পঞ্চায়েত থেকে বিধানসভা,নির্বাচনের ঘুঁটি সাজাতেন মুকুল।কিন্তু, এবারের বিধানসভা ভোটে তাঁকে সেভাবে বিজেপির হয়ে সার্বিকভাবে কৌশল সাজাতে দেখা যায়নি।কারণ, এবার তাঁকেই কৃষ্ণনগর উত্তর আসনে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। ফলে মূলত নিজের কেন্দ্রের আটকে ছিলেন তিনি।
শুভেন্দু অধিকারীর মতো তৃণমূল থেকে আসা নেতাকে নিজের কেন্দ্রের পাশাপাশি গোটা রাজ্যে প্রচারে কাজে লাগিয়েছে বিজেপি। কিন্তু বহু যুদ্ধের পোড় খাওয়া খেলোয়াড় মুকুল রায়কে আগের মতো এবার রাজ্যজুড়ে খেলতে দেখা যায়নি।
তিনি কৃষ্ণনগর উত্তর থেকে প্রতিদ্বন্দ্বীকে হেলায় হারালেও, তাঁর ছেলে তথা বিজেপি প্রার্থী শুভ্রাংশু রায়কে নিজের পুরনো বিধানসভা কেন্দ্র বীজপুর থেকেই হারতে হয়েছে।বিধানসভা ভোটে জয়ের পর সম্প্রতি শপথ নিতে বিধানসভায় আসেন মুকুল রায়। বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন তাঁর প্রাক্তন সতীর্থ তথা তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর সঙ্গে।সেই সময় বিধানসভায় নতুন বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কিন্তু সেই বৈঠকে যোগ না দিয়েই বিধানসভা থেকে চলে যান মুকুল। বলেছিলেন,“আমি এখন কিছু বলব না। যখন বলার হবে, তখন সাংবাদিকদের ডেকে নেব। মানুষের জীবনে এমন দু’একটা দিন আসে, যখন মানুষকে চুপ থাকতে হয়।”
এরফলে মুকুল রায়ের ভবিষ্যত রাজনৈতিক পদক্ষেপ নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়। কিন্তু, সঙ্গে সঙ্গে ট্যুইট করে তিনি বলেন,‘রাজ্যে গণতন্ত্র ফেরাতে বিজেপি-র সৈনিক হিসেবে আমার লড়াই চলবে। আমি সকলকে কল্পনা আর অনুমান বন্ধ করার অনুরোধ করছি। আমার রাজনৈতিক পথ নিয়ে সংকল্পে অবিচল আমি’।
এরপর ফের রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়, বিজেপি কি মুকুল রায়কে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা করবে, না কি শুভেন্দু অধিকারীকে? কিন্তু, কিছুটা নাটকীয়ভাবেই নিজেকে বিরোধী দলনেতার রেস থেকে সরিয়ে নিয়ে, মুকুল শুভেন্দুর নাম প্রস্তাব করেন। এরপর মুকুল রায় করোনা আক্রান্ত হন। করোনা আক্রান্ত হন তাঁর স্ত্রীও।
তৃণমূল তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকে, বিজেপি নেতারা যখন বিভিন্ন ইস্যুতে সমালোচনায় সরব হচ্ছে, তখন কয়েকদিন আগেই মুকুল পুত্র শুভ্রাংশু ফেসবুকে লেখেন, জনগণের সমর্থন নিয়ে আসা সরকারের সমালোচনা করার আগে, আত্মসমালোচনা করা বেশি প্রয়োজন।
প্রসঙ্গত, ভোটের মাঝে শুভ্রাংশু রায়ের বাবা মুকুল রায় সম্পর্কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়ের গলাতেও শোনা গেছিল কিছুটা নরম সুর।