মমতার আবদনে মান্যতা, নন্দীগ্রাম মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ
গত মাসে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রী। বিচারপতি চন্দর এজলাস থেকে মামলা সরানোর আবেদন জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
সৌভিক মজুমদার,কলকাতা: নন্দীগ্রাম মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ। এই মামলা না শোনার জন্য তাঁকে আবেদন জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নন্দীগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই মামলার শুনানি শেষ হয় গত ২৪ জুন। গত মাসেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রী। অন্য এজলাসে মামলা সরানোর দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদনও করা হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরর তরফে। তবে সরে দাঁড়ানোর আগে বিচারপতি এবং বিচারবিভাগের মানহানির অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রীকে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছেন তিনি।
গত মাসে বিচারপতির কৌশিক চন্দের এজলাস থেকে নন্দীগ্রাম-গননা মামলা সরানোর আর্জি জানানো হয়। মামলা সরানোর আর্জি জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী। কৌশিক চন্দের সঙ্গে একসময় বিজেপির সঙ্গে সক্রিয় যোগাযোগ ছিল, তাই অন্য বিচারপতির কাছে নন্দীগ্রাম গণনা মামলা সরানো হোক, এই মর্মেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির কাছে এজলাস বদলের আবেদন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী।
আজ বিচারপতি চন্দ জানিয়ে দেন, তিনি মামলা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। সেইসঙ্গেই তিনি নির্দেশ দেন, যেহেতু স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে তাঁকে স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে নিজের আপত্তির কথা প্রকাশ্যে এনেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাতে বিচারপতি ও বিচারবিভাগের মানহানি হয়েছে। তাই মুখ্যমন্ত্রীকে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হল। এই টাকা জমা দিতে হবে বার কাউন্সিলে। তবে ইতিমধ্যেই তৃণমূলের তরফে জরিমানার নির্দেশের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আবেদনের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। নন্দীগ্রাম মামলা থেকে বিচারপতি কৌশিক চন্দ সরে দাঁড়ানোয় এখন মামলাটি যাবে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে। তিনিই ঠিক করবেন এরপর কোন বিচারপতির এজলাসে মামলার শুনানি হবে।
এ নিয়ে ট্যুইট করেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। তিনি লেখেন, "আমরা বাঁচি এবং শিখি। আমরা এমন এক পৃথিবীতে বসবাস করি যেখানে সত্যি বলার মাসুল হল ৫ লক্ষ টাকা! আমরা এমন এক পৃথিবীতে বসবাস করি যেখানে মিথ্যে প্রচারের কোনও মূল্য লাগে না! বুঝতে পারছেন তো? মোদি হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়।"
দিলীপ ঘোষের সঙ্গে মামলার বিচারপতির একটি ছবি পোস্ট করে ট্যুইট আগেই তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ ট্যুইট করেছিলেন। তিনি লেখেন, 'বিচারবিভাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে বলছি, বিচারপতি কৌশিক চন্দকে নন্দীগ্রাম মামলার শুনানির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একই অনুষ্ঠানে বিচারপতি কৌশিক চন্দ ও বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ছবি ট্যুইট করে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন ও লোকসভার সাংসদ মহুয়া মৈত্র।
উল্লেখ্য, গত ২ মে বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা হয়। নন্দীগ্রামে ১ হাজার ৯৫৬ ভোটে পরাজিত হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফল ঘোষণার পরই তিনি জানিয়েছিলেন, একে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যাবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যাস বলেন, আমার কাছে অভিযোগ রয়েছে, রায় ঘোষণার পর কারচুপি হয়েছে। তৃণমূলনেত্রী বলেন, "৮ হাজারের উপর এগিয়ে থাকার মার্জিন এক নিমেষে কী করে শূন্য হয়ে যায়? ইচ্ছা করে সার্ভার ডাউন করে রাখা হয়েছিল। না হলে সারা বাংলার এমন ফলাফল, আর নন্দীগ্রামে আলাদা ফল কী ভাবে হয়?"