Saraswati Puja 2021: সামিহা হকের সংস্কৃত স্ত্রোত্রপাঠ, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পুজো বারাসতের কালীকৃষ্ণ গার্লস হাইস্কুলে
Communal Harmony in Saraswati Puja: এই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মৌসুমী সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, ‘প্রথাগত রীতির বাইরে বেরিয়ে এরকম একটা উদ্যোগ নিতে পেরে আমরা স্কুলের সকলেই খুশি।’
সমীরণ পাল, বারাসত: উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাতের কালীকৃষ্ণ গার্লস হাইস্কুলে এক অভিনব পদ্ধতিতে সরস্বতী পুজো আয়োজন করা হল। করোনা অতিমারির কারণে এতদিন স্কুল বন্ধ ছিল। ১২ ফেব্রুয়ারি স্কুল খোলার পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, স্কুলে পুজো হবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখেই। এই স্কুলেরই এক ছাত্রী সামিহা হক ভাল সংস্কৃত বলতে পারে। তার সংস্কৃত উচ্চারণকে সামনে রেখেই কালীকৃষ্ণ গার্লস হাইস্কুলে দেবী বন্দনা হল। আলাদা করে কোনও পুরোহিতকে ডাকা হয়নি। সামিহার কন্ঠে দেবী বন্দনাই স্কুলের একমাত্র পুজো আচার। স্কুলের অন্যান্য ক্লাসের মেয়েরা সামিহাকে সহযোগিতা করে।
এই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মৌসুমী সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, ‘প্রথাগত রীতির বাইরে বেরিয়ে এরকম একটা উদ্যোগ নিতে পেরে আমরা স্কুলের সকলেই খুশি।’
প্রধান শিক্ষিকা আরও জানিয়েছেন, ‘গত বছর পুরোহিতের পুজোটা বিভিন্ন দিক থেকে ভাল না লাগায় আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, তাঁকে আর ডাকব না। বড়দের সাথে কথা বলেছিলাম যে পুজোটা একটা উৎসব। পুরোহিত না ডেকে মেয়েরাই পুজো করুক। মেয়েদের মধ্যে হিন্দু, মুসলমান, আদিবাসী সবাই পুজো করুক। এই কারণেই স্কুলটা সবার, উৎসবও সবার। এটা গত বছর বলেছিলাম। তারপর এই বিষয়টি নিয়ে কারও সঙ্গে কোনও বৈঠক হয়নি বা বৈঠক করার মতো কোনও সুযোগও ঘটেনি। তাই আমি কয়েকজন অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে ফেললাম। সামিহার বাবা যথেষ্ট শিক্ষিত এবং তাঁর মানসিকতাও যথেষ্ট উদার। তাঁকে যখন বললাম যে আমি চাই যে সামিহা পুজোতে থাকুক, তিনি রীতিমতো উচ্ছ্বসিত হয়ে বললেন, নিশ্চয়ই থাকবে। শুধু তাই নয়, ও একটা সংস্কৃত স্তোত্রও পাঠ করতে চায়। সামিহাকে তো দলে নিলামই, তারই সঙ্গে কিছু আদিবাসী মেয়ে আর কিছু হিন্দু মেয়ে যারা ভালো আঁকে, এরকম কয়েকজনকে নিয়ে এবং কয়েকজন দিদিমণিকে নিয়ে আমি সরস্বতী পুজোর গ্রুপটা করেছি। মেয়েদের দিয়ে পুজো করানোর বিষয়ে কোনও দিদিমণিরই আপত্তি ছিল না। আর সব ধর্মের মেয়ে এগিয়ে আসায় কারও আপত্তি নেই। জাতিভেদ প্রথা কোনও শিক্ষিত ব্যক্তির মানা উচিত নয়। আমি মানি না। আমরা মানুষ, তার একটাই ধর্ম মনুষ্য ধর্ম।’