আরও বেশি রোগী পাঠানোর জন্য চাপ দিচ্ছে ডায়াগনস্টিক সেন্টার, জলপাইগুড়ির চিকিৎসকের আত্মহত্যার চেষ্টা
জলপাইগুড়ি: ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রোগী পাঠানোর দাবির চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের জনৈক চিকিৎসক। তাঁর নাম কুমার অতনু। আপাতত আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনি ওই হাসপাতালেই ভর্তি।
চিকিৎসকের পরিবারের দাবি, তিনি প্রথমে ধূপগুড়ি থেকে বাসে জলপাইগুড়ি ফেরার পথে বিষ খান। তারপর আবার বিষ খান জলপাইগুড়ির চেম্বারে বসে। স্থানীয় কোতোয়ালি থানার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তায় পড়ে যান তিনি। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
কিন্তু, কেন আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন ওই চিকিৎসক? কুমার অতনুর স্ত্রী রাজিতা দত্ত রায়ের দাবি, এক বছর আগে স্থানীয় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ঢেলে সাজতে তাঁর স্বামীর কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা ধার নেন সেন্টারের কর্ণধার সৈকত চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও তিনি টাকা ফেরত দিচ্ছিলেন না। এমনকী রোগীদের ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারেই পাঠানোর জন্য অতনুর ওপর চাপ সৃষ্টি করা হত।
রাজিতার আরও দাবি, সম্প্রতি আর্থিক সমস্যায় পড়েছিলেন কুমার অতনু। কিন্তু, বারবার চেয়েও ধারের টাকা ফেরত পাচ্ছিলেন না। তাই তিনি আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেন, ২টো চেক দিয়েছিল। কিন্তু, ভাঙাতে পারেনি। ২ দিন আগে সৈকতের কাছে টাকা ফেরত চান। কিন্তু, মারধর করে। হুমকি দেয়। টাকা দিতে চায়নি।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে, ১১ এপ্রিল স্থানীয় নার্সিংহোমে মীনা ছেত্রী নামে এক মহিলার মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। ৮ জনের নামে অভিযোগ দায়ের হয় থানায়। সে তালিকায় ছিল চিকিৎসক কুমার অতনুর নামও। বর্তমানে মামলাটি কলকাতা হাইকোর্টে বিচারাধীন।
পরিবার সূত্রে আরও জানা গেছে, ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত কুমার অতনু। সব মিলিয়ে তিনি মানসিক অবসাদেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে পুলিশ একপ্রকার নিশ্চিত। সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা রুজু করেছে পুলিশ। তবে অভিযুক্ত পলাতক।