Ambulance Controversy: ছিল অ্যাম্বুল্যান্স, হয়ে গেল টহলদারি ভ্যান, কাঠগড়ায় কালিয়াগঞ্জ পুলিশ
থানার সাফাই, ওই গাড়িটি তাদের হেফাজতে থাকলেও, কখনই ব্যবহার করা হয়নি
সুদীপ চক্রবর্তী, উত্তর দিনাজপুর: ছিল বিধায়ক তহবিলের টাকায় রোগী পরিষেবার জন্য অ্যাম্বুল্যান্স, পুলিশের বদান্যতায় তা রূপান্তরিত হয়ে গেল পুলিশের টহলদারি ভ্যানে।
অ্যাম্বুল্যান্সের এই চরিত্র বদলানোর ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ থানায়। পুলিশের এই কাজের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন জেলার বিরোধী দলগুলি। যদিও এব্যাপারে যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ।
লকডাউনের সময় নিয়মবিধি ভেঙে ওই অ্যাম্বুল্যান্সটি যাত্রী পরিবহণে ব্যবহৃত হওয়ায় কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ তা আটক করেছিল। প্রায় এক বছর কাল কালিয়াগঞ্জ থানার হেফাজতে ছিল "ডব্লিউবি ৫৯বি ২৬৩১" নম্বরের অ্যাম্বুল্যান্সটি।
অভিযোগ, আচমকা তা পুলিশের টহলদারি ভ্যানে রূপান্তরিত করে নিয়েছে কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ। এবিষয়ে পুলিশ সুপার সুমিত কুমারকে ফোন করলে তিনি ফোন কেটে দিয়েছেন। হোয়াটসঅ্যাপে জানতে চাওয়া হলেও তিনি উত্তর দেননি।
কালিয়াগঞ্জ থানার হেফাজতে থাকা অ্যাম্বুল্যান্স পুলিশের জিপে পরিণত হওয়া নিয়ে ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা জেলাজুড়ে।
পুলিশের জিপে রূপান্তরিত হওয়া এই অ্যাম্বুল্যান্সটি হেমতাবাদের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক খগেন্দ্র নাথ সিংহের বিধায়ক উন্নয়ন তহবিলের টাকায় কেনা। যাতে হেমতাবাদ বিধানসভা এলাকার রোগীদের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল থেকে হেমতাবাদ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কিংবা রায়গঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায়।
২০১৫ সালে হেমতাবাদ বিধানসভা এলাকার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে বিধায়ক খগেন্দ্র নাথ সিংহের বিধায়ক উন্নয়ন তহবিলের অর্থে এই অ্যাম্বুল্যান্স প্রদান করা হয়েছিল। করোনা সময়কালে লকডাউন পর্বে ২০২০ সালের ২০ এপ্রিল কালিয়াগঞ্জের ফতেপুরে কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশের নাকা চেকিংয়ের সময় আটক করা হয়েছিল অ্যাম্বুল্যান্সটিকে।
এরপর থেকে কালিয়াগঞ্জ থানাতেই পড়েছিল হেমতাবাদের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক খগেন্দ্র নাথ সিংহের বিধায়ক উন্নয়ন তহবিলের অর্থে প্রদেয় এই অ্যাম্বুল্যান্সের গায়ে বিধায়কের নাম মুছে দিয়ে পুলিশের স্টিকার লাগিয়ে দিয়ে এটিকে পুলিশের টহলদারি ভ্যান তৈরি করে ফেলেছে কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ।
পুলিশের এই নিন্দনীয় কাজে সমালোচনার ঝড় উঠেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিতে। সিপিএমের উত্তর দিনাজপুর জেলা সম্পাদক অপূর্ব পাল বলেন, কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশের এই কাজের নিন্দা করার ভাষা নেই। তিনি এ-ও বলেন, রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য পরিষেবা ভেঙে পড়েছে আর এরাজ্যে পুলিশের এই ধরনের কাজ খুবই স্বাভাবিক। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তই হচ্ছে মানুষকে পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করা।
অপরদিকে, আরও এক বিরোধী রাজনৈতিক দল বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ী বলেন, রাজ্য সরকার যে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে এটাই তার অন্যতম প্রমান। একজন বিধায়কের উন্নয়ন তহবিলের টাকায় প্রদান অ্যাম্বুল্যান্স যা মানুষের পরিষেবার জন্য দেওয়া হয়েছিল তা পুলিশ জিপে পরিণত করেছে পুলিশ। এই ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়।
যদিও এই বিষয়ে কালিয়াগঞ্জ থানার সাফাই, ওই গাড়িটি তাদের হেফাজতে থাকলেও, কখনই ব্যবহার করা হয়নি।