করোনা আবহে আক্রান্তদের পাশে খড়গপুরের টোটো চালক
অ্যাম্বুল্যান্স-সঙ্কট ঘোচাতে বছর আটত্রিশের ওই টোটো চালক এগিয়ে এসেছেন। তাঁর টোটোতে করেই করোনা আক্রান্তদের হাসপাতালে পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি।
খড়গপুর: করোনা আবহে বাড়ছে অ্যাম্বুল্যান্সের চাহিদা। এবার সেই সঙ্কট মেটাতে এগিয়ে এলেন খড়গপুরের এক টোটো চালক। সহযোগিতার হাত বাড়াল স্থানীয় ক্লাবও। খড়গপুরের গুরুদোয়ারা এলাকার বাসিন্দা টি গিরি পেশায় টোটো চালক। অ্যাম্বুল্যান্স-সঙ্কট ঘোচাতে বছর আটত্রিশের ওই টোটো চালক এগিয়ে এসেছেন। তাঁর টোটোতে করেই করোনা আক্রান্তদের হাসপাতালে পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি। আর্থিকভাবে দুর্বল রোগীদের বিনামূল্যে পরিষেবা দিচ্ছেন ওই টোটো চালক। স্থানীয় ক্লাবের পক্ষ থেকে তাঁকে দেওয়া হয়েছে পিপিই কিট, মাস্ক ও স্যানিটাইজার। টোটোকে অ্যাম্বুল্যান্স বানিয়ে করোনা আবহে জরুরি পরিষেবা দেওয়ার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে সুপার।
পৃথিবীর গভীর অসুখ। সঙ্কটকালেও ভুরিভুরি অমানবিকতার অভিযোগ। কোথাও জীবনদায়ী ওষুধ তো কোথাও মৃতদেহ সত্কারের জন্য গুনতে হচ্ছে হাজার হাজার টাকা। গঙ্গা দিয়ে বয়ে যাচ্ছে করোনায় মৃতের স্রোত। এসবের মাঝেই এই জরাগ্রস্ত পৃথিবীর বুকে যেন মানবিকতার রূপোলি রেখা এঁকেদিলেন খড়গপুরের এই টোটোচালক। সংক্রমণের আতঙ্কে যখন প্রিয়জনকেই দূরে ঠেলে দিচ্ছে মানুষ। তখন এগিয়ে এলেন তিনি। পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরের বাসিন্দা টি গিরি। পেশায় টোটোচালক। করোনা আক্রান্তদের পাশে থাকার অঙ্গীকার নিয়েছেন তিনি। নিজের টোটোতে করেই করোনা আক্রান্তদের হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
টোটো চালক টি গিরি বলেন,পরিবারের অথবা বাইরের মানুষ করোনা হলে তাকে কেউ স্পর্শ করে না। আজকের সময় কোন গাড়িওয়ালা পজেটিভ পেশেন্টদের স্পর্শ করতে ভয় করছে।গরিব মানুষদের জন্য টোটো ভাড়া নেব না। যাদের আমাকে টাকা দেওয়ার সামর্থ থাকবে তাদের থেকে নেবো। এখনো পর্যন্ত অনেকগুলো করোনা পেশেন্টদের হাসপাতালে নিয়ে গেছি। ভয় কেন পাব, কাউকে না কাউকে তো এগিয়ে আসতে হবে। যদি আমার পরিবারের কারো হয় তখন তাকে আমাকে নিয়ে যেতে হবে। খড়গপুরের হোক বা বাইরের, সবাইকে আমার পরিবারের লোক ভেবে এই কাজ করছি। আমি শুরু করেছি, আমাকে দেখে অনেকেই এগিয়ে আসবেন।
সামান্য এক টোটোচালকের এই উদ্যোগকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন অনেকেই। খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্য়ায় বলেন, বাড়ির লোক দায়িত্ব নিচ্ছে না, তাদের বাড়ির সদস্য না হয়ে উনি এই করোনা পরিস্থিতিতে অসাধারণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার জন্য কোন প্রশংসাই যথেষ্ট নয়।অ্যাম্বুলেন্সের জন্য প্রচুর অসুবিধা হয়। আসল সমস্যা হয় পেশেন্টকে বাড়ি থেকে আনার ক্ষেত্রে। যখন প্রেসেন্ট রেফার হচ্ছে তখন আমরা হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্স দিতে পারছি। সুনির্দিষ্টভাবে একটি টোটো পেশেন্টদের কে আনতে পারলে তাদের অনেক উপকার হবে। পেশেন্ট খুব তাড়াতাড়ি আমাদের হসপিটাল পর্যন্ত পৌঁছতে পারবে।