Uttarkashi Cloud Burst : ২ কিমি উঁচু থেকে ভেঙে পড়ে পাহাড়ের বিরাট অংশ,জলে তলিয়ে যায় ৩ গ্রাম! ভয়ঙ্কর সেই ঘটনা মনে করাল উত্তরকাশী
সেই ১৭৫০ সাল থেকে এখানে ধারাবাহিকভাবে এই ধরনের দুর্যোগ ঘটছে, কিন্তু এর থেকে কোনও শিক্ষা নেওয়া হচ্ছে না। অভিযোগ অনেকের।

বিপদ সীমার ওপর দিয়ে বইছে নদী৷ তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ছে বাড়ি৷ প্রাণ হাতে নিয়ে জরুরিকালীন ভিত্তিতে চলছে উদ্ধার কাজ৷ ভয়াবহ মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীর ধারালী জনপদ। এখনও পর্যন্ত ৫ টি দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। আহত বহু। জল বাড়ছে গঙ্গা নদীতেও৷ যার জেরে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে হরিদ্বার-ঋষিকেশের একটা বড় এলাকা৷ উত্তরকাশীর ধরালীর ট্র্যাজেডি দেখার পর সবাই আতঙ্কিত। গা শিউরে ওঠা দৃশ্য। তবে এই প্রথম নয় আগেও একাধিক, আরও ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছিল উত্তরাখণ্ডে।
১৭৫০ সালে, উত্তরাখণ্ডে এত বিশালাকৃতি পাহাড় ভেঙে পড়েছিল যে ভাগীরথীর তিনটি গ্রাম ডুবে গিয়েছিল। উত্তরকাশীর ভৌগোলিক অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাই কখনও ভূমিকম্প,কখনও ভূমিধস, কখনও মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয় এই এলাকা। গাড়োয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের প্রধান এবং ভূতাত্ত্বিক অধ্যাপক মহেন্দ্র প্রতাপ সিং বিস্ত ১৭৫০ সালে ঘটে যাওয়া ট্র্যাজেডির কথা জানিয়েছেন।
অধ্যাপক জানান, সেবার ২০০০ মিটার উচ্চতা থেকে বিরাট এক পাহাড়ের অংশ ভেঙে পড়েছিল। আভান্ডা কা ডান্ডা পাহাড়ের একটি বড় অংশ ১৯০০-২০০০ মিটার উচ্চতা থেকে ভেঙে পড়ে। এর জেরে হর্ষিত এলাকার ঝালার কাছে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়। সুক্কি গ্রামের নীচে ভাগীরথী নদীতে পাহাড়টি ভেঙে পড়ে নদীর গতিপথ অবরুদ্ধ করে। ভাগীরথীর প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর, ঝালা থেকে জংলা পর্যন্ত প্রায় ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি বিশাল হ্রদের মতো জলাধার তৈরি হয় এবং তিনটি গ্রাম এতে সম্পূর্ণরূপে ডুবে যায়। অধ্যাপকের অভিযোগ, সেই ১৭৫০ সাল থেকে এখানে ধারাবাহিকভাবে এই ধরনের দুর্যোগ ঘটছে, কিন্তু এর থেকে কোনও শিক্ষা নেওয়া হচ্ছে না। যখনই এখানে ভারী বৃষ্টিপাত হয়, তখন ভূমিধস এবং উপর থেকে ধ্বংসাবশেষ পড়ার আশঙ্কা থাকে।
দুর্যোগের দৃষ্টিকোণ থেকে উত্তরকাশী খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। একইভাবে, ১৯৭৮ সালে, মেঘ ফেটে ডাবরানির কাছে কানোদিয়া গড়ে একটি হ্রদের মতো জলাধার তৈরি হয়। এর ফলে জোশিয়াদার কাছে একটি বিশাল এলাকা ডুবে যায়। ১৯৯৮ সাল থেকে পরপর এখানে মেঘ ভাঙন এবং অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের অনেক বড় ঘটনা ঘটেছে। তা সত্ত্বেও, এখানে অবৈধ নির্মাণ কাজ হয়েই চলেছে।
কী এই মেঘ ফাটা বৃষ্টি?
আবহাওয়া দফতরের সংজ্ঞা অনুযায়ী, মেঘ ভেঙে গিয়ে এক ঘণ্টার মধ্যে কোনও এলাকায় যখন ১০ সেন্টিমিটার বা তার বেশি বৃষ্টি হয় তাকে বলে মেঘ বিস্ফোরণ বা মেঘ ভাঙা বৃষ্টি৷ এই মেঘের উচ্চতা ভূপৃষ্ঠ থেকে কখনও কখনও ১৫ কিলোমিটার পর্যন্তও হতে পারে৷ কখনও কখনও কয়েক মিনিটের মধ্যে ২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে৷ আচমকা এই বিপুল পরিমাণ বৃষ্টিতে নামে হড়কা বান৷ এর আগেও বহুবার এমন ঘটনার সাক্ষী থেকেছে দেশে৷





















