Valentine Day Special: ভ্যালেন্টাইন্স ডে-তে প্রিয়জনকে নিজের হাতে ফোটানো গোলাপ উপহার
এমনিতে গোলাপের প্রতি বাঙালির আকর্ষণ চিরকালের। জয় গোস্বামীর ভাষায় "সব দিন হয়না বাজার হলে হয় মাত্রাছাড়া /বাড়িতে ফেরার পথে কিনে আনি গোলাপ চারা"। লকডাউনের মাঝে সেই শখের গোলাপকেই বড় করে তোলা। আর ভ্যালেন্টাইন্স ডের দিন তাই বাজার থেকে গোলাপ না কিনে বান্ধবীকে উপহার দেওয়া নিজের গাছের গোলাপ।
অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: আজ রবিবার ভ্যালেন্টাইন্স ডে। ভ্যালেন্টাইন্স ডে উপলক্ষে বাজারে গোলাপের চাহিদাও থাকে চড়া। তবে এ বছর নীলাঞ্জনাকে কিছুটা চমক দিতে চায় ব্যারাকপুরের পলাশ। লকডাউনের সময় ঘরে বসে থাকতে-থাকতে একঘেয়ে লাগত। মাঝে মাঝে ডিপ্রেশন। সেই সব থেকে মুক্তি পেতেই লকডাউনে গাছের শখ। জমি নেই তো কী হয়েছে বাড়ির ছাদ, বারান্দা সেখানেই শখের বাগান। আর সেই শখের বাগানেই গোলাপ চাষ।
এমনিতে গোলাপের প্রতি বাঙালির আকর্ষণ চিরকালের। জয় গোস্বামীর ভাষায় "সব দিন হয়না বাজার হলে হয় মাত্রাছাড়া /বাড়িতে ফেরার পথে কিনে আনি গোলাপ চারা"। লকডাউনের মাঝে সেই শখের গোলাপকেই বড় করে তোলা। আর ভ্যালেন্টাইন্স ডের দিন তাই বাজার থেকে গোলাপ না কিনে বান্ধবীকে উপহার দেওয়া নিজের গাছের গোলাপ। যেসব নার্সারি বিদেশে গোলাপ চারা রফতানি করেন তাঁদের এ বছর ব্যবসা খুব একটা ভাল হয়নি। যেমন জকপুরের এক নার্সারির মালিক অশোক মাইতি । তাঁর বক্তব্য বিদেশে এবছর বিশেষ চারা পাঠানো সম্ভব হয়নি তার বদলে বিক্রি হয়েছে মূলত দেশের মধ্যেই। ওড়িশা ,ঝাড়খণ্ড ,রাঁচি ,চন্ডিগড়েও চারা গেছে এই খড়গপুর থেকেই। পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে স্থানীয় ক্রেতাও বেড়েছে। শ্যামনগরের সার ব্যবসায়ী বিপুল চন্দ্র সরকারের বক্তব্য,গত বছরের তুলনায় এই লকডাউনে অন্তত ৬০ শতাংশ বেশি মানুষ বাড়িতে বাগান করেছেন ,সারের ব্যবসা ওবৃদ্ধি পেয়েছে স্থানীয় মার্কেটে।
বহু মানুষই লকডাউনে বিভিন্ন গাছ করেছেন, গোলাপও করেছেন অনেকেই। অনেকে ভাবেন গোলাপ করা বেশ শক্ত। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য ১০ টব মাটির সঙ্গে ৪ টব ভার্মি কম্পোস্ট মিশিয়ে মাটি তৈরি করতে হবে। ৮ ইঞ্চি টবে ২০ গ্রাম নিম খোল। ২০ গ্রাম সিংচুর । ১০ গ্রাম সিঙ্গেল সুপার ফসফেট। পাঁচগ্রাম পটাশ মিশিয়ে মাটি তৈরি করলে ভালো গোলাপ হতে পারে। বিভিন্ন জাতের গোলাপ ছাদবাগানে করা যেতে পারে। দেশি গোলাপ তো আছেই। সেইসঙ্গে আছে। বোরা বোরা, সেন্টেড নাইট, জুলিয়া ইন্গ্রেশ এর মত জাতের গোলাপ।
লকডাউনের মাঝখানে গাছের সমস্যার সমাধানে সহায় হয়েছে বেশকিছু সোশ্যাল মিডিয়ার গ্রুপ। এইরকমই একটি গ্রুপের অ্যাডমিন রাজু কুণ্ডু জানিয়েছেন অনেকেই এই সময় গাছ করেছেন সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা গাছের ছবি পোস্ট করেছেন তাই দেখে তাঁদের সমাধান দেওয়া হয়েছে। আর এভাবেই নিজেদের গাছের শখ লকডাউনের মধ্যে এগিয়ে নিয়ে গেছে গাছ প্রেমীরা। সদ্য গাছ করতে শিখেও এভাবেই অনেকেই শীতে ছাদ বাগানে ফুটিয়ে ফেলেছেন পিটুনিয়া, চন্দ্রমল্লিকা,ইনকা ফুলের মত ফুল। গোলাপেও মজেছেন বহু গাছ প্রেমী। আর তাই ভ্যালেন্টাইন্স ডের দিন নিজের পরিশ্রমের ফুলই উপহার দিচ্ছেন নিজের প্রিয়জনকে। প্রিয়জনের কাছে তাই এহেন উপহারের থেকে দামি কী আর কিছুই হতে পারে!