US Troops Kneel Down: পুতিনের সামনে নতজানু আমেরিকার সেনা, আলাস্কা থেকে ভাইরাল সেই মুহূর্ত, তীব্র সমালোচনার মুখে ট্রাম্প
Donald Trump-Vladimir Putin Meet: ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যখন খড়্গহস্ত ট্রাম্প, আমেরিকার সেনা কেন পুতিনের জন্য নতজানু হল, প্রশ্ন উঠছে দেশের অন্দরেই।

নয়াদিল্লি: দফায় দফায় সাত ঘণ্টা ধরে বৈঠক হবে বলে ঠিক ছিল। কিন্তু আড়াই ঘণ্টাতেই আলোচনায় ইতি টানলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সেই নিয়ে চর্চার মধ্যেই দুই রাষ্ট্রনেতার সাক্ষাতের বেশ কিছু মুহূর্ত ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সোশ্য়াল মিডিয়ায়, যার মধ্যে আমেরিকার সেনার নতজানু হওয়ার ভিডিওটি বেশি নজর কেড়েছে। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যখন খড়্গহস্ত ট্রাম্প, আমেরিকার সেনা কেন পুতিনের জন্য নতজানু হল, প্রশ্ন উঠছে দেশের অন্দরেই। (US Troops Kneel Down)
রাশিয়া এবং ইউক্রেনের যুদ্ধ থেকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নিরাপত্তা-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে আলাস্কায় দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আয়োজন হয়েছিল। ট্রাম্প ও পুতিনের এই বৈঠকে নজর ছিল ভারতেরও, কারণ রাশিয়ার থেকে তেল কিনে ভারত যুদ্ধে মদত জোগাচ্ছে বলে বার বার অভিযোগ তুলেছেন ট্রাম্প। ভারতের উপর ৫০ শতাংশ ‘শুল্ক শাস্তি’ আরোপ করেছেন তিনি। কিন্তু বৈঠক হলেও, শেষ পর্যন্ত ঐক্যমত্য তৈরি হয়নি দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে। বরং পুতিনকে আপ্যায়নে কোনও খামতি না রাখলেও, ট্রাম্পকে খালিহাতেই ফিরতে হয়েছে বলে মত কূটনীতিকদের একাংশের। (Donald Trump-Vladimir Putin Meet)
আর সেই আবহেই পুতিনের জন্য আমেরিকার সেনার নতজানু হয়ে থাকার মুহূর্ত ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। ২০১৮ সালের পর এই প্রথম সরকারি ভাবে মুখোমুখি হলেন ট্রাম্প ও পুতিন। আলাস্কায় পুতিনকে স্বাগত জানাতে তাই হাজির ছিলেন খোদ ট্রাম্প। বিমানঘাঁটিতে লাল গালিচা পাতা হয়, যার উপর দিয়ে হেঁটে আসেন দুই রাষ্ট্রনেতা। ২০২২ সালে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এই প্রথম আমেরিকার মাটিতে পা রাখলেন পুতিন। হাততালি দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানান ট্রাম্প। করমর্দন করে হাসিমুখে ছবিও তোলেন দু’জন। পুতিন বিমানঘাঁটিতে নামার পর তাঁর মাথার উপর দিয়ে আমেরিকার যুদ্ধবিমানও উড়ে যেতে দেখা যায়।
কিন্তু সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ে একটি দৃশ্য, যেখানে পুতিনের বিমানের সিঁড়ির ঠিক নীচে নতজানু অবস্থায় বসে থাকতে দেখা যায় আমেরিকার সৈনিকদের। পুতিনের জন্য যে লালগালিচা পাতা হয়েছিল বিমানঘাঁটিতে, সেটিকে টানটান রাখতেই কয়েকজন সৈনিক হাঁটু গেড়ে বসে যান। কিন্তু রুশ প্রেসিডেন্টের জন্য় আমেরিকার সৈনিকদের নতজানু অবস্থান মোটেই ভাল ভাবে নেননি আমেরিকার সাধারণ নাগরিকরা। এমনকি বিষয়টি নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে ইউক্রেনেও। রাশিয়াকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করানোর জন্য যখন ট্রাম্পকে ভরসা করছেন ইউক্রেনীয়, সেই সময় পুতিনের জন্য় আমেরিকার সৈনিকদের নতজানু অবস্থান মোটেই আশাব্যাঞ্জক নয় বলে মত তাদের।
Make Kneeling Great Again pic.twitter.com/dqtZLxKhBK
— Mustafa Nayyem (@mefimus) August 15, 2025
প্রকাশ্যেই এ নিয়ে সরব হয়েছেন ইউক্রেনের স্টেট এজেন্সি ফর রেস্টোরেশন অ্যান্ড ইনফ্র্যাস্ট্রাকচার ডেভলপমেন্টের প্রাক্তন প্রধান মুস্তাফা নায়েম। সরাসরি ট্রাম্পকে কটাক্ষ করে তিনি লেখেন, ‘নতজানু হওয়াকে আবারও মহান করে তুলুন’। ট্রাম্পের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেন’ স্লোগান নিয়েই কটাক্ষ ছুড়ে দেন নায়েম। ইউক্রেনের এক সৈনিক, অলেকজান্ডার সোলোঙ্কো বলেন, “আমেরিকার সেনার জন্য দুঃখ হচ্ছে। পুতিনের জন্য লালগালিচা পাততে বাধ্য করা হল ওঁদের। কেউ এত অপমানিত হোন চাই না আমি।
ইউক্রেনের সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই ছবি ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। এমনকি আমেরিকার নাগরিকদের অনেকেও এ নিয়ে সরব হয়েছেন। ‘যুদ্ধাপরাধী’র সামনে কেন নতজানু হলেন আমেরিকার সৈনিকরা, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। পুতিনকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করাতে না পারা ট্রাম্প প্রশাসনের জন্যও ছবিটি যথেষ্ট অর্থবহ বলেও মনে করছেন কেউ কেউ। ম্যাসাচুসেটসের ডেমোক্র্যাট নেতা জিম ম্যাকগভার্ন লেখেন, ‘যুদ্ধাপরাধীর জন্য লালগালিচা। পুতিনকে গ্রেফতার করা উচিত ছিল, আপ্যায়ন নয়। অত্যন্ত লজ্জাজনক ঘটনা’।
Let this sink in to your mind.
— Eero Jansson Fella the White (@EeroJansson) August 15, 2025
USA bends on the knees and put red carpet to mass murderer and war criminal Putin.@AmbJohnBolton @SenMarkKelly @LindseyGrahamSC @USAmbNATO @donaldtusk @RepJasonCrow @maddow@RepDonBacon @McFaul@wolfblitzer @SenSanderspic.twitter.com/3atHL0OrSE
এত প্রচার সত্ত্বেও ট্রাম্প এবং পুতিনের বৈঠক থেকে ইতিবাচক কিছু বেরিয়ে আসেনি। যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়া তো দূর, বরং রাশিয়া ও ইউক্রেন নিয়ে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করবেন না বলে বার্তা দিয়েছেন পুতিন। ফলে তাঁকে আপ্যায়ন করা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে ট্রাম্প সরকারকে। সেই নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভাও। তাঁর কথায়, ‘পশ্চিমি সংবাদমাধ্যমের মাথার ঠিক নেই। তিন বছর ধরে বলছিল, রাশিয়া কোণঠাসা। আজ তারাই দেখল, রুশ প্রেসিডেন্টের জন্য আমেরিকায় লালগালিচা পাতা হল’। আমেরিকা এবং রাশিয়ার পারস্পরিক সম্পর্কের যে ইতিহাস, তা মাথায় রেখেও এই একটি ছবি ভবিষ্যতের জন্য রাশিয়া বাঁধিয়ে রাখতে পারে বলে বিদ্রুপ করেছেন কেউ কেউ।






















