Electoral Bonds: সবচেয়ে বেশি লাভবান BJP-ই, যে কারণে নির্বাচনী বন্ড নিয়ে বিতর্ক গোড়া থেকে...
Electoral Bonds Scheme: কোনও কর্পোরেট সংস্থা বা ব্যক্তি যদি দেশের কোনও রাজনৈতিক দলকে চাঁদা দিতে চান, তাহলে এই নির্বাচনী বন্ড কিনে সেই দলকে দিতে পারেন।
নয়াদিল্লি: সাধারণ নাগরিকের আয়ের উৎস-সহ খুঁটিনাটি সরকারের নখদর্পণে। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার থেকে বঞ্চিত সাধারণ মানুষ। তাই নির্বাচনী বন্ড নিয়ে গোড়া থেকেই বিতর্ক। এবার সেই নির্বাচনী বন্ডকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করল সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ কেন্দ্রের এই প্রকল্পকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে। কিন্তু যে নির্বাচনী বন্ডকে ঘিরে এত বিতর্ক, তা আসলে কী, জেনে নেওয়া যাক। (Electoral Bonds)
কোনও কর্পোরেট সংস্থা বা ব্যক্তি যদি দেশের কোনও রাজনৈতিক দলকে চাঁদা দিতে চান, তাহলে এই নির্বাচনী বন্ড কিনে সেই দলকে দিতে পারেন। ১ হাজার, ১০ হাজার, ১ লক্ষ, ১০ লক্ষ এবং ১ কোটি টাকার বিনিময়ে এই বন্ড কিনতে পাওয়া যায়। রাজনৈতিক দলগুলি সেই বন্ড ভাঙিয়ে নিজেদের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করতে পারে। কিন্তু কে, কত টাকা দিচ্ছেন, তা প্রকাশ করা হয় না। অর্থাৎ কোন দলকে কে বা কারা চাঁদা দিচ্ছেন এবং তার বিনিময়ে কী সুবিধা পাচ্ছেন, তা বোঝা যাবে না। (Electoral Bonds Scheme)
২০১৮ সালে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার নির্বাচনী বন্ডের সূচনা করে। এর আওতায়, স্টেট ব্য়াঙ্ক অফ ইন্ডিয়া থেকে এই নির্বাচনী বন্ড কিনে রাজনৈতিক দলগুলিকে অনুদান দেওয়ার নিয়ম চালু হয়। কিন্তু এখানেও রয়েছে ট্যুইস্ট। SBI একটি রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাঙ্ক। কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন সরকারের কাছে ব্যাঙ্কের সমস্ত তথ্যই রয়েছে। অর্থাৎ বিরোধী দলগুলিকে কে বা কারা অনুদান দিচ্ছেন, তা ক্ষমতাসীন সরকারের নখদর্পণে।
আরও পড়ুন: Election 2024: ভোটের মুখে বড় ধাক্কা রাজনৈতিক দলগুলির, নির্বাচনী বন্ড বিক্রিতে 'সুপ্রিম' নিষেধাজ্ঞা
পৃথিবীর আর কোনও দেশে নির্বাচনী বন্ডের ব্যবস্থা নেই। সেই কারণেই এই নির্বাচনী বন্ডের বিরোধিতা শুরু হয়। কারণ ২০১৮ সাল থেকে এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমেই রাজনৈতিক দলগুলির কাছে ১৬ হাজার কোটি টাকা অনুদান এসেছে। ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত এই নির্বাচনী বন্ড থেকে কোন দল, কতটা লাভবান হয়েছে, তার রিপোর্ট প্রকাশ করে অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (ADR), তাতে দেখা যায়, নির্বাচনী বন্ড মারফত ৫৭ শতাংশ অনুদানই BJP-র ঝুলিতে গিয়েছে।
সম্প্রতি জাতীয় নির্বাচন কমিশন যে বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ করে, তাতে দেখা যায়, ২০২২-'২৩ অর্থবর্ষেই শুধু এই নির্বাচনী বন্ড থেকে ১৩০০ কোটি টাকা আয় করেছে BJP. ২০২২-'২৩ অর্থবর্ষে BJP-র মোট আয় ছিল ২১২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৬০ শতাংশই এসেছে নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে। সেই তুলনায় ২০২২-'২৩ অর্থবর্ষে কংগ্রেস মাত্র ১৭১ কোটি টাকা আয় করেছে। সমাজবাদী পার্টি নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে আয় করেছে মাত্র ৩.২ কোটি টাকা। TDP নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে ৩৪ কোটি টাকা আয় করেছে
এই নির্বাচনী বন্ড নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন উঠে আসছে। সেই নিয়ে দুই অলাভজনক সংস্থা, ADR এবং Common Cause সুপ্রিম আদালতে মামলা দায়ের করে। CPM-এর তরফেও আলাদা করে দু'টি আবেদন জানানো হয়। নির্বাচনী বন্ড প্রকল্পে ইতি টানার আবেদন জানানো হয় তাতে। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে সেই মামলায় শুনানি শেষ হয়। শেষ পর্যন্ত ছ'বছর পর, বৃহস্পতিবার নির্বাচনী বন্ডকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করল দেশের সর্বোচ্চ আদালত।