Russia-Ukraine War: ক্রামাটর্সক স্টেশনে আছড়ে পড়ল রুশ রকেট, চার শিশু-সহ হত ৫০, আহত ৯০
Russia-Ukraine Conflict: এরই মধ্যে প্রকাশ্যে ইউক্রেনের বোরোডিয়াঙ্কা শহর থেকে ভয়াবহ দৃশ্য উঠে এসেছে।
কিভ: রুশ রকেটে ধ্বংস ইউক্রেনের ক্রামাটর্সক স্টেশন (Kramatorsk) । ৪ শিশু-সহ মৃত্যু হয়েছে ৫০ জনের। প্রত্যেক যুদ্ধপরাধীকে শাস্তি পেতে হবে বলে মস্কোকে নিশানা করে হুঁশিয়ারি ইউক্রেনের (Russia Ukraine War)। যদিও সরকারিভাবে হামলার দায় স্বীকার করেনি মস্কো। বুচার পর বোরোডিয়াঙ্কাতেও রুশ সেনার বিরুদ্ধে নিধনযজ্ঞ চালানোর অভিযোগ। নিন্দায় সরব বিশ্ব।
আহত হয়েছেন অন্তত ৯০ জন
ভয়াবহ যুদ্ধ থেকে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টায় স্টেশনে তখন ট্রেনের অপেক্ষায় হাজার চারেক মানুষ। চারিদিকে থিকথিকে ভিড়। সেই সময়ই হঠাৎই ধেয়ে এল রাশিয়ার তোচকি-ইউ রকেট। ভয়ঙ্কর যুদ্ধের আরও এক মর্মান্তিক পরিণতি। শুক্রবার ইউক্রেনের ক্রামাটর্সক শহরে রেলস্টেশনে রকেট হামলা চালায় রাশিয়া। তাতে চার শিশু-সহ প্রাণ হারিয়েছেন ৫০ জন নিরীহ। আহত অন্তত ৯০।
এই ঘটনার পর ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা মস্কোকে নিশানা করেন। অভিযোগ করেন, হত্যাকারীরা অবাধ নিধনযজ্ঞ চালাচ্ছে। প্রত্যেক যুদ্ধপরাধীকে এর শাস্তি পেতে হবে।
এরই মধ্যে প্রকাশ্যে ইউক্রেনের বোরোডিয়াঙ্কা শহর থেকে ভয়াবহ দৃশ্য উঠে এসেছে। ইউক্রেনের বুচা শহরে অবাধ হত্যালীলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। সেই বুচা থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরেই অবস্থিত বোরোডিয়াঙ্কাতে রুশ সেনা ভয়াবহ নিধনযজ্ঞ চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন খোদ প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তাঁর কথায়, বুচার বর্বরতাকেও ছাপিয়ে যাচ্ছে বোরোডিয়াঙ্কার পরিস্থিতি। অন্তত ৩০০ জনকে নির্বিচারে খুন করেছে রাশিয়ার সেনা। জেলেনস্কির আরও অভিযোগ, কৌশলগতভাবেই ইউক্রেনের স্কুল, হাসপাতাল, স্টেশন, নিরীহ নাগরিকদের টার্গেট করছে রাশিয়া।
বুচার পরে বোরোডিয়াঙ্কা শহরেও রাশিয়ার সেনার বিরুদ্ধে হত্যালীলা চালানোর অভিযোগ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ইউক্রেনীয় সেনার প্রত্যাঘাত এড়াতে নিরীহ ইউক্রেনবাসীদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগও উঠেছে রুশ সেনার বিরুদ্ধে! পাল্টা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দাবি, এই সব কিছুর নেপথ্যে আছে ইউক্রেনের নিষ্ঠুর ষড়যন্ত্র।
বুচা, বোরোডিয়াঙ্কার ঘটনার নিন্দায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন,রাশিয়া যা করছে, তা অসংবেদনশীল এবং যুদ্ধপরাধ ছাড়া কিছুই নয়। অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইউক্রেন থেকে সেনা প্রত্যাহার করা উচিত মস্কোর। ইউক্রেনের উপর রুশ আগ্রাসনের এই বিধ্বংসী চেহারা দেখে শিউরে উঠছে গোটা বিশ্ব। যদিও এখনও পর্যন্ত রাশিয়ার নমনীয় হওয়ার কোনও ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে না।
ইউক্রেনের বুচায় বর্বরতার পরে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদ থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে রাশিয়াকে। প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় ৯৩টি দেশ। ভোট দানে বিরত ছিল ভারত। পাল্টা রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া, এই সাসপেনশন বেআইনি এবং রাজনৈতিক ভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
ইউক্রেনে লাগাতার হামলার পর রাশিয়ার উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করছে আমেরিকা, ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভূক্ত বিভিন্ন দেশ। মস্কোকে জব্দ করতে কখনও রাশিয়ার ব্যাঙ্কগুলির উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে। খারিজ করা হয়েছে সমুদ্র পথে বাণিজ্য বন্ধ করতে বিভিন্ন বন্দরে রাশিয়ার জাহাজ প্রবেশের অনুমতি ।
আন্তর্জাতিক মহলে কোণঠাসা রাশিয়া
রাশিয়াকে অর্থনৈতিকভাবে কোণঠাসা করার কৌশল নিয়েছে আমেরিকা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। রাশিয়া থেকে তেল আমদানি নিষিদ্ধ করার পক্ষে ভোট দিয়েছে মার্কিন কংগ্রেস। কেড়ে নেওয়া হচ্ছে মোস্ট ফেভারড্ নেশনের তকমাও। পাশাপাশি রাশিয়ার কয়লা, রাসায়নিক, কাঠ-সহ বিভিন্ন দ্রব্যের আমদানির ওপরে পঞ্চম দফায় নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নও।
সংঘাতের আবহেই এখন প্রশ্নটা ক্রমশ বড় হয়ে উঠছে যে, রাশিয়া কবে এই যুদ্ধ থামাবে? বুচা থেকে বোরোডিয়াঙ্কা, ইউক্রেনের একাধিক শহরে রুশ সেনা নির্বিচারে হত্যালীলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করছে কিভ। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে সমঝোতা সূত্র খোঁজা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তবে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এদিনই দাবি করেছে, ইউক্রেনের উত্তরাংশ থেকে সেনা সরিয়েছে রাশিয়া।