Viral Video: সন্তানস্নেহে এই গাছ লালন করেছিলেন, টাকার লোভে বৃদ্ধাকে না জানিয়েই বৃক্ষ-নিকেশ! শেষ স্মৃতি জড়িয়ে কান্না অশীতিপরের
Video Viral: ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, হাউ হাউ করে হাপুস নয়নে কেঁদে যাচ্ছেন এক অশীতিপর বৃদ্ধা। চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা, বয়সের ভারে নুব্জ শরীর।

নয়া দিল্লি: 'ওই ঘাসিয়াড়াকে বলো-না, আমার ওই গাছগুলো যেন না কাটে', রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'বলাই' গল্পের বৃক্ষপ্রেমী বলাই-এর উক্তিটি মনে আছে? গাছ কাটা হতেই কাকিমার কোল জড়িয়ে কেঁদে উঠেছিল সে। এবার এমনই এক দৃশ্য দেখা গেল সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, হাউ হাউ করে হাপুস নয়নে কেঁদে যাচ্ছেন এক অশীতিপর বৃদ্ধা। চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা, বয়সের ভারে নুব্জ শরীর। কিন্তু তাঁর লাগানো গাছ কেটে ফেলা হয়েছে, খবর পেতেই ছুটে আসেন তিনি। দৃশ্য দেখে হাউ হাউ করে কেঁদে ফেলেন। ঘটনাটি ঘটেছে ছত্তিশগঢ়ে।
এই ভিডিওটি শেয়ার করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। সেখানে দেখা যাচ্ছে, কেটে ফেলা গাছের গুঁড়িতে মাথা ঠেকিয়ে কেঁদেই চলেছেন বৃদ্ধা, এ যেন সন্তানশোক-তুল্যই। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এক্স পোস্টে লিখেছেন, 'খুবই হৃদয়বিদারক ঘটনা। ২০ বছর আগে এই গাছটিকে চারা অবস্থায় পুঁতেছিলেন, আজ সেটি মহীরুহ হয়ে উঠেছিল। সেই গাছ কেটে ফেলায় যেভাবে কেঁদে চলেছেন বৃদ্ধা, তা বাকিদের চোখে জল আনতে বাধ্য।'
গ্রামের এক বাসিন্দার দায়ের করা অভিযোগ অনুসারে, ৫ অক্টোবর সকালে, খায়রাগড়ের ইমরান মেমন তার এক সহযোগীকে নিয়ে এই গাছটি কাটার চেষ্টা করলে গ্রামবাসীরা প্রতিবাদ করে তাদের থামায়। কিন্তু পরদিন সকালেই দেখা যায় গাছটি কেটে ফেলা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ভিডিওর ওই বৃদ্ধার নাম দেওলা বাই, বয়স ৮৫। জানা গিয়েছে, ব্যক্তিগত লাভের জন্যই অশ্বত্থ গাছটি কেটে ফেলা হয়। নিজের হাতে লাগানো একটি অশ্বত্থ গাছ কেটে ফেলায় আকুল কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। প্রায় দু'দশক ধরে সন্তানের স্নেহে লালন করা গাছটিকে হারিয়ে তাঁর এই আকুল কান্না 'হৃদয়বিদারক' মানছেন সকলেই।
এই গাছটিকে নিজের 'ছেলের মতো' ভালবাসতেন বৃদ্ধা। প্রতিদিন এটির পুজো করতেন, জল, ধূপ দিতেন এবং লাল সুতো দিয়ে বেঁধে রাখতেন, ঠিক যেমন একজন মা তার ছেলেকে সমস্ত খারাপ কিছুর নজর থেকে বাঁচাতে যা করে, তেমনই।
তবে সমাজকর্মীরা বৃদ্ধাকে আরেকটি নতুন অশ্বত্থ গাছ লাগানোর জন্য অনুরোধ করেছেন।
প্রসঙ্গত, একটি গাছ কেবল সবুজের জোগানই দেয় না, এটি ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং বিশ্বাসের শিকড়কে পুষ্ট করে। দেওলা বাইয়ের অশ্বত্থ গাছ হয়তো আর নেই, কিন্তু তার বিশ্বাস এখনও বেঁচে আছে, যা প্রমাণ করে যে মানুষ যেখানে লোভে অন্ধ, সেখানে প্রকৃতি এখনও মা হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।
This is such heart-wrenching scene!
— Kiren Rijiju (@KirenRijiju) October 11, 2025
𝐀𝐧 𝐞𝐥𝐝𝐞𝐫𝐥𝐲 𝐰𝐨𝐦𝐚𝐧 𝐰𝐞𝐞𝐩𝐬 𝐛𝐢𝐭𝐭𝐞𝐫𝐥𝐲- 𝐚𝐟𝐭𝐞𝐫 𝐏𝐞𝐞𝐩𝐚𝐥 𝐭𝐫𝐞𝐞 𝐬𝐡𝐞 𝐩𝐥𝐚𝐧𝐭𝐞𝐝 𝟐𝟎 𝐲𝐞𝐚𝐫𝐬 𝐚𝐠𝐨 𝐢𝐬 𝐜𝐮𝐭 𝐝𝐨𝐰𝐧😢
I'm told this occurred in the State of Chhattisgarh. #EkPedMaaKeNaam pic.twitter.com/7UeuSSmKAr
এদিকে, গ্রামের বাসিন্দা প্রমোদ পটেলের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তে নামে। খয়রাগড়-ছুইখাদান-গণ্ডাই (কেসিজি) জেলার পুলিশ ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংবিধানের (বিএনএস) একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হানার উদ্দেশ্যে কৃতকর্মের জন্য ২৯৮ নম্বর ধারা, অনিষ্ট সাধনের জন্য ২৩৮ নম্বর ধারা এবং ৩(৫) নম্বর ধারা।
জিজ্ঞাসাবাদের সময়, অভিযুক্তরা স্বীকার করেছে যে তারা মেমনের সম্প্রতি কেনা একটি প্লটের সামনে অবস্থিত সরকারি জমি সমান করতে চেয়েছিল। জানা গেছে, তিনি লালপুরের প্রকাশ কোসরের সাহায্য চেয়েছিলেন, যিনি মেমন পাহারা দেওয়ার সময় গাছটি কাটার জন্য একটি কাটার মেশিন ব্যবহার করেছিলেন। এই ঘটনার পর, তারা দুজন খয়রাগড়ে পালিয়ে যায় এবং কাটার যন্ত্রটি নদীতে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ। এটি সনাক্ত করার জন্য ডুবুরিদের মোতায়েন করা হয়েছে।






















