Rajasthan Travel Tips: রাজস্থানে ঘুরতে যাবেন? এই পাঁচটি জায়গা তালিকায় রাখতেই হবে!
Travel Destination: এক একটি শহরের এক একরকম সৌন্দর্য। হস্তশিল্প থেকে প্রাচীন দুর্গ- ডালি সাজিয়ে বসে মরু শহর
ভারতের একেবারে পশ্চিমপ্রান্তের রাজ্য রাজস্থান (Rajasthan)। কয়েকশো দুর্গ, প্রাসাদ, হ্রদ, নদী আর বহু প্রাচীন দ্রব্যের স্থান। আর এইসবই রাজ্যটিকে পর্যটনের মানচিত্রে নিয়ে এসেছে। রাজস্থানের ইতিহাস নানাদিক থেকে সমৃদ্ধ। একাধিক ঐতিহাসিক যুদ্ধ, স্বনামধন্য রাজা এবং দুর্দান্ত দুর্গের ইতিহাস জড়িয়ে এই রাজ্যের সঙ্গে। Land of Kings বা রাজাদের বাসস্থান হিসেবেও পরিচিত এই রাজ্য। রাজস্থানের প্রতিটি শহর ইতিহাস এবং অনন্য হস্তশিল্পের সংস্কৃতিতে মোড়া।
রাজস্থানে ঘুরতে এলেই আপনাকে স্বাগত জানাবে এখানকার লোকনৃত্য (Folk Dance), বন্যপ্রাণ (Wild Life)। তারসঙ্গেই রয়েছে গমগম করা নানা বাজার। ভারতে ভ্রমণ শুরু করা অথবা শেষ করার জন্য এটি একেবারে ঠিকঠাক জায়গা। যদি আপনার অ্য়াডভেঞ্চার ভাল লাগে, অথবা আপনি যদি খাদ্যরসিক হন- তাহলে রাজস্থান আপনার জন্য তার ডালি সাজিয়ে বসে রয়েছে। এই রাজ্যের প্রথমসারির পর্যটনস্থলগুলি কী কী? একবার দেখে নেওয়া যাক।
রাজস্থানের প্রথম ৫টি ঘোরার জায়গা
১. জয়পুর
রাজস্থানে হৃদয় বা Heart of Rajasthan বলা হয় একে। জয়পুর (Jaipur) রাজস্থানের রাজধানী। একাধিক প্রাসাদ, দুর্দান্ত দুর্গের জন্য বিখ্যাত। এখানে মেলে জিভে জল আনা নানা খাবার। জয়পুর ভারতের গোলাপি শহর বা Pink City of India নামেও বিখ্য়াত। গোটা শহরটি ভারতীয় বাস্তুশাস্ত্র মেনে তৈরি করেছিলেন রাজা দ্বিতীয় জয় সিংহ। জয়পুরে রয়েছে বিশ্ববিখ্যাত হাওয়া মহল, আমের দুর্গ, চোখি ধানি, সিটি প্যালেস, অ্যালবার্ট হল মিউজিয়াম, মশলা চক এবং আরও অনেককিছু। যা যে কোনও পর্যটককে ব্যস্ত রাখতে যথেষ্ঠ। এই শহর ঘুরে দেখলে তা নিশ্চিতভাবেই সারা জীবনের অভিজ্ঞতা হবে।
সুস্বাদু রাজস্থানি খাবারগুলিও (Rajasthani Cuisine) চেখে দেখতে পারেন এই শহরে। ডাল বাটি চুর্মা, ঘেভার, পেঁয়াজ কচুরি অবশ্যই চেখে দেখতে পারেন। যদি শপিং আপনার পছন্দের কাজ হয়ে থাকে, তাহলে রাজস্থানে জয়পুরের চেয়ে ভাল জায়গা আর পাবেন না। নানা ধরনের বাঁধনি ডাই ফেব্রিক, কার্পেট, মোজারি জুতো, লাক ব্যাঙ্গেল, গোল্ড ফিলিগ্রি এবং লেপের অজস্ত্র সম্ভার মিলবে এখানে। এককথায় বলা চলে, যে পর্যটকের স্বপ্নের জায়গা জয়পুর।
২. উদয়পুর
রাজস্থানের অন্যতম সুন্দর শহর উদয়পুর (Udaipur)। এটি প্রাচ্যের ভেনিস (Venice of the East) বা হ্রদের শহর (The city of Lakes) নামেও পরিচিত। প্রকৃতপক্ষে উদয়পুর স্থাপিত হয়েছিল ১৫৩৩ সালে। বহু বছর এটি তৎকালীন মেবার রাজ্যের রাজধানী ছিল। তাই এটিকে মেবারের রত্ন (Jewel of Mewar) নামেও ডেকে থাকেন অনেকে। একাধিক দুর্গ, প্রাসাদ এবং হ্রদ রয়েছে এই শহরে। হ্রদের তালিকায় রয়েছে মহাদেব দিঘি, ধানি সাগর (Dhani Sagar), অমর সাগর। আরাবল্লী পর্বতমালা (Aravalli Rannge) দিরে ঘেরা উদয়পুর, তাই সবদিক থেকেই শহরটি খুব ভাল দেখায়।
খাবার আর কেনাকাটার নিরিখে বিচার করলে উদয়পুর কোনও অংশে কম নয়। উদয়পুরের লোভনীয় খাবারগুলির তালিকায় রয়েছে ডাল বাটি চুর্মা (Dal Bati Churma), মির্চি বড়া, পেঁয়াজ কচুরি। শহরের স্থানীয় জীবনে মিশতে চাইলে চলে যেতে পারেন বাজারে। কিনতে পারেন রাজস্থানের ঐতিহ্য়বাহী গয়না, নানা ধরনের হস্তশিল্পের জিনিস, পিতলের ভাস্কর্য, টেরাকোটার হস্তশিল্প এবং কাপড়।
৩. যোধপুর
থর মরভূমির প্রায় সীমানায় রয়েছে যোধপুর (Jodhpur) শহর। এটিকে রাজস্থানে নীল শহর (Blue City of Rajasthan) বলা হয়। মার্বেল স্থাপত্যশিল্পের অনন্য নির্দশন রয়েছে এই শহরে। গমগম করা রাস্তা-বাজার নিয়ে প্রাণবন্ত এই শহরটি। এর আগে এই এলাকায় নাম ছিল মারওয়ার (Marwar)। যোধপুর রাজস্থানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। রাও যোধা ১৪৫৯ সালে এই শহরের পত্তন করেছিলেন। প্রাচীন মন্দির, অসাধারণ প্রাসাদ-দুর্গ এবং দুরন্ত পর্যটনস্থল রয়েছে এই শহরে।
যোধপুরে ঘুরতে এলে, কয়েকটি জায়গায় যেতেই হবে। সেই তালিকায় রয়েছে ,মেহেরানগড় দুর্গ (Mehrangarh Fort), মোতি মহল (Moti Mahal), শিস মহল (Sheesh Mahal), উমেইদ ভবন প্যালেস, চামুন্ডা মাতাজি মন্দির (Chamunda Mataji Temple)। এছাড়াও একাধিক ঐতিহাসিক এবং পবিত্র পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে। এই শহরে একাধিক বাজারও রয়েছে, যেগুলি সন্ধেয় আলো দিয়ে সাজানো হয়। এছাড়া, নবরাত্রি, নাগ পঞ্চমী, হোলি, দীপাবলি (Diwali), গনগউর এবং বীরপুরী মেলার সময় আলোয় সেজে ওঠে বাজারগুলি। যোধপুরে থাকলে এখানকার সুস্বাদু খাবারগুলি চেখে দেখতেই হবে। ওই তালিকায় রয়েছে মাখানিয়া লস্য়ি, আতার হালুয়া (আতে কা হালুয়া), ডাল বাটি চুর্মা, পেঁয়াজ কচুরি, লসন কি চাটনির (lasan ki chutney) মতো খাবার।
৪. জয়শলমীর
বিস্তীর্ণ অনুর্বর জমি, নানাবিধ টিলা এবং অসাধারণ ঐতিহাসিক সম্পদের জন্য পরিচিত জয়শলমীর (Jaisalmer)। রাজস্থানের এই শহর পরিচিত তার সৌন্দর্যের জন্য। এটিকে সোনালি শহর (Golden City) বলেও ডাকা হয়। জয়শলমীর প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১১৫৬ সালে। এটি এখন ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের খুব কাছে থাকা একটি শহর। অজস্র বালির টিলা এবং সুন্দর দুর্গ থাকা শহরটিকে সাহস এবং রাজকীয়তার প্রতীক হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
পর্যটকদের অবাক করার জন্য অজস্র ডালি সাজিয়ে বসে জয়শলমীর। এখানে যে যে জায়গাগুলি অধিকাংশ পর্যটকরা যান, সেগুলি হল জয়শলমীর দুর্গ (Jaisalmer Fort), গাদিসার হ্রদ (Gadisar Lake), কুলধারা গ্রাম (Kuldhara Village), পাটোঁ কি হাভেলি (Patwon Ki Haveli), স্যাম স্যান্ড ডিউনস (Sam Sand Dunes) এবং বেশ কিছু প্রাচীন মন্দির। বন্যপ্রাণ নিয়ে যাঁরা উৎসাহী তাঁদের জন্য রয়েছে মরুভূমি জাতীয় উদ্যান (Desert National Park), এটি ৩১৬২ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। এখানে দেখা মিলবে কৃষ্ণসার হরিণ (Black Buck), বেঙ্গল ফক্স এবং নানা প্রজাতির পাখির। ঘোরার পরে পেটপুজো করাও প্রয়োজন, আর সেই সময় এখানকার রাজস্থানি থালি চেখে দেখতেই হবে।
৫. মাউন্ট আবু
রাজস্থানের একমাত্র পাহাড়ি (Hill Destination) পর্যটনস্থল এটি। উদয়পুর থেকে ৩ ঘণ্টার দূরত্বে রয়েছে এই জায়গা। এখানে ১২২০ মিটার উচ্চতায় রয়েছে শহরটি। এর ফলে গোটা আরাবল্লী পর্বতমালা খুব সুন্দরভাবে দেখা যায়। জলপ্রপাত, হ্রদ এবং একাধিক মন্দির রয়েছে মাউন্ট আবুতে (Mount Abu)।
এখানে রয়েছে আরাবল্লী পর্বতমালার সবচেয়ে উঁচু শিখর - গুরু শিখর (Guru Sikhar)। রয়েছে দিলওয়ারা জৈন মন্দির (Dilwara Jain Temples), মানুষের হাতে তৈরি নাক্কি হ্রদ (Nalli Lake)। যদি আপনি অ্যাডভেঞ্চার এবং ইকো-ট্যুরিজম মিশিয়ে একটু অফবিট অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে চান তাহলে মাউন্ট আবু আপনার জন্য একেবারে ঠিক ডেস্টিনেশন।
রাজস্থান (Rajasthan Tour Guide) ভারতের সবচেয়ে পছন্দের পর্যটনস্থলগুলি মধ্যে অন্যতম। ভারতের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য চিনতে চাইলে রাজস্থান যেতেই হবে। আপনি যদি রাজস্থানে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন, তাহলে অবশ্যই আপনার ভ্রমণতালিকায় এই বাছাই পাঁচটি জায়গা রাখুন।
(মনে রাখবেন: এটি একটি পার্টনার্ড আর্টিকেল। তথ্যটি আপনাকে কোনও নিশ্চয়তা ছাড়াই "যেমন ছিল তেমন" ভিত্তিতে জানানো হয়েছে। এখানে তথ্য নির্ভুলভাবে দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও আমরা কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারছি না। এবিপি নেটওয়ার্ক প্রাইভেট লিমিটেড ('ABP') এবং/অথবা ABP লাইভ তথ্যের সত্যতা, ন্যায্যতা, সম্পূর্ণতা বা নির্ভুলতা সম্পর্কে কোনও নিশ্চয়তা দেয় না৷ পাঠকদের যেকোনও ক্রয়ের আগে পণ্যের মূল্য যাচাই করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞাপনদাতার ওয়েবসাইটে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে ।