Viral News: বিলিয়ে দিলেন ২০০ কোটির সম্পত্তি, ভিক্ষাবৃত্তির পথ বাছলেন গুজরাতের দম্পতি
Jain Monkhood: গুজরাতের হিম্মতনগররে সম্ভ্রান্ত জৈন ধর্মাবলম্বী ব্যবসায়ী পরিবারের সদস্য ভবেশ ভাণ্ডারী।
সুরত: এককথায় রুপোর চামচ মুখে নিয়ে জন্ম বলা যায়। ধন-সম্পত্তি, বিলাসিতা, কিছুরই অভাব ছিল না। কিন্তু স্বেচ্ছায় সব ছেড়ে দিলেন গুজরাতের দম্পতি। প্রায় ২০০ কোটি টাকার সম্পত্তি দান করে দিয়ে সন্ন্যাস গ্রহণ করলেন তাঁরা। বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে একদিন সংসার পাতার শপথ নিয়েছিলেন যাঁরা, সংসার ছেড়ে তাঁরাই এবার সন্ন্যাসী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন, পারস্পরিক সম্মতিতে। তাঁদের এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যেও বিশেষ কারণ রয়েছে। (Viral News)
গুজরাতের হিম্মতনগররে সম্ভ্রান্ত জৈন ধর্মাবলম্বী ব্যবসায়ী পরিবারের সদস্য ভবেশ ভাণ্ডারী। মূলত নির্মাণ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তাঁর পরিবার। কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাসে বিশেষ অনুষ্ঠানে স্ত্রীর সঙ্গে মিলে ভবেশ নিজেদের ২০০ কোটির সম্পত্তি দান করে দেন। আনুষ্ঠানিক ভাবে এপ্রিল মাসের শেষ নাগাদ জৈন সন্ন্যাসী হিসেবে নতুন জীবনে পা রাখতে চলেছেন স্বামী-স্ত্রী, দু'জনেই। (Jain Monkhood)
তবে একদিনে এই সিদ্ধান্ত নেননি ভবেশ এবং তাঁর স্ত্রী। ২০২২ সালে প্রথমে তাঁদের ১৬ বছর বয়সি ছেলে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন। এর পর সন্ন্যাস গ্রহণ করেন তাঁদের ১৯ বছর বয়সি কন্যা। দু'বছরের মাথায় সন্তানদের দেখানো পথেই হাঁটতে চলেছেন ভবেশ এবং তাঁর স্ত্রী। আগামী ২২ এপ্রিল আনুষ্ঠানিক ভাবে পরিবারের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করবেন তাঁরা। নিজেদের সঙ্গে কোনও মূল্যবান জিনিস রাখতে পারবেন না তাঁরা। এর পর খালি পায়ে গোটা দেশ ঘুরবেন। ভিক্ষা করে কাটবে দিন।
VIDEO | Gujarat-based businessman Bhavesh Bhandari and his wife donated their lifetime earnings of over Rs 200 crore to adopt monkhood. The couple led a procession in Sabarkantha, Gujarat, yesterday as they donated all their belongings.
— Press Trust of India (@PTI_News) April 16, 2024
(Full video available on PTI Videos -… pic.twitter.com/eWu9IQEZo3
ভবেশ এবং তাঁর এই সিদ্ধান্তে অনেকেই হতবাক। কিন্তু জৈন সম্প্রদায়ের মানুষজন বেশ খুশি। তাঁদের মতে, পার্থিব বস্তুর মোহ কাটানো মোটেই সহজ কাজ নয়। সন্তানদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছেন ভবেশ এবং তাঁর স্ত্রী। পার্থিব সবকিছুর মোহ কাটিয়ে তপস্যার রাস্তা বেছে নিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের দেখে অনেক কিছু শেখার রয়েছে বলেও মনে করছেন জৈন ধর্মাবলম্বী মানুষজন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ভবেশ এবং তাঁর স্ত্রী শুধুমাত্র পরনের দু'টি কাপড় সঙ্গে রাখতে পারবেন। ভিক্ষার পাত্র এবং একটি ঝাঁটা নিতে পারবেন সঙ্গে, যাতে কোথা বসার আগে ঝাঁট দিয়ে নিতে পারেন। এভাবেই অহিংসার পথ বেছে নেন জৈন সন্ন্যাসীরা। রাজকীয় বেশে, রথে চেপে, রীতিমতো শোভাযাত্রা করে নিজেদের সব কিছু বিলিয়ে দিয়েছেন ভবেশ এবং তাঁর স্ত্রী। মোবাইল ফোন, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রও খুলে দিয়ে দেন অন্যকে।
গুজরাতের ব্যবসায়ী মহলে বেশ প্রভাব-প্রতিপত্তি রয়েছে ভাণ্ডারী পরিবারের। এক এক করে সেই পরিবারের সদস্যরা সন্ন্যাসের পথ বেছে নেওয়ায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্যে। তবে এই প্রথম বার নয়, ভারতে ক্ষুদ্র সেচ ব্যবস্থার জনক ভবরলালও এর আগে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি ছেড়ে সন্ন্যাসী ভিক্ষুক হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
জৈনধর্মে 'দীক্ষালাভ' একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্ব। এই পর্বে সমস্ত বিলাসিতা ত্যাগ করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি। ভিক্ষাবৃত্তি করে কোনও রকমে নিজের আহার জোগাড় করেন। গোটা দেশ খালিপায়ে ঘুরে বেড়ান। গত বছর, গুজরাতের এক হিরে ব্যবসায়ী এবং তাঁর স্ত্রীও সন্ন্যাস গ্রহণ করেন। প্রথমে তাঁদের ১২ বছর বয়সি ছেলে সন্ন্যাস গ্রহণ করে। ফেরারি গাড়িতে চেপে গিয়ে দীক্ষা নেয় ওই বালক। এর পর জাগুয়ারে চেপে গিয়ে দীক্ষা নেন ওই দম্পতি।
২০১৭ সালে মধ্যপ্রদেশের ব্যবসায়ী, ৩৫ বছর বয়সি সুমিত রাঠৌর এবং তাঁর স্ত্রী, ৩৪ বছর বয়সি অনামিকা ১০০ কোটি টাকার সম্পত্তি দান করে দেন। তিন বছরের কন্যাকে মা-বাবার কাছে রেখে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন। কন্যাকে ছেড়ে সন্ন্যাস নেওয়ায় আইনি জটিলতারও মুখে পড়তে হয় তাঁদের। তবে নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন তাঁরা।