Gita Quotes : না খেয়ে-ঘুমিয়ে ধ্যান করলে আসবে না সাফল্য, দেখুন ভগবান নিজেই বলেছেন গীতায়
Gita Gyan : মানুষের মনে প্রশ্ন জাগে, ভগবানের সাধনা করতে গেলে কি আহার, বিহার ও বিশ্রাম, এগুলো ছাড়তে হবে ?
গীতার ষষ্ঠ অধ্যায় 'আত্মসংযমযোগ'। এখানে ধ্যানযোগের প্রকার ও ফল বলেছেন শ্রীকৃষ্ণ। তা শুনে অর্জুনের মনে সাধারণ মানুষের মতোই প্রশ্ন জেগেছে। ধ্যানযোগ করতে গেলে কি আহার - নিদ্রা ত্যাগ করতে হবে ? খুব সাধারণ প্রশ্ন, যা কম বেশি সকলের মনেও আসে। মানুষের মনে প্রশ্ন জাগে, ভগবানের সাধনা করতে গেলে কি আহার, বিহার ও বিশ্রাম, এগুলো ছাড়তে হবে ? ভগবান তার উত্তরে বলছেন,
নাত্যশ্বতস্তু যোগোঽস্তি ন চৈকান্তমনশতঃ।
ন চাতি স্বপ্নশীলস্য জাগ্রতো নৈব চার্জুন৷৷ ১৬
তিনি অর্জুনকে বলছেন, যাঁরা অত্যধিক আহার করেন, আবার যাঁরা একেবারে খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দেন তাঁদের সাধনা সিদ্ধ হয় না। আবার যাঁরা বেশ ঘুমোন, কিংবা জেগে জেগেই কাটিয়ে কাটিয়ে দেন, তাঁদের দ্বারাও যোগ সিদ্ধ হয় না ধ্যান।
এখানে যোগ বলতে বোঝানো হয়েছে ঈশ্বর লাভের একটি উপায়কে। এই অধ্যায়ে ধ্যান যোগের কথাই বলতে চেয়েছেন ভগবান। ধ্যান ঠিক করে করলে দুঃখ নাশ হয়। মেলে ঈশ্বরলাভের শান্তি ও স্বস্তি।
কিন্তু প্রশ্ন বেশি খেয়েদেয়ে বা না খেয়ে ধ্যানযোগ কেন সিদ্ধ হয় না কেন ? গীতা বলছে,জোর করে বেশি খেলে ঘুম আর আলস্য বাড়ে। আবার হজমের সমস্যা হতে পারে। আর রোগ হলে তো ধ্যানে মনোনিবেশ হবে না। অন্য দিকে কেউ যদি খাওয়া দাওয়া ছেড়ে উপবাস করতে থাকে, তার শক্তি কমে যেতে থাকে। ধীরে ধীরে তার প্রভাব পড়ে ইন্দ্রিয়কর্মে। মনের জোরও কমে যায়। তখন কি আর সে স্থির হয়ে পরমেশ্বরের স্বরূপে মন সমর্পণ করতে পারবে ?
ঠিকঠাক পরিমাণে খেলে ও ঘুমোলে ক্লান্তি দূর হয়ে শরীরে তাজাভাব আসে । তাতে ধ্যানও ভাল হয়। আবার সেই ঘুমই যদি প্রয়োজনের অধিক হয়ে যায়, খালি আলস্য ঘিরে ধরে। স্থির হয়ে ধ্যানে বসতেই পারা যাবে না তখন। তাছাড়া বেশি ঘুমোলে তো জীবনের অমূল্য সময় তো নষ্ট হয়। সেরকম সারাদিন জেগে থাকলে ক্লান্তি চেপে ধরে। তাই আহার নিদ্রায় ভারসাম্য রাখতে হবে।
পরের শ্লোকে ভগবান বলছেন -
যুক্তাহারবিহারস্য যুক্ত চেষ্টস্য কর্মসু।
যুক্তস্বপ্নাববোধস্য যোগো ভবতি দুঃখহা ৷৷ ১৭
অর্থাৎ নিয়মিত নিদ্রা ও জেগে থাকাতেই সাধনার সিদ্ধি সম্ভব। তেমনই ঘোরাফেরা ততটাই করা উচিত যতটা নিজের জন্য প্রয়োজন ও হিতকর হয়।
(তথ্যসূত্র: শ্রীমদভগবদ্ গীতা, (তত্ত্ববিবেচনী), গীতা প্রেস, গোরক্ষপুর )
আরও পড়ুন :