Kali Puja 2023: প্রতিমার সামনে নরবলি দিত ডাকাতরা, আজও কালনার বুড়ো কালীর কোমরে পরানো লোহার শিকল
Diwali 2023: পূর্ব বর্ধমানের কালনার ধাত্রী গ্রামের ব্রাহ্মণপাড়া এলাকার কালীপুজোয় এমনটাই ঘটে।
রাণা দাস, কালনা: মনুষ্যজাতির বিপদ, যন্ত্রণা, কষ্ট দূর করেন বলেই পরিচিতি তাঁর। কিন্তু দেবীর নিজের কোমরেই বাঁধা রয়েছে লোহার শিকল! মনগড়া কাহিনি মনে হলেও, কালনায় যুগ যুগ ধরে এমনই প্রথা চলে আসছে। এখানে কালীপুজোর দিন দেবীমূর্তিকে শিকলে বেঁধে রাখা হয়। আজ বলে নয়, বিগত ৩৫০ বছর ধরেই কালীমূর্তিকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার প্রথা চলে আসছে এখানে। (Kali Puja 2023)
পূর্ব বর্ধমানের কালনার ধাত্রী গ্রামের ব্রাহ্মণপাড়া এলাকার কালীপুজোয় এমনটাই ঘটে। কালনার এই কালী বুড়ো কালী নামে পরিচিত আশেপাশের এলাকায়। দূর দূরান্তের এলাকাতেও এই বুড়ো কালীর খ্যাতি শোনা যায়। কথিত আছে, পুজোর দিন লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয় কালীমূর্তিকে। কারণ পুজোর দিন বলিদানের সময় মা নাকি চঞ্চলা হয়ে ওঠেন! তাই লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার রীতি। (Diwali 2023)
লোকমুখে শোনা যায়, ধাত্রী গ্রামের ব্রাহ্মণ পাড়া এলাকা এক সময় ঘন জঙ্গলে ভরা ছিল, যার সুযোগ নিয়ে বেড়ে উঠেছিল ডাকাতদের দাপট। ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে কালীপুজো করত তারা। তাতে নাকি বিপদ ছুঁতে পারত না তাদের। সময়ের সঙ্গে জনবসতি জঙ্গলে থাবা বসাতে শুরু করলে, গা ঢাকা দিতে শুরু করে ডাকাতের দল।
আরও পড়ুন: Kali Puja 2023: পুজো করেন বামাক্ষ্যাপার বংশধরেরা! এই পুজোয় জড়িয়ে বহু জনশ্রুতি
স্থানীয়দের দাবি, জনবসতি গড়ে উঠতে দেখে এলাকা থেকে পিঠটান দেয় ডাকাতের দল। তাদের ফেলে যাওয়া কালীমূর্তি বাড়িতে তুলে এনে পুজো শুরু করে চট্টোপাধ্যায় পরিবার। ডাকাতদের আমলে দেবীর সামনে নরবলির চল ছিল বলে শোনা যায়। তবে চট্টোপাধ্যায়দের হাতে পুজো শুরু হলে, বলির সময় কালীমূর্তি দোদুল্যমান এবং চঞ্চলা হয়ে পড়েছেন বলে অনুধাবন করেন পুরোহিত।
তাই দেবী যদি মন্দির ছেড়ে বেরিয়ে যান! সেই ভয়ে শিকল দিয়ে প্রতিমা বেঁধে রাখা হয় সেই সময়ই। আজও সেই রীতিই চলে আসছে। মায়ের গায়ে সোনা এবং রূপার গয়না পরানো থাকে। সেই অবস্থাতেই লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। পুজো মিটে গেলে গয়না-গাঁটির সঙ্গে লোহার শিকলটিও ব্যাঙ্কের লকারে গচ্ছিত রেখে দেওয়া হয়।
পুজোর দিন মাকে বেদিতে তোলার পরেই কোমরে শিকল পরিয়ে দেওয়া হয়। মেয়ের বিয়ের রীতি অনুযায়ী এই বুড়ো কালীর পুজো হয়। সকালে নদীতে গিয়ে জলসইতে, বিদায়ে কনকাঞ্জলি-সহ বিভিন্ন প্রথা মানা হয়। ইলিশ, গলদা চিংড়ি, রুই মাছ এবং এঁচোড়ের ভোগ দেওয়া হয় প্রতিমাকে।