Bhai Phonta 2023: ভেলায় ভেসে পুকুর পরিক্রমা দেব-দেবীর! প্রাচীন প্রথা মেনে চলছে বুদবুদের এই অনুষ্ঠান
Paschim Bardhaman:কোটা গ্রামের একটি পুকুরে ভেলা বানিয়ে তার উপরে মূর্তি উঠিয়ে গোটা পুকুর প্রদক্ষিণ করা হয়।
মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান: ভাইফোঁটা বাংলার ঘরের উৎসব। এই রাজ্যের প্রায় প্রতিটি পরিবারেই ঘরোয়া ভাবে উদযাপন হয় ভাইফোঁটার। আর এই দিনটিতেই বিশেষ একটি উৎসব হয় পশ্চিম বর্ধমানের (Paschim Bardhaman) বুদবুদের কোটা গ্রামে। ভাইফোঁটার দিনে বুদবুদের (Budbud) এই গ্রামে হয় ভেলা ভাসান অনুষ্ঠান। কয়েকশো বছর ধরে মহা ধুমধাম করে আয়োজিত হয় এই প্রথা।
কী এই অনুষ্ঠান?
এলাকাবাসীরা জানাচ্ছেন, প্রায় চারশো বছর ধরে কোটা গ্রামে এটাই রীতি। গ্রামে যে সমস্ত কালী পুজো হয়। তার সঙ্গেই শিবের পুজো হয়। পুজো পান হরগৌরীও। সেই সমস্ত মূর্তি কোটা গ্রামের একটি পুকুরে ভেলা বানিয়ে তার উপরে মূর্তি উঠিয়ে গোটা পুকুর প্রদক্ষিণ করা হয়। এটাই ভেলা ভাসান অনুষ্ঠান নামে পরিচিত। আর এই অনুষ্ঠান দেখতে পুকুরের চারপাশে উপচে পরে উৎসাহীদের ভিড়। প্রতি বছরই প্রায় একই সময়ে অনুষ্ঠান হয়। এবারও বিকেল ৪টা থেকে শুরু হয় অনুষ্ঠান। সন্ধেবেলায় সমস্ত দেব-দেবীর মূর্তি পুকুরেই বিসর্জন দেওয়া হয়। প্রাচীন কাল থেকেই এটাই রীতি ওই গ্রামের।
ভেলা ভাসান অনুষ্ঠান ঘিরে মেলা বসে গ্রামে। ৪ দিন ধরে চলে নানা অনুষ্ঠান। ওই গ্রামেরই বাসিন্দা জগবন্ধু বাউড়ি জানান, গ্রামের প্রায় সকলেই মূলত কৃষিজীবী। কথিত রয়েছে, কয়েকশো বছর আগে গ্রামের চাষিরা মাঠ থেকে ফসল তুলে আনার পরে গ্রামে কালী পুজোর সময় হরগৌরীর পুজো শুরু করা হয়েছিল। তারপরে ধীরে ধীরে বেশ কয়েকটি বাড়িতে ও পাড়ায় শুরু হয় হরগৌরীর পুজো। চাষ ভাল হওয়ায় ভাইফোঁটার দিনে গ্রামের সমস্ত দেব-দেবীর মূর্তি ভেলায় চাপিয়ে ভেলা ভাসান অনুষ্ঠান করা হতো। তারপর সেই অনুষ্ঠান আরও বড় হয়। ধীরে ধীরে পুকুরের পারে মেলা শুরু হয়। সেই থেকে এই রীতি চলে আসছে এখানে।
এই অনুষ্ঠান দেখতে কোটা গ্রামের মানুষ ছাড়াও আশেপাশের বহু মানুষ মেলায় ভিড় জমান। শুধু হিন্দু সম্প্রদায় নয়। অন্য সম্প্রদায়ের নাগরিকরাও এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। গ্রামের বাসিন্দা লুৎফর রহমান জানিয়েছেন, এটাই তাঁদের গ্রামের ঐতিহ্য। ছোট থেকেই তাঁরা ভেলা ভাসানো অনুষ্ঠানে যোগ দেন বলে দাবি।