(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
Science News: ২২ জনকে নিয়েই লালগ্রহে উপনিবেশ গড়া সম্ভব! কেমন মানুষ আদর্শ, তাও জানালেন গবেষকরা
Mars Colony: লোকসংখ্যা মাত্র ২২ ধরা হলেও, যাঁদের নিয়ে মঙ্গলে উপনিবেশ গড়ার ভাবনা, তাঁদের বেশ কিছু চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
নয়াদিল্লি: পৃথিবার বাইরে বিকল্প বাসস্থানের কথা উঠলেই সবার আগে নাম উঠে আসে মঙ্গলগ্রহের। ধনকুবের ইলন মাস্ক পর্যন্ত সেই চেষ্টায় হাত লাগিয়েছেন। তবে কাতারে কাতারে নয়, মাত্র ২২ জন মানুষকে নিয়েই লালগ্রহে উপনিবেশ গড়ে তোলা সম্ভব বলে গবেষকদের। কর্নেল ইউনিভার্সিটির arXiv-এ এই সংক্রান্ত একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। সেখানেই মাত্র ২২ জনকে নিয়ে লালগ্রহে উপনিবেশ গড়ে তোলা সম্ভব বলে দাবি করা হয়েছে। (Science News)
তবে লোকসংখ্যা মাত্র ২২ ধরা হলেও, যাঁদের নিয়ে মঙ্গলে উপনিবেশ গড়ার ভাবনা, তাঁদের বেশ কিছু চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। এজেন্ট বেসড মডেল (ABM) নামের একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম এই গবেষণাপত্রে ব্যবহার করা হয়েছে। মঙ্গলে বসতি গড়ে তুলতে কোন ধরনের মানুষকে প্রয়োজন, তা-ও বেঁধে দিয়েছে ওই প্রোগ্রাম। (Mars Colony)
চার ধরনের চারিত্রিক বৈশিষ্ট নিয়ে বিচার-বিবেচনা করতে বসে ওই কম্পিউটার প্রোগ্রাম, ১) সহজে নির্দেশ মেনে নেন, কারও সঙ্গে প্রতিযোগিতায় যান না, এমন মানুষ, ২) সামাজিক প্রাণী, মন খুলে কথা বলেন, সকলের সঙ্গে মিশতে পারেন এমন মানুষ, ৩) প্রতিক্রিয়াশীল মানুষ, যাঁরা কঠিন পরিস্থিতিতে মানিয়ে নিতে লড়াই করেন এবং ৪) বাতুলতা রয়েছে যাঁদের, একটু বেশি আগ্রাসী মানসিকতা যাঁদের, প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েন কথায় কথায়।
গবেষকরা জানিয়েছেন, নির্দেশ মানতে যদি সম্মত হন এবং সকলের সঙ্গে মিশতে পারেন, সেক্ষেত্রে ২২ জনকে নিয়েই মঙ্গলে উপনিবেশ গড়ে তোলা সম্ভব। বেশি আগ্রাসী এবং প্রতিযোগিতামূলক মানসিকতার মানুষ হলে, আরও বেশি সংখ্যক মানুষের প্রয়োজনের পড়বে। আপাতত যত কম সংখ্যক মানুষ নেওয়া যায়, ততই ভাল বলে মনে করছেন গবেষকরা। কারণ এতে সরঞ্জাম কম লাগবে, কম পড়বে খরচও।
তবে এই গবেষণাপত্রে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। যেমন, মাত্র ২৮ বছরের সময়কালের সম্ভাবনাই তুলে ধরা হয়েছে। সবিমিলিয়ে ২২ জনের মধ্যে যদি ১০ জনই বেঁচে থাকেন ওঅ ২৮ বছর, তাহলেই তাকে সাফল্য বলে ধরে নিতে হবে বলে বলা রয়েছে। শুধু তাই নয়, লালগ্রহে যে উপনিবেশ গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে, তাতে বাড়িঘর, গাড়ি, পরিকাঠামো এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের নির্মাণ অন্য কাউকেই করতে হবে বলে দাবি করা হয়েছে। মিনি নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর বসানোর কথা বলা রয়েছে, যাতে একটানা সাত বছর তা থেকে শক্তির সরবরাহ অব্যাহত থাকে। পৃথিবী থেকে নিয়মিত পণ্য সরবরাহও চালু রাখতে হবে বলে জানানো হয়েছে।
তাই হাতেগোনা কিছু মানুষ, হাজারো সীমাবদ্ধতা নিয়ে আদৌ উপনিবেশ গড়ে তোলা এবং তাকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব কিনা, তা নিয়ে সন্দিহান অনেকেই। পৃথিবী থেকে রসদের জোগানও চালিয়ে যাওয়া কতটা বাস্তবমুখী, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। তাঁদের মতে, পৃথিবীর বাইরে স্বনির্ভর উপনিবেশ গড়ে তোলাই লক্ষ্য। পৃথিবীর উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকলে চলবে না। মাত্র ২২ জনকে নিয়ে উপনিবেশ গড়ে তোলারও বিরোধিতা করছেন অনেকে। তাঁদের মতে, যথেষ্ট বংশবিস্তার না ঘটলে, উপনিবেশের বিস্তার ঘটবে না।