Science News: চাঁদের মাটিতে তীব্র কম্পন, জায়গায় জায়গায় নামল ধস, পৃথিবীতে বসেই ধরে ফেললেন বিজ্ঞানীরা
Moonquake News: পৃথিবীর উপগ্রহ চাঁদে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের খবর মিলল।

নয়াদিল্লি: চাঁদের বুকে তীব্র কম্পন। পৃথিবীতে যেমন ভূমিকম্প হয়, তাঁদের মাটিতে চন্দ্রকম্পন হল। জায়গায় জায়গায় নামল ধসও। পৃথিবীতে বসেই তা ধরে ফেললেন বিজ্ঞানীরা। রবিবার এই তথ্য় সামনে এনেছেন চিনের বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটছে পৃথিবীর উপগ্রহের বুকেও। মহাকাশ অভিযানের জন্য এই তথ্য় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। (Moonquake News)
চিনের Sun Yat-sen University, Fuzhour University, Shanghai Normal University-র তরফে গত ১১ সেপ্টেম্বর যে গবেষণাপত্র প্রকাশ করা হয়, তাতে বিশেষজ্ঞদের সিলমোহরও পড়ে গিয়েছে। গবেষণার তত্ত্বাবধানে ছিল Chinese Academy of Sciences. (Science News)
চলতি বছরে বার বার কেঁপেছে পৃথিবীর মাটি। পর পর প্রাকৃতিক বিপর্যয় লেগেই রয়েছে। আর সেই আবহেই পৃথিবীর উপগ্রহ চাঁদে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের খবর মিলল। গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ‘চাঁদের মাটিতে পরিকাঠামো গড়ে তোলার এত কাছাকাছি কখনও পৌঁছয়নি মানবসভ্যতা, যেখানে গবেষণাকেন্দ্র, মহাকাশ আউটপোস্ট গড়ে তোলা যেতে পারে’। তাই চন্দ্রপৃষ্ঠে কম্পনের স্থান চিহ্নিত করা গেলে, ভবিষ্যতের জন্য নিরাপদ স্থান বাছাই করার কাজ সহজ হবে বলে মত চিনের বিজ্ঞানীদের।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, অ্যাপোলো অভিযানের সময়ও চাঁদে চন্দ্রকম্পনের ইঙ্গিত মিলেছিল। তবে সেসব বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে পরবর্তীতে দাবি ওঠে। সেই কারণে চাঁদে চন্দ্রকম্পনের ঝুঁকি নিয়ে গবেষণার কাজ এগোয়নি। সাম্প্রতিক ঘটনাবলী নতুন করে বিষয়টির উপর আলোকপাত করছে।
চিনের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ২০০৯ সাল থেকে চাঁদের বুকে ৪১টি নতুন ধস শনাক্ত করা গিয়েছে। চাঁদের বুকে ৭৪টি জায়গার আগের ৫৬২ এবং পরের ৫৬২টি ছবি মিলিয়ে দেখে বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। ৩০ শতাংশ ক্ষেত্রেই নতুন কোনও বিপর্যয়ের জেরে ধস নেমেছে, যা চন্দ্রকম্পনের দরুণই হয়েছে বলে মত তাঁদের।
চাঁদের মাটিতে চন্দ্রকম্পনের কারণ এখনও পুরোপুরি বোঝা সম্ভব হয়নি যদিও। তবে চাঁদের অন্তঃস্থল যে এখনও সক্রিয় অবস্থায় রয়েছে, তাপীয় অবস্থা বজায় রয়েছে, সেই তত্ত্বই উঠে আসছে। বিজ্ঞানীদের মতে, চন্দ্রকম্পনের ফলে মহাকাশ গবেষণার উপর তেমন কোনও প্রভাব পড়বে না। তবে চাঁদের বুকে ঢালু জায়গাগুলিতে গবেষণাকেন্দ্র গড়ায় ঝুঁকি রয়েছে।
Sun Yat-sen ইউনিভার্সিটির Planetary Environmental and Astrobiological Research Laboratory বিভাগের অধ্যপাক শিয়াও ঝিয়ং জানিয়েছেন, চন্দ্রকম্পনের ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ধসের তীব্রতাও তুলনামূলক কম, দৈর্ঘ্যে সর্বোচ্চ ৩২৮০ ফুট, প্রস্থে ১০০ ৩২৮ ফুট।
এর আগে, আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA জানিয়েছিল, অ্যাপোলো অভিযানের আওতায় মহাকাশচারীরা চাঁদের মাটিতে যে সিসমোমিটার বসিয়ে আসেন, তাতে ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত হাজার হাজার কম্পন ধরা পড়ে। তবে শিয়াওয়ের মতে, চাঁদের মাটিতে কম্পনের ফলে যে তরঙ্গ তৈরি হয়, তার শক্তি ধীরে ধীরে হ্রাস পায়। চন্দ্রপৃষ্ঠ যেহেতু শুষ্ক এবং জলের পরিমাণ যেহেতু কম, তাই কম্পন শক্তি হারায় দ্রুত। পৃথিবীতে ওই একই মাত্রায় ভূমিকম্প হলে, ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেশি ব্যাপক হতো বলে মত তাঁর।
চিনের Chang’e -8 অভিযানে ফের চাঁদের বুকে সিসমোমিটার বসানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে বসানো হবে সেটি। ২০২৯ সালে ওই অভিযান চালাবে চিন। বিজ্ঞানীদের মতে, কম্পনের উৎসস্থল শনাক্ত করা গেলে, সেখানে চন্দ্রযান পাঠিয়ে ধসের ছবি তোলা যেতে পারে।






















