(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
Science News: শরীরে প্লাস্টিক নিয়েই জন্মাচ্ছে প্রতিটি শিশু! দ্রুত হারে তাই বাড়ছে রোগ?
Science Facts: বিজ্ঞানীরা বলেছেন যে এই সংখ্যাগুলি ছোট মনে হলেও উদ্বেগের বিষয় হল পরিবেশে মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ বাড়ছে এবং এটি স্বাস্থ্যের প্রভাব ফেলতে পারে।
নয়া দিল্লি: পরিবেশবিদরা কয়েক দশক ধরেই প্লাস্টিক দূষণ সম্পর্কে সতর্ক করে আসছেন। যদিও তাঁদের কাজের কাজ যে তেমন হয়েছে সেটা নয়। পলিভিনাইল ক্লোরাইড ব্যবহার করে নানাবিধ জিনিস তৈরি করা হয়। সেই প্লাস্টিক পরিবেশের তো ক্ষতি করছেই, পাশাপাশি এবার মানবদেহে ক্ষুদ্র অণু হিসেবে ঢুকে পড়েছে। ইউনিভার্সিটি অফ নিউ মেক্সিকো হেলথ সায়েন্সেসের বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি একটি গবেষণা করেছিলেন। সেখানে দেখা গিয়েছে মানুষের প্লাসেন্টাতে পাওয়া যাচ্ছে মাইক্রোপ্লাস্টিক।
টক্সিকোলজিক্যাল সায়েন্সে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে, যে ক'টি টিস্যুতে এই পরীক্ষা করা হয়েছে, সেখানে দেখা গিয়েছে, ঘনত্ব প্রতি গ্রাম টিস্যুতে ৬.৫ থেকে ৭৯০ মাইক্রোগ্রাম মাইক্রোপ্লাস্টিক প্লাসেন্টার মধ্যে রয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলেছেন যে এই সংখ্যাগুলি ছোট মনে হলেও উদ্বেগের বিষয় হল পরিবেশে মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ বাড়ছে এবং এটি স্বাস্থ্যের প্রভাব ফেলতে পারে।
গবেষণার প্রধান লেখক ম্যাথিউ ক্যাম্পেন বলেছেন, তিনি মাইক্রোপ্লাস্টিকের ক্রমবর্ধমান পরিমাণ নিয়ে চিন্তিত। গবেষকের কথায়, 'প্লাসেন্টায় এই প্রভাব দেখতে পাওয়ার অর্থ অত্যন্ত চিন্তার। এই গ্রহের সমস্ত স্তন্যপায়ী প্রাণীর জীবন প্রভাবিত হতে পারে আগামী দিনে।'
কীভাবে করা হচ্ছে এই পরীক্ষা?
অনেকেই প্লাসেন্টা টিস্যু দান করে থাকেন। সেই টিস্যুগুলির উপরই গবেষণা করছে ওই গবেষক দল। স্যাপোনিফিকেশন পরীক্ষার মাধ্যমে রাসায়নিকভাবে নমুনাগুলিকে ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি নমুনাকে আল্ট্রাসেন্ট্রিফিউজ মেশিনে রেখে স্যাম্পেল আলাদা করা হচ্ছে। পাইরোলাইসিস পরীক্ষারও সাহায্য নেওয়া হচ্ছে এই গবেষণায়।
সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, 'প্লাসেন্টার টিস্যুতে যথেষ্ট পরিমানে পলিমার যা পলিথিন তৈরিতে কাজে লাগে তা পাওয়া গিয়েছে। এই ধরনের পলিমার প্লাস্টিকের ব্যাগ বা বোতল তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়। পলিভিনাইল ক্লোরাইড সহ ন'টি পলিমার ব্যবহার করে এই ধরনের প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয়। যা মানবদেহ এবং প্রকৃতির জন্য বিপদের।'
গবেষক ম্যাথিউ ক্যাম্পেন বলেন, মানব দেহের টিস্যুতে মাইক্রোপ্লাস্টিকের ঘনত্ব যেভাবে বাড়ছে সেই কারণে ৫০ বছরের নিচে বয়সীদের মধ্যেও অন্ত্রে প্রদাহজনিত রোগ, কোলন ক্যান্সারের মতো রোগ তৈরি হচ্ছে। শুক্রাণুর সংখ্যাও কমে (Sperm Count Decrease) যাচ্ছে। প্লাসেন্টায় মাইক্রোপ্লাস্টিকের ঘনত্ব বৃদ্ধি পাওয়ায় যে শিশুরা জন্মাচ্ছে তারাও এই সমস্যা নিয়েই জন্মগ্রহণ করছে।
এই পরীক্ষার পর গবেষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে আগামী ১০ থেকে ১৫ বছরে এই সমস্যা আরও দ্বিগুণ হতে পারে। ফলে এখনই যদি প্লাস্টিক ব্যবহার কমানো না যায় তাহলে ২০৫০ সালের মধ্যে এক ভয়ঙ্কর জীবন যাপনের সম্মুখীন হতে হবে।