ABP Exclusive: আগের চেয়েও শক্তিশালী, সেরা ছন্দে বল করছি, ১ বছর পর ভারতীয় দলে ফিরে ফুটছেন প্রসিদ্ধ
Prasidh Krishna Exclusive: ফের এক অগাস্ট। ক্যালেন্ডার বলছে, ২০২৩। জাতীয় দলের হয়ে প্রত্যাবর্তন ঘটাচ্ছেন তিনি। ঠিক এক বছর পর। আর জাতীয় দলে জায়গা ফিরে পেয়ে উত্তেজনায় টগবগ করছেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ।
সন্দীপ সরকার, কলকাতা: ভারতীয় দলের (Indian Cricket Team) জার্সিতে তাঁকে শেষবার দেখা গিয়েছিল ২০২২ সালের অগাস্টে। হারারেতে, জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে ম্যাচে।
তারপর ফের এক অগাস্ট। ক্যালেন্ডার বলছে, ২০২৩। জাতীয় দলের হয়ে প্রত্যাবর্তন ঘটাচ্ছেন তিনি। ঠিক এক বছর পর। আর জাতীয় দলে জায়গা ফিরে পেয়ে উত্তেজনায় টগবগ করছেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ (Prasidh Krishna)। ডানহাতি পেসার নিজের সেরা ছন্দে বল করতে মুখিয়ে রয়েছেন।
আয়ার্ল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন প্রসিদ্ধ। আপাতত কর্নাটকের স্থানীয় ক্রিকেটের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে ব্যস্ত। শীঘ্রই যোগ দেবেন জাতীয় শিবিরে। তার আগে বেঙ্গালুরু থেকে মোবাইল ফোনে এবিপি লাইভকে প্রসিদ্ধ বললেন, 'অনেকদিন পর ক্রিকেটের মূলস্রোতে ফিরছি। খুব রোমাঞ্চিত লাগছে। প্রায় এক বছর পর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলব। দারুণ লাগছে। আগের চেয়েও বেশি শক্তিশালী হয়ে ফিরব। প্রস্তুতি ভাল হয়েছে। ভারতীয় দলে নিজের জায়গা ফিরে পাওয়ার জন্য প্রচুর পরিশ্রম করেছি। এই মুহূর্তে দুর্দান্ত অনুভূতি হচ্ছে।'
স্ট্রেস ফ্র্যাকচার হওয়ায় দীর্ঘদিনের জন্য মাঠের বাইরে চলে যেতে হয়েছিল তাঁকে। গোটা আইপিএল মাঠের বাইরে কাটাতে হয়েছে। তাঁকে ছাড়াই মাঠে নামতে হয়েছিল রাজস্থান রয়্যালসকে। অস্ত্রোপচারের সময় মনে করা হয়েছিল যে, ওয়ান ডে বিশ্বকাপের আগে হয়তো মাঠে ফেরা হবে না ডানহাতি পেসারের।
তবে তার আগেই ফিট হয়ে উঠেছেন প্রসিদ্ধ। এক সময়ে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে আইপিএল খেলা পেসার বলছেন, 'এক বছর মাঠের বাইরে কাটানোটা ভীষণ কঠিন। তবে আমি ভাগ্যবান যে, কঠিন এই সময়ে দারুণ কিছু মানুষ চারপাশে ছিলেন। যাঁরা আমার রিহ্যাব, স্ট্রেনদেনিং, ট্রেনিং, বোলিং – সব কিছুর খেয়াল রেখেছেন। বেঙ্গালুরুর জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে দারুণ প্রস্তুতি হয়েছে। আমি আগের চেয়েও শক্তিশালী হয়ে মাঠে ফিরব – এই ধারণাটাই আমাকে প্রেরণা জুগিয়েছে।'
এতদিন মাঠের বাইরে থাকার যন্ত্রণায় কখনও কি মানসিক অবসাদ তৈরি হয়েছে? প্রসিদ্ধ বলছেন, 'অবসাদে ভুগেছি বলব না, তবে চোটটা পাওয়ার পর মন খারাপ থাকত। বুঝতে পারতাম, নিজের সেরা বোলিংটা করতে পারছি না। যন্ত্রণা হতো। অস্ত্রোপচারের আগে শরীর সেরা ছন্দে ছিল না। প্রশ্ন ছিল ফিটনেস নিয়ে। তবে কখনও নেতিবাচক চিন্তাভাবনা আসেনি। আমি এনসিএ-র সকলের সঙ্গে কথা বলতাম, আলোচনা করতাম। কখনও নিজেকে একা মনে হয়নি।'
কীভাবে নিজেকে মানসিকভাবে চাঙ্গা রাখতেন? 'সেরে ওঠার কঠিন এই সময়ে অনেক বই পড়েছি, পডকাস্ট শুনতাম। নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছিলাম। খেলার সময় পরিবারের সঙ্গে খুব বেশি সময় কাটাতে পারিনি। তবে অস্ত্রোপচারের পর পরিবারকে অনেক বেশি সময় দিয়েছি। বন্ধু ও ভাইবোনদের সঙ্গে অনেক সময় কাটিয়েছি,' বলছিলেন কর্নাটকের পেসার। যোগ করলেন, 'জাতীয় দলের সতীর্থদের অনেকেই মেসেজ পাঠাত। কর্নাটকের রাজ্য দলের সতীর্থরা খোঁজ নিত। এনসিএ-তে থাকাকালীন অনেকের সঙ্গে দেখা হয়েছে। একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া করেছি। কখনও নিজেকে একা মনে হয়নি। চারপাশে যারা ছিল, সকলেই আমাকে হাসিখুশি রাখার চেষ্টা করেছে। তার জন্য সকলকে ধন্যবাদ দিতে চাই।'
সোমবার স্থানীয় ম্যাচে ৩২ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন। প্রসিদ্ধ বলছেন, 'গোটা দুয়েক প্র্যাক্টিস ম্যাচ খেলে খুব ভাল লাগছে। স্থানীয় যে দলের হয়ে খেলে আমার কেরিয়ার শুরু করেছিলাম, তাদের হয়ে ফের মাঠে নেমে ভাল লেগেছে। দারুণ অনুভূতি। প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্রিকেটে ফিরে দারুণ লাগছে। নিজের পুরনো ছন্দেই বল করতে পারছি।'
আয়ার্ল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজে জাতীয় দলে ফিরে নিজের সামনে কী লক্ষ্য সাজাচ্ছেন? প্রসিদ্ধ বলছেন, 'জাতীয় শিবিরে যোগ দিয়ে দ্রুত মানিয়ে নিতে চাই। প্রস্তুতিতে নিজেকে নিংড়ে দেব। পরিশ্রম করতে হবে। আশা করছি নিজের সেরা ছন্দে বল করতে পারব। একটা একটা করে বল ধরে লক্ষ্য সাজাব। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট এক বলের খেলা। কিছু মুহূর্ত থাকে যখন ব্যাটার মাথায় চড়ে বসবে। ম্যাচ জেতাবে। তবে বোলার হিসাবে একটা ভাল বলের অপেক্ষায় থাকি। জানি একটা ভাল বল উইকেট আনতে পারে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট উত্তেজক একটা ফর্ম্যাট। আমি ভীষণ উপভোগ করি।'
চোট-আঘাত ক্রিকেটারদের কেরিয়ারের অঙ্গ। যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে চোটের জন্য মাঠের বাইরে, তাঁদের উদ্দেশে কী বলবেন? 'চারপাশের সকলকে বিশ্বাস করো। শৃঙ্খলায় জোর দাও। আমি গত ১১-১২ মাসে তা থেকে উপকৃত হয়েছি। শৃঙ্খলা থাকলে অনুপ্রেরণা আপনা হতেই আসবে,' বলছেন জাতীয় দলের হয়ে ১৪ ওয়ান ডে-তে ২৫ উইকেট নেওয়া পেসার। যোগ করছেন, 'পরিবার খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি ভাগ্যবান যে এত ভাল মানুষ সঙ্গে থেকেছে। কখনও নেতিবাচক চিন্তাভাবনা আসতে দেয়নি। স্ত্রী রচনা পাশে থেকেছে। সব সময় সমর্থন করেছে। মাঠে নেমে পারফর্ম করে এই সমর্থনের প্রতিদান দিতে চাই।'
আরও পড়ুন: নচিকেতা আর ক্রিকেট, বার্ষিক অনুষ্ঠানে চমক দিতে চলেছে সিএবি