Mohun Bagan Supergiant: বসুন্ধরা কিংসের বিরুদ্ধে জয়ের ছন্দ ধরে রাখতে মরিয়া মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট
AFC Cup: গ্রুপের প্রথম দুই ম্যাচে ওডিশা এফসি-কে ৪-০ ও মাজিয়াকে ২-১-এ হারায় সবুজ-মেরুন বাহিনী। এই দুই জয়ের ফলে এএফসি কাপের ‘ডি’ গ্রুপের শীর্ষে রয়েছে তারা।
ওডিশা এফসি (Odisha FC) এবং মাজিয়া এসআরসি-কে হারানোর পরে এ বার মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের সামনে জয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার চ্যালেঞ্জ। মঙ্গলবার ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে তারা নামছে বাংলাদেশের বসুন্ধরা কিংসের বিরুদ্ধে। খাতায় কলমে এটি হোম ম্যাচ হলেও কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে সেই সুবিধা তারা কতটা পাবে, সেটাই প্রশ্ন। কিন্তু হোম, না অ্যাওয়ে, তা ভুলে নিজেদের সেরা পারফরম্যান্সের দিকে মন দিতে চান সবুজ-মেরুন কোচ ও ফুটবলাররা। (Mohun Bagan Super Giants)
সোমবার ভুবনেশ্বরে সাংবাদিকদের কোচ হুয়ান ফেরান্দো বলেন, “জয়ের ছন্দ ধরে রাখাটাই আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এএফসি কাপে সব ম্যাচই কঠিন। কারণ, এই স্তরে আসা সব দলই তাদের দেশের অন্যতম সেরা। আমরা হয়তো লিগ তালিকায় এগিয়ে রয়েছি। কিন্তু এই ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট পাওয়ার চেয়ে ভাল কিছু আর হতে পারে না। ম্যাচটা জিতলে নক আউটের অনেক কাছে পৌঁছে যাব আমরা”।
গ্রুপের প্রথম দুই ম্যাচে ওডিশা এফসি-কে ৪-০ ও মাজিয়াকে ২-১-এ হারায় সবুজ-মেরুন বাহিনী। এই দুই জয়ের ফলে এএফসি কাপের ‘ডি’ গ্রুপের শীর্ষে রয়েছে তারা। ওডিশা এফসি-কে হারিয়ে আসা বসুন্ধরা আপাতত রয়েছে তিন নম্বরে। মাজিয়া ও তাদের পয়েন্ট সংখ্যা একই হলেও গোলপার্থক্যে পিছিয়ে থাকায় তারা এখন তিনে। মঙ্গলবার তাদের ম্যাচের আগে একই মাঠে ওডিশা খেলবে মাজিয়ার বিরুদ্ধে। সেই ম্যাচে মাজিয়া জিতে গেলে তাদের কাজটা আরও কঠিন হয়ে যাবে। ফেরান্দোদের হারাতে না পারলে কার্যত গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে যাবে তারা। সে জন্যই এই ম্যাচে জয় চাইই বসুন্ধরার।
যদিও কাজটা খুব একটা সোজা নয়। দুই দলের শেষ মোলাকাতে মোহনবাগান এসজি যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে জিতেছিল ৪-০-য়। ফেরান্দো যদিও বলছেন, এ বার আরও উন্নত দল নিয়ে এসেছে বাংলাদেশের এক নম্বর দল। তবে তাদের কোচ অস্কার ব্রুজোন বলছেন, “পরিস্থিতি এমনই যে, গ্রুপ পর্বের বাকি সব ম্যাচই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এখানে আমরা এসেছি এক মোহনবাগানের এক নম্বরে অবস্থানকে চ্যালেঞ্জ জানাতে এবং তা করতে হলে তিন পয়েন্ট চাই আমাদের। ওডিশার বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচেই আমরা নিজেদের প্রমাণ করেছি। এখন আমাদের সামনে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সেরা দলকে চ্যালেঞ্জ ছোড়ার সুযোগ। আমরা এখানে শুধু ডিফেন্স করতে আসিনি। মোহনবাগানের খেলার স্টাইল অনুযায়ী আমরা খেলার চেষ্টা করব। কিন্তু নিজেদের সুনাম খোয়াব না”।
মোহনবাগান শেষ মাঠে নেমেছিল গত ৭ অক্টোবর, চেন্নাইন এফসি-র বিরুদ্ধে, আইএসএলে। অর্থাৎ প্রায় দু’সপ্তাহ পরে মাঠে নামতে চলেছে তারা। ফেরান্দোর দলের খেলোয়াড়রা তরতাজা হয়েই মাঠে নামবেন। তবে হোম অ্যাডভান্টেজ পাবেন না। এই নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নন স্প্যানিশ কোচ। বলেন, “আমাদের দলের ছেলেরা পেশাদার। সমর্থকদের অবশ্যই মিস্ করব। তবে মাঠে নিজেদের সেরাটা দিয়ে জেতার মানসিকতা নিয়েই মাঠে নামব আমরা। কোনও অজুহাত দিতে চাই না। বরং ওডিশাকে ধন্যবাদ দেব এত ভাল সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার জন্য”।
দুই সপ্তাহের ছুটির পর মাঠে নামা প্রসঙ্গে ফেরান্দো বলেন, “হ্যাঁ, একটা লম্বা ছুটি কাটিয়ে আমরা মাঠে নামছি ঠিকই। তবে ছুটিতে প্রতিদিনই আমরা কঠোর অনুশীলন করেছি। দল এখন ভাল অবস্থায় রয়েছে। এএফসি কাপ-কে আমরা যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছি। দলের পরিবেশ খুবই ভাল। আমরা তিন পয়েন্টের জন্যই মাঠে নামব”। সুমিত রাঠি ও আশিক কুরুনিয়ান ছাড়া দলের সব খেলোয়াড়ই মাঠে নামার জন্য তৈরি বলে জানিয়ে দিলেন ফেরান্দো। ফলে পূর্ণশক্তির দল নিয়েই নামবেন তিনি।
এএফসি-র ক্লাব টুর্নামেন্টে যেহেতু ছ’জন করে বিদেশি মাঠে নামানোর নিয়ম চালু করা হয়েছে, তাই মোহনবাগান তাদের ছয় বিদেশিকেই দলে রাখতে পারে। মাজিয়ার বিরুদ্ধে ছ’জন বিদেশিকে নিয়ে নেমেছিল সবুজ-মেরুন বাহিনী। রক্ষণে ব্রেন্ডান হ্যামিল, হেক্টর ইউস্তে, মাঝখানে হুগো বুমৌস ও আক্রমণে আরমান্দো সাদিকু, জেসন কামিংস ও দিমিত্রিয়স পেট্রাটস। এই ম্যাচেও বিদেশিদের একই লাইন-আপ দেখা যেতে পারে। এ ছাড়া রক্ষণে আনোয়ার আলি ও আশিস রাই। তবে মাঝমাঠে গ্ল্যান মার্টিন্স, লিস্টন কোলাসো, শুভাশিস বোস, অনিরুদ্ধ থাপা, সহাল আব্দুল সামাদ ও মনবীর সিংদের মধ্যে কাদের প্রথম এগারোয় দেখা যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। গত ম্যাচে যেমন শেষের চারজনকে রিজার্ভ বেঞ্চেই থাকতে হয়েছিল।
অন্য দিকে, বসুন্ধরার ব্রাজিলীয় উইঙ্গার রবিনহো মোহনবাগানের রক্ষণের কাছে ত্রাস হয়ে উঠতে পারেন। ড্রিবলিংয়ে ও মার্কারকে ফাঁকি দেওয়ার ব্যাপারে ইনি বিশেষজ্ঞ। বসুন্ধরার গতিময় ওঠানামায় এই উইঙ্গার নেতৃত্বও দেন প্রায়ই। এ ছাড়া গোলে জোরালো শট নেওয়ার ব্যাপারেও তিনি যথেষ্ট দক্ষ। রবিনহো ছাড়াও ইয়ালদাশেভ, গফুরভ, দিদিয়ে ব্রসু, মিগুয়েল ফিগুয়েরা ও ডোরি-কেও নজরে রাখতে হবে পেট্রাটসদের।
এ পর্যন্ত দু’বারের সাক্ষাতে ওপার বাংলার সেরা দল কখনও হারাতে পারেনি এ পার বাংলার ঐতিহ্যবাহী ক্লাবকে। মঙ্গলবার কলিঙ্গ স্টেডিয়ামেও সেই সম্ভাবনা কম। কিন্তু ফুটবলে অঘটন নতুন কিছু নয়।
এএফসি কাপ, ২০২৩-২৪ গ্রুপ লিগ
ম্যাচ- মোহনবাগান এসজি বনাম বসুন্ধরা কিংস
ভেনু- কলিঙ্গ স্টেডিয়াম, ভুবনেশ্বর
কিক অফ- ২৪ অক্টোবর, রাত ৯.৩০
সম্প্রচার- স্পোর্টস ১৮, ফ্যানকোড অ্যাপ