Nitish Reddy: ছেলে তখন ৯৯-এ, হাত পা কাঁপছিল, দিনের শেষে সিরাজকে হাতজোড় করে ধন্যবাদ নীতীশের বাবার
IND vs AUS: চাকরি ছেড়ে দিয়ে যে সময় ও পরিশ্র ছেলের জন্য করেছিলেন, শনিবার তারই ফল পেলেন। কিন্তু ছেলের ইতিহাস গড়ার দিনেও সবার আগে তিনি ধন্যবাদ জানাচ্ছেন মহম্মদ সিরাজকে।
মেলবোর্ন: বক্সিং ডে টেস্টের ফল যাই হোক না কেন, ভারতীয় ক্রিকেট কিন্তু পেয়ে গিয়েছে নতুন এক তারকাকে। সিরিজের শুরু থেকেই বুঝিয়েছিলেন যে তিনি ফ্লুক নন। তিনি এই পর্যায়ে যোগ্যতার সঙ্গেই খেলতে এসেছেন। মেলবোর্নের ২২ গজে নীতীশ রেড্ডির লড়াকু শতরানের ইনিংসটি সারাজীবন মনে থাকবে ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে। ছেলের কেরিয়ারের সোনালী অধ্যায়ের সাক্ষী থাকলেন নীতিশের বাবা মুতিয়ালা রেড্ডি। যিনি ছেলেকে ক্রিকেটার হিসেবে গড়ে তোলার জন্য চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন ২৫ বছর বয়সেই। ব্যাঙ্ককর্মী ছিলেন। কিন্তু চাকরি ছেড়ে দিয়ে যে সময় ও পরিশ্র ছেলের জন্য করেছিলেন, শনিবার তারই ফল পেলেন। কিন্তু ছেলের ইতিহাস গড়ার দিনেও সবার আগে তিনি ধন্যবাদ জানাচ্ছেন মহম্মদ সিরাজকে। অ্য়াডাম গিলক্রিস্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রীতিমত হাতজোড় করে তারকা পেসারকে ধন্যবাদ জানালেন মুতিয়ালা রেড্ডি।
দিনের শেষে খেলা যখন স্থগিত করে দেওয়া হল তখন অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররা দৌড়ে এলেন নীতীশের কাছে। সবাই হাত মেলালেন। গোটা মেলবোর্ন গ্য়ালারি উঠে দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানাচ্ছে। প্রাক্তন বিশ্বজয়ী অজি উইকেট কিপার ব্যাটার অ্য়াডাম গিলক্রিস্ট চলে এলেন ফেন্সিংয়ের একেবারে ধারে যেখানে নীতীশের বাবা ও ভারতীয় সমর্থকরা গলা ফাটাচ্ছিলেন। সেখানেই ছেলের শতরানের পর কেমন অনুভূতি তা জানতে চেয়েছিলেন গিলি। নীতীশের বাবা মুতিয়ালা রেড্ডি বলেন, ''আমাদের পরিবারের জন্য ভীষণ স্পেশাল একট দিন। সারাজীবন এই দিনটা আমরা মনে রাখব। ১৪-১৫ বছর বয়স থেকে ও রান করে এসেছে। এবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও বড় রান পেল। দুর্দান্ত অনুভূতি। আমি প্রথমেই ধন্যবাদ জানাতে চাই মহম্মদ সিরাজকে। ও যখন ৯৯ রানে ব্যাটিং করছে, তখন সিরাজ স্ট্রাইকিং এন্ডে ছিল। ও সুন্দরভাবে ওভারটা কাটিয়ে দিয়েছে। অসংখ্য ধন্যবাদ ওকে।''
গত আইপিএল দুর্দান্ত পারফর্ম করার পর আচমকাই জাতীয় দলের নির্বাচকদের নজরে চলে এসেছিলেন। গৌতম গম্ভীর চাইছিলেন অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বাউন্সি ও গতিময় পিচে নীতীশকে দলে নিতে, কারণ তাঁর বলের হাতও কাজে লাগতে পারে। সিরিজের প্রথম টেস্ট থেকেই একাদশে সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু চল্লিশের ঘরে বার কয়েক আউট হতে হয়েছিল। তবে প্রথম ম্য়াচেই নিজের জাত চিনিয়েছিলেন। এবার মেলবোর্ন টেস্টে আরও একবার তাঁর সামনে সুযোগ এসেছিল বড় রান করার। এমনকী দলকেও খাদের কিনারা থেকে তোলার। দুটো কাজই নিঁখুতভাবে সামলালেন নীতীশ। ১৯১ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে দল যখন ধুঁকছিল, তখন তিনি ক্রিজে আসেন। এরপর জাডেজার সঙ্গে প্রথমে ৩০ রানের ও পরে ওয়াশিংটন সুন্দরের সঙ্গে ১২১ রানের লম্বা পার্টনারশিপ গড়ে দলকে ফলো অন থেকে বাঁচিয়ে দেন নীতিশ।