Ashoke Dinda On Wriddhiman: মেসবাড়িতে ৮ বছর একসঙ্গে, বাজি জিতে ঋদ্ধিমানের কাছে এখনও ব্যাট পাওনা ডিন্ডার
Ranji Trophy: যাঁর অবসরের মুহূর্ত চাক্ষুস করবেন বলে বৃহস্পতিবার ইডেন গার্ডেন্সে (Eden Gardens) দৌড়ে এসেছিলেন ডিন্ডা, তিনি ঋদ্ধিমান সাহা (Wriddhiman Saha)।

সন্দীপ সরকার, কলকাতা: তাঁরা বাল্যবন্ধু নন। তবে ক্রিকেট মাঠের কথা বললে তাঁরা প্রায় দুই যুগের সঙ্গী।
একজন অবসর নিয়েছেন বছর চারেক আগে। কেরলের বিরুদ্ধে রঞ্জি ট্রফিতে তাঁর শেষ ম্যাচ অবশ্য ঘরের মাঠে ছিল না। থুম্বায় খেলেছিলেন। তিনি অশোক ডিন্ডা (Ashoke Dinda)।
আর যাঁর অবসরের মুহূর্ত চাক্ষুস করবেন বলে বৃহস্পতিবার ইডেন গার্ডেন্সে (Eden Gardens) দৌড়ে এসেছিলেন ডিন্ডা, তিনি ঋদ্ধিমান সাহা (Wriddhiman Saha)। প্রথমজন মেদিনীপুর থেকে উঠে এসে বাংলার সর্বকালের সেরা ফাস্টবোলার হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। দ্বিতীয়জন শিলিগুড়ি থেকে উঠে এসে গোটা বিশ্বের উইকেটকিপারদের উজ্জ্বল তালিকায় নাম নথিভুক্ত করে ফেলেছেন।
পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে রঞ্জি ট্রফির ম্যাচ খেলেই জুতোজোড়া তুলে রাখবেন ঋদ্ধিমান। অলৌকিক কিছু না হলে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হবে বাংলাকে। সেই সঙ্গে থেমে যাবে রঙিন এক কেরিয়ার। ঋদ্ধিমান সাহা পরের সোমবার থেকেই হয়ে যাবেন প্রাক্তন ক্রিকেটার।
ঋদ্ধিমানকে প্রথম কবে, কোথায় দেখেছিলেন? ইডেনের ক্লাব হাউসের লোয়ার টিয়ারে বসে খেলা দেখার ফাঁকে অশোক ডিন্ডা বললেন, 'সালটা সম্ভবত ২০০২। ইডেনেই প্রথম দেখেছিলাম পাপালিকে (সতীর্থদের মধ্যে এই নামেই পরিচিত)। বাংলার অনূর্ধ্ব ১৯ দলের শিবিরে। তারপর কত ম্যাচ একসঙ্গে খেলেছি। আমার যেবার বাংলার হয়ে অভিষেক হল, তার দুই মরশুম পরে পাপালির অভিষেক। ২০০৮ সালে ইন্ডিয়া এ-র হয়ে ইজ়রায়েল সফরে গিয়েছিলাম একসঙ্গে।'
বাংলার ম্যাচ থাকলেই স্কোরবোর্ডে এক সময় একটা ব্যাপার বেশ নিয়মিত ছিল। ব্যাটার কট সাহা বো ডিন্ডা। আপনার বোলিংয়ে প্রচুর ক্যাচ ধরেছেন ঋদ্ধিমান... প্রশ্ন থামিয়ে দিয়ে ডিন্ডা বললেন, 'উইকেটকিপার হিসাবে নিজেকে আলাদা উচ্চতায় তুলে নিয়ে গিয়েছিল পাপালি। পুরোপুরি টিমম্যান। মাঠের বাইরে খুব ভাল মানুষ। অজাতশত্রু। কারও সঙ্গে কোনওদিন খারাপ ব্যবহার করেনি। আর কখনও অভিযোগ করেনি।'
মেদিনীপুরের ডিন্ডা ও শিলিগুড়ির ঋদ্ধিমান কলকাতায় আসার পর ঠিকানা ছিল একই। শিয়ালদার কোলে মার্কেটের মেসঘর। ডিন্ডা বলছেন, 'একসঙ্গে ৮ বছর ছিলাম কোলে মার্কেটে। ২০০৩ থেকে প্রায় ২০১০ সাল পর্যন্ত। কত স্মৃতি।'
মজার কোনও গল্প মনে পড়ছে? ডিন্ডা বলছেন, '২০১৬ সালের রঞ্জি ট্রফির একটা ম্যাচের কথা মনে পড়ছে। ধর্মশালায় আমরা রেলওয়েজের বিরুদ্ধে খেলছিলাম। রেলওয়েজ একটা সময় ম্যাচটা জেতার মতো জায়গায় ছিল। পাপালি আমার বলে উইকেটের সামনে দাঁড়িয়ে কিপ করতে এসেছিল। আমাকে টিপ্পনি কেটে বলেছিল, এই ম্যাচ তুই আর বার করতে পারবি না। আমিও চ্যালেঞ্জ নিই। ওকে বলি, তুই নিজের জায়গায় গিয়ে কিপিং কর। আমি বাকি উইকেট তুলে নেব। পাপালি বলেছিল, তুই ম্যাচ জেতাতে পারলে একটি ব্যাট উপহার দেব। আমি বলেছিলাম, একটি নয়, তিনটি ব্যাট চাই। ও তাতেই রাজি হয়ে যায়। সেই ম্যাচে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫৬/৩ থেকে ২৭১ রানে অল আউট হয়ে যায় রেলওয়েজ। দ্বিতীয় ইনিংসে আমি ৫ উইকেট নিই। সব মিলিয়ে ওই ম্যাচে ১০ উইকেট।'
ব্য়াট উপহার পেয়েছিলেন? ডিন্ডা হেসে বলছেন, 'দুটো ব্যাট পেয়েছি। আরও একটা বাকি। ওর অবসরের পরই ওর একটা ব্যাট নিয়ে নেব।' সতীর্থের বিদায়লগ্নে আবেগে ভাসছেন ডিন্ডাও।
আরও পড়ুন: চড়া দামে টিকিট কেটেও এমন হয়রানি! ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচের পরই বিস্ফোরক তারকা ক্রিকেটারের দিদি
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
