Kerala Blasters vs Mohammedan: মহমেডানকে গোলের মালা পরিয়ে ইস্টবেঙ্গলকে টপকে গেল কেরল ব্লাস্টার্স
Indian Super League: পুরো ম্যাচে দলকে দুর্দান্ত ভাবে নেতৃত্ব দিয়ে ম্যাচের সেরার খেতাব জিতে নেন নোয়া সাদাউই। ৮৬ মিনিট মাঠে ছিলেন তিনি। একটি গোল করেন ও দু’টি গোলের সুযোগ তৈরি করেন।
কোচি: টানা তিন ম্যাচে হারের পর জয়ে ফিরল কেরল ব্লাস্টার্স এফসি (Kerala Blasters FC vs Mohammedan SC)। রবিবার কোচির জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে তারা কলকাতার মহমেডান এসসি-কে ৩-০-য় হারিয়ে চলতি লিগের চতুর্থ জয় পেল। এই জয়ের ফলে তারা ১৪ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলে ইস্টবেঙ্গল এফসি-কে টপকে ১০ নম্বরে উঠে এল। তাদের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের পয়েন্টের ফারাক মাত্র এক। তবে লাল-হলুদ বাহিনীর চেয়ে একটি ম্যাচ বেশি খেলে এই ব্যবধান তৈরি করল তারা।
প্রায় প্রত্যেক ম্যাচের মতো এ দিনও মহমেডান এসসি তাদের প্রতিপক্ষকে প্রথমার্ধে কোনও গোল করতে দেয়নি এবং নিজেরাও গোলের একাধিক সুযোগ হাতছাড়া করে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে তাদের পারফরম্যান্স ক্রমশ ফিকে হতে থাকে এবং লিগের নবম হারের দিকে এগিয়ে যায়। সারা ম্যাচে দুটির বেশি গোলের সুযোগই তৈরি করতে পারেনি তারা। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ১১টি গোলের সুযোগ তৈরি করে। মহমেডানের ঘরের মাঠে প্রথম লিগে ২-১-এ জয় পেয়েছিল কেরল ব্লাস্টার্স। এ বারও তাদের হারিয়ে লিগ ডাবল করে ফেলল তারা।
ম্যাচের ৬২ মিনিটের মাথায় সাদা-কালো বাহিনীর তরুণ গোলকিপার ভাস্কর রায় আত্মঘাতী গোল করে বসেন। এর পরে ৮০ মিনিটের মাথায় মার্কিন ফরওয়ার্ড নোয়া সাদাউই হেড করে ব্যবধান বাড়ান ও নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটের জয় নিশ্চিত করেন ফরাসি ডিফেন্ডার আলেকজান্দার কোয়েফ। সারা ম্যাচে এ দিন দু’টির বেশি শট গোলে রাখতে পারেনি কলকাতার দল। সেখানে ব্লাস্টার্স পাঁচটি শট গোলে রাখে এবং সেগুলি থেকে দু’টি গোল করে।
এ দিন পুরো ম্যাচে দলকে দুর্দান্ত ভাবে নেতৃত্ব দিয়ে ম্যাচের সেরার খেতাব জিতে নেন নোয়া সাদাউই। ৮৬ মিনিট মাঠে ছিলেন তিনি। একটি গোল করেন ও দু’টি গোলের সুযোগ তৈরি করেন। তাঁর নেওয়া চারটি শটের মধ্যে দু’টি শট ছিল লক্ষ্যে। মোট ২৮টি পাসের মধ্যে ২২টি সফল পাস ছিল নোয়ার। প্রতিপক্ষের বক্সে ১০বার বল ছুঁয়েছেন তিনি। চারটি ক্রস দেন তিনি, যার মধ্যে একটি ছিল সফল।
রবিবার ম্যাচের প্রথম আধ ঘণ্টা দুই দলেরই রক্ষণভাগ নিজেদের অবস্থান বজায় রাখে এবং প্রতিপক্ষের আক্রমণ প্রতিহত করে। তবে, ব্লাস্টার্স একাধিক হাফ চান্স তৈরি করে, যার মধ্যে বেশিরভাগই হয় নোয়ার উদ্যোগে। প্রথমার্ধের শেষ কোয়ার্টারে বলের দখলে আধিপত্য ব্লাস্টার্সেরই আধিপত্য ছিল। তবে মহমেডানের রক্ষণ ছিল বেশ জমাট।
প্রথমার্ধের সেরা সুযোগটি তৈরি করে ব্লাস্টার্স, যখন আদ্রিয়ান লুনা বক্সের মধ্যে লম্বা পাস বাড়ান নোয়াকে। কোরু সিং-এর দিকে বল পাঠান নোয়া। তবে তরুণ ফরোয়ার্ডের হেড পোস্টে লেগে ফিরে আসে এবং ফিরতি বল সাইড নেটে পাঠান পেপরা। প্রথম ৪৫ মিনিটে একটিই শট গোলে রাখতে পারে কেরলর দল।
দ্বিতীয়ার্ধে নিজেদের খেলা পুরো বদলে ফেলে ব্লাস্টার্স এবং সারা অর্ধেই আধিপত্য বজায় রাখে। লুনার কর্নার থেকে প্রায় গোল করেই ফেলেছিলেন মিলোস ড্রিনচিচ। কর্নারের পর লাফিয়ে সবার ওপরে উঠে দুর্দান্তভাবে হেড করেন তিনি, যা অসাধারণ ডাইভিং সেভ করেন মহমেডান গোলপ্রহরী ভাস্কর রায়।
এ দিন সারা ম্যাচে যেখানে আটটি কর্নার আদায় করে নিয়েছেন নোয়া-রা, সেখানে সাদা-কালো বাহিনী একটির বেশি কর্নার পায়নি। ৬২ মিনিটের মাথায় ভাস্করের একটি অপ্রত্যাশিত ভুলের কারণে গোলের খাতা খুলে ফেলে কেরল ব্লাস্টার্স এফসি। মহমেডান গোলরক্ষক লুনার কর্নার পাঞ্চ করে বের করে দিতে যান। কিন্তু বল তাঁর হাতে লেগে জালে জড়িয়ে যায় (১-০)।
ম্যাচের ৭১ মিনিটে, মহামেডান এসসির কোচ আন্দ্রেই চেরনিশভ সমতা আনার জন্য কার্লোস ফ্রাঙ্কার পরিবর্তে সিজার মানজোকিকে মাঠে নামান। কিন্তু তাতে কোনও লাভই হয়নি। ৮০ মিনিটের মাথায় কোরুর পাসে নোয়া পেনাল্টি এরিয়ায় বল পেয়ে একটি দুর্দান্ত হেডে ব্যবধান দ্বিগুণ করে নেন। বক্সের মধ্যে প্রায় ফাঁকা জায়গা থেকে বল জালে পাঠান তিনি (২-০)।
দু’গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর কোয়েফ ও লালথানমাউইয়া রেনথলেইকে মাঠে নামিয়ে তৃতীয় গোলটি তুলে নিতে চাইছিল এবং ৮৬ মিনিটের মাথায় মাঠে নামা ফরাসী ডিফেন্ডার কোয়েফ পাঁচ মিনিটের মধ্যেই সেই পরিকল্পনা সফল করেন। নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে দলের তৃতীয় গোলটি করেন তিনি। লুনার ক্রস থেকে বল পেয়ে বক্সে ঢুকে জোরালো শটে গোল করেন তিনি (৩-০)। গোলে শট নেওয়ার সময় কার্যত অরক্ষিত ছিলেন তিনি।
ম্যাচের সেরা: নোয়া সাদাউই (কেরল ব্লাস্টার্স এফসি) (সৌ: আইএসএল মিডিয়া)
আরও পড়ুন: ক্রিকেট মাঠে চক দে ইন্ডিয়া! দ্রাবিড়ের নেতৃত্বে খেলেছেন, ট্রফির হ্যাটট্রিকে নবজাগরণ
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।