Messi in India: বারবার মাঠ ছাড়তে বলেছি, কেউ শোনেনি: যুবভারতী-কাণ্ডে শতদ্রুর আইনজীবী, রাজ্যের তরফে বলা হল...
Kolkata Messi Event Vandalism: যুবভারতীতে ওইদিন CP পাস অর্থাৎ Close Proximity Pass-র কথা বলাই হয়নি, বরং বলা হয়েছিল জেনারেল পাসের কথা, হাইকোর্টে দাবি শতদ্রু দত্তের আইনজীবীর।

কলকাতা: যুবভারতী কাণ্ডে (Kolkata Messi Event Vandalism) কলকাতা হাইকোর্টে আজ শুনানি ছিল। আদালতের তরফে একদিকে আজ যেখানে মেসির লেকটাউনের মূর্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়, তেমনই যুবভারতীতে মেসির অনুষ্ঠানের (G.O.A.T India Tour) দিন কীভাবে এতজন লোক মাঠে প্রবেশ করলেন, সেই নিয়েও প্রশ্ন উঠে। যুবভারতী বিশৃঙ্খলাকাণ্ডে কিন্তু সম্পূর্ণভাবে দায় এড়িয়ে উল্টে পুলিশের দিকেই আঙুল তুললেন শতদ্রু দত্তের (Satadru Datta) আইনজীবী।
মেসির কলকাতা সফরে তাঁকে ঘিরে ছিলেন প্রভাবশালী থেকে নেতা-মন্ত্রীরা, সাধারণ সমর্থকরা গ্যালারি থেকে মেসিকে ঠিক করে দেখতেই পাননি, এই মর্মেই প্রাথমিকভাবে ঝামেলা শুরু হয় বলে শোনা যায়। সেই যুবভারতীকাণ্ডে মেসির ভারত সফরের প্রধান উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্ত পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। এদিন হাইকোর্টে গোটা ঘটনার দায় পুলিশের কাঁধে ঠেলে তাঁর আইনজীবী দাবি করেন, 'মাঠে কি করে বেশি লোক, সেটা বলতে পারব না, গেটের দায়িত্বে ছিল পুলিশ'।
শতদ্রু দত্তের আইনজীবীর তরফে বলা হয় মাঠের মধ্যে উপস্থিত লোকেদের বারংবার জায়গা ফাঁকা করতে বলা হলেও, তাঁরা শোনেননি। পুলিশেও মেসির ছবি তুলতে গিয়েছিল, বিস্ফোরক দাবি শতদ্রুর আইনজীবীর। হায়দরাবাদ, মুম্বইয়ে মেসির অনুষ্ঠানের উদাহরণ টেনে তিনি সওয়াল করেন, 'অতিরিক্তরা কীভাবে মাঠে ঢুকল আমরা বলতে পারব না। কলকাতা ছাড়া হায়দরাবাদ, মুম্বই, দিল্লিতেও অনুষ্ঠান হয়েছে। অন্য কোনও জায়গায় কোনও অভিযোগ নেই। বারবার মাঠ ছাড়তে বলেছি, কেউ শোনেনি, ছবি তুলতে গিয়েছিল পুলিশও।'
ওইদিন মোট ৮২টি CP পাস অর্থাৎ Close Proximity Pass দেওয়া হয়েছিল। সরকারকে এই বিষয়ে হাইকোর্ট প্রশ্ন করে, 'আপনারা কি নিজেরা খতিয়ে দেখে CP পাস দিয়েছিলেন? নাকি আয়োজকরা যা চেয়েছে, সেটাই দিয়েছেন?' জবাবে সরকারের তরফে দাবি করা হয় সবটা খতিয়ে দেখলে 'অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিতে হত। তার প্রতিক্রিয়া আরও খারাপ হত।' এদিকে শতদ্রুর আইনজীবীর তরফে দাবি করা হয় উদ্যোক্তাদের তরফে Close Proximity Pass ইস্যু করার জন্য বলাই হয়নি, তাঁদের তরফে কেবল সাধারণ পাসের কথা বলা হয়েছিল।
মাসের জলের বোতল ঢোকা নিয়েও শতদ্রুর আইনজীবীর তরফে দায় এড়িয়ে মাঠ কর্তৃপক্ষকে কাঠগড়ায় তোলা হয় আর বাড়তি দাম নিয়েও দায় এড়িয়ে তাঁদের মন্তব্য, ২০০ টাকার জলের বোতল নিয়ে কথা হচ্ছে, মাল্টিপ্লেক্সেও তো খাবারের বেশি দাম'। যুবভারতী কাণ্ডে অনেকেই ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের দিকে আঙুল তুলেছেন, ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। অভিযোগের আঙুল উঠছে শাসকদল তৃণমূলের দিকেও। সেই বিষয়ে রাজ্য সরকারের আইনজীবী কল্যাণ বন্দোপাধ্যায় সওয়াল করেন, 'অরূপ বিশ্বাস ছাড়া আর কাউকে শনাক্ত করতে পেরেছেন মামলাকারীরা? মেসির সঙ্গে তো দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছেলেরও ছবি আছে। ঘটনার গুরুত্ব বুঝে সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমা চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কোনও মুখ্যমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রীর এই ভূমিকা দেখতে পাবেন না।'
উপরন্তু, এই অনুষ্ঠানটি যেহেতু একটি ব্যক্তিগত সংস্থার ছিল এবং তারাই টিকিট বিক্রি থেকে শুরু করে সবটা করে, তাই এই অনুষ্ঠানের টিকিটের দাম ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়াও সরকারের দায়িত্ব নয় এবং আদালত দায়িত্ব দিলে তবেই সরকার সেই কাজ করতে পারেন বলেও আজ সওয়াল করেন সরকারের তরফের আইনজীবী কল্যাণ। সবটা তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পরেই জানা যাবে বলে দাবি তাঁর। যদিও এই কমিটি নিয়েও প্রশ্ন তুলে বিকাশ ভট্টাচার্য দাবি করেন, 'বিচারবিভাগীয় নয়, এটা প্রশাসনিক কমিটি'।
সব মিলিয়ে মেসির যুবভারতী কাণ্ড নিয়ে যে রাজনৈতিক তরজা, জলঘোলা, দায় ঠেলাঠেলি অব্যাহত, তা বলাই বাহুল্য।






















