Vishal Kaith: সাত বছর পর ভারতীয় দলে ফেরার রোমাঞ্চ, কী বলছেন বিশাল কায়েথ?
Indian Football Team: ২০১৮ য় ২২ বছর বয়সে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের প্রধান গোলরক্ষকের দায়িত্ব পালন করা বিশাল এখন আরও পরিণত হয়েছেন এবং দেশের অন্যতম সেরা গোলরক্ষকে পরিণত হয়েছেন।

নয়াদিল্লি: ভারতীয় ফুটবল দলের (Indian Football Team) ইতিহাসে কোনও খেলোয়াড়ের দুই ম্যাচের মধ্যে দীর্ঘতম বিরতি কতদিনের? ২,৩৭৭ দিন। যে নজির রয়েছে বিশাল কায়েথের। তাঁর চতুর্থ ও পঞ্চম ভারতের জার্সিতে নামার মধ্যে পার্থক্য ছিল এতদিনেরই। এর মধ্যে ছিল এক দীর্ঘ প্রতীক্ষা, সংকল্প এবং কঠোর পরিশ্রম।
ভারতের এই গোলকিপার সর্বশেষ জাতীয় দলের হয়ে খেলেছিলেন ২০১৮ য়, বাংলাদেশের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে। ভারত সেই টুর্নামেন্টে অনূর্ধ্ব-২৩ দল নিয়ে অংশ নিয়েছিল এবং রানার্স-আপ হয়েছিল। ফাইনালে ভারতের প্রতিপক্ষ ছিল মলদ্বীপ, যাদের বিপক্ষেই বিশাল প্রত্যাবর্তন ম্যাচ খেললেন। তবে এবার ফল ছিল অন্ভায, ভারত ৩-০ গোলের স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ জয় পায়, আর বিশালকে মাত্র একবার সেভ করতে হয়।
"প্রায় সাত বছর পর আবার খেলতে পারা দারুণ অনুভূতি। গোলরক্ষকের পজিশন এমন যে, একাদশে জায়গা পাওয়া কঠিন," এআইএফএফ-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন ২৮ বছর বয়সী বিশাল।
"আমি এই ম্যাচটিকে আমার অভিষেক হিসেবে নিয়েছিলাম। ২০১৮ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে আমরা অনূর্ধ্ব-২৩ দল নিয়ে গিয়েছিলাম। আমি কখনও সিনিয়রদের সঙ্গে খেলিনি, বিশেষ করে (সুনীল) ছেত্রী ভাইয়ের সঙ্গে। তাই এবার অনুভূতিটা আলাদা।
"যখন আপনি মাঠে নামতে পারেন না, তখন সেটা মেনে নেওয়া কঠিন। তবে যদি আপনি কঠোর পরিশ্রম করে যান এবং অনুশীলনে ১০০ শতাংশ দেন, তাহলে একদিন সুযোগ আসবেই। আমার জন্য সেই দিনটা ছিল বুধবার (মালদ্বীপের বিপক্ষে)। আমি সব সময় আত্মপ্রত্যয়ী ছিলাম যে, নিজের কাজ ঠিকমতো করে গেলে সুযোগ আসবেই," বলেন বিশাল।
২০১৮ য় ২২ বছর বয়সে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের প্রধান গোলরক্ষকের দায়িত্ব পালন করা বিশাল এখন আরও পরিণত হয়েছেন এবং দেশের অন্যতম সেরা গোলরক্ষকে পরিণত হয়েছেন।
সেই সময়ের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, "তখন আমি অনেক ছোট ছিলাম, এখন আমি অনেক বেশি অভিজ্ঞ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভুল কম হয়, সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা বাড়ে। জাতীয় দল বছরে খুব বেশি ম্যাচ খেলে না—মূলত বাছাইপর্ব ও কিছু প্রীতি ম্যাচ থাকে—তাই একাদশে জায়গা পাওয়া কঠিন। লিগে নিজের ক্লাবের হয়ে ধারাবাহিক ভালো পারফরম্যান্স করতেই হবে।"
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশালের ঘরোয়া পারফরম্যান্স ছিল অসাধারণ। মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের এই গোলরক্ষক এখন ভারতীয় সুপার লিগের (আইএসএল) ইতিহাসে সর্বাধিক ক্লিন শিটের মালিক (৫৪)। ফেব্রুয়ারিতে মহমেডান স্পোর্টিংয়ের বিপক্ষে ম্যাচে তিনি প্রথম গোলরক্ষক হিসেবে ৫০ ক্লিন শিটের মাইলফলক স্পর্শ করেন। সবুজ-মেরুনের হয়ে তাঁর দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দলকে দুটি আইএসএল শিল্ড, একটি আইএসএল কাপ ও একটি ডুরান্ড কাপ এনে দিয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে, বিশাল ২০২২-২৩ মরশুমে আইএসএলের গোল্ডেন গ্লাভ জিতেছেন এবং চলতি মরশুমেও আরেকটি জয়ের দিকে এগোচ্ছেন। ইতিমধ্যে ১৪টি ক্লিন শিট অর্জন করেছেন তিনি।
"আমি একা গোল্ডেন গ্লাভ জিততে পারি না। এটা পুরো দলের প্রচেষ্টার ফল। তারা ভালো করলে গোলরক্ষকের কাজ সহজ হয়ে যায়। মলদ্বীপের বিপক্ষেও আমার তেমন কিছু করার ছিল না, কারণ আমরা ভালো ডিফেন্ড করেছিলাম। আমি মোহনবাগানের হয়ে সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করি, যাতে নিজেকে আরও উন্নত করতে পারি," বলেন বিশাল।
হিমাচল প্রদেশের এই গোলরক্ষক ভারতের হয়ে ফেরার আগে টানা ২১টি ম্যাচ বেঞ্চে বসে ছিলেন। তবে গুরপ্রীত সিং সান্ধু ও অমরিন্দর সিংয়ের মতো দুই অভিজ্ঞ গোলরক্ষক থাকায় প্রতিযোগিতার চেয়ে শেখা এবং অনুশীলনে কঠোর পরিশ্রম চালিয়ে যাওয়াই ছিল তাঁর লক্ষ্য।
এই নিয়ে তিনি বলেন, "গুরপ্রীত পাজি ও অমরিন্দর পাজি স্কোয়াডে নিয়মিত থাকায় মাঠে নামা কঠিন। মানসিকভাবে শক্ত থাকতে হয়। আমরা তিনজন আছি, কিন্তু খেলতে পারবে একজনই। এই পজিশনে ধারাবাহিকতাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সম্পর্ক চমৎকার। আমরা সবাই উত্তর ভারত থেকে এসেছি, তাই আমরা একে অপরকে সব সময় অনুপ্রাণিত করি। কেউ ভুল করলে অন্যরা তাকে সাহায্য করে। যখন আমি খেলার সুযোগ পাই না, তখন তাদের কাছ থেকে শেখার চেষ্টা করি—তারা কীভাবে সঠিক জিনিসগুলো করছে তা দেখি। যদিও একসঙ্গে একাধিক গোলরক্ষক খেলতে পারে না, তবুও আমরা অনুশীলনে একে অপরকে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করি"। (সৌ: আইএসএল মিডিয়া)
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
