কলকাতা: ক্রিকেট ছেড়েছেন দীর্ঘদিন হয়ে গেল। মাঠে হোক বা মাঠের বাইরে এক বর্ণময় চরিত্র আশিস নেহরা (Ashish Nehra)। ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করেছেন, সেখানেও সুনাম কুড়িয়েছেন। এবার কোচ হিসেবেও আইপিএলেও (IPL) প্রথমবারেরই সাফল্য পেয়েছেন। গুজরাত টাইটান্সের (Gujrat Titans) কোচ হিসেবে প্রথম মরসুমেই জয়। বাঁহাতি এই পেসারের ২২ গজের কেরিয়ারে বারবার চোট আঘাত ব্যাঘাত ঘটিয়েছে। তবে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত কোনও ভারতীয় হিসেবে সেরা বোলিংয়ের পারফরম্যান্স আশিস নেহরারই। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২০০৩ সালে ২৩ রানের বিনিময়ে তুলে নিয়েছিলেন ৬ উইকেট। আজ ওস্তাদের মার সিরিজে আমাদের প্রতিবেদন আশিস নেহরার সেই স্পেল নিয়েই।
গোড়ালিতে চোট, বালতিতে পা চুবিয়ে মাঠে নেমেই রেকর্ড
পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটে প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে নেমেছিলেন নেহরা। তখন ভারতীয় দলের অধিনায়ক প্রিয় দাদা অর্থাৎ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ২ জনের সম্পর্ক আজও ভীষণ মধুর। সৌরভ বারবার নেহরার প্রশংসা করেছেন পরবর্তী সময়ও। ইংল্য়ান্ডের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ২৩ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন নেহরা। কিন্তু এই অবিশ্বাস্য রেকর্ডের নেপথ্যে রয়েছে এই যন্ত্রণার কাহিনি। সেই ম্যাচের আগে গোড়ালিতে চোট পেয়েছিলেন নেহরা। মাঠে নামতে আদৌ পারবেন কি না তা নিশ্চিত ছিলেন না তিনি। ফুলে গিয়েছিল পা। জানা যায়, ম্যাচের আগের দিন জল ভর্তি বালতিতে পা চুবিয়ে রেখেছিলেন নেহরা। পরের দিন ম্যাচ। এই সময়ই কঠিন সিদ্ধান্তটি নিয়েছিলেন তৎকালীন ভারত অধিনায়ক সৌরভ। প্রিয় পাত্রকে একপ্রকার জোর করেই মাঠে নামতে বাধ্য করেছিলেন তিনি। আর বাকিটা ইতিহাস। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে ১০ ওভার বল করে মাত্র ২৩ রান দিয়ে ৬ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন দিল্লির এই বাঁহাতি পেসার। ডারবানে সেই ম্যাচ দেখতে উপস্থিত হওয়া ভারতীয় দর্শকরা তখন আনন্দে আত্মহারা। সেই ম্যাচে নেহরার শিকার ছিলেন মাইকেল ভন, নাসের হুসেন, অ্যালেক স্টুয়ার্ট, পল কলিংউড, ক্রেইগ ওয়াইট ও রনি ইরানি। নেহরার সেই স্পেলের ওপর ভর করেই ৮২ রানে ম্যাচ জিতে যায় ভারত।
প্রথমে ব্য়াট করে ২৫০ রান বোর্ডে তুলেছিল ভারতীয় দল
টস জিতে প্রথমে ব্য়াটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। সচিন তেন্ডুলকরের অর্ধশতরান হাঁকিয়েছিলেন। সহবাগ, সৌরভ বড় রান না পেলও মিডল অর্ডারে ৬২ রানের ইনিংস খেলেন রাহুল দ্রাবিড়। ৪২ রান করে যুবরাজ সিংহ। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে বোর্ডে ২৫০ রান তুলে নেয় ভারতীয় দল। জবাবে রান তাড়া করতে নেমে ৪৫.৩ ওভারে ১৬৮ রানেই গুটিয়ে যায় ইংল্য়ান্ডের ইনিংস। সেই ম্যাচে শুধু জয়ই নয়। শক্তিশালী ইংল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপে নিজেদের উপস্থিতির জানান দিয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। সৌরভের নেতৃত্বে ফাইনালেও উঠেছিল সেবার ভারত। যদিও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হেরে ট্রফি জয়ের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল সেবার ভারতের।
আরও পড়ুন: সোশাল মিডিয়ায় নীরজ আজ ফের একবার 'ন্যাশনাল হিরো'