Rinku Singh: ৫ ছক্কায় গলি থেকে রাজপথে! হতাশার মরসুমে কেকেআরের প্রাপ্তি রিঙ্কু
IPL 2023: মরসুম শুরুর আগে তাঁর নামই হয়তো অনেকের কাছে অপরিচিত ছিল। কিন্তু কলকাতা নাইট রাইডার্সের সেরা ব্যাটার হয়ে আইপিএল শেষ করলেন রিঙ্কু সিংহ।
কলকাতা: বাবা বাড়ি বাড়ি রান্নার এলপিজি সিলিন্ডার পৌঁছে দেন। অভাবের সংসারে ক্রিকেট খেলার কথা ভাবাটাই বাহুল্য। সেখানে ক্রিকেটকে পেশা করার কথা ভেবেছিলেন রিঙ্কু সিংহ (Rinku Singh)। এক সময় কাজের খোঁজ শুরু করেছিলেন। তাঁকে পরিচারকের কাজ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। রিঙ্কু বেছে নিয়েছিলেন ক্রিকেটের বাইশ গজকে। এবারের আইপিএল যেন প্রতিষ্ঠা দিয়ে গেল উত্তর প্রদেশের ক্রিকেটারকে।
মরসুম শুরুর আগে তাঁর নামই হয়তো অনেকের কাছে অপরিচিত ছিল। কিন্তু কলকাতা নাইট রাইডার্সের সেরা ব্যাটার হয়ে আইপিএল শেষ করলেন রিঙ্কু সিংহ। পরপর দুবার গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিল কেকেআর। তবে ব্যর্থতার মরসুমে নাইটদের সেরা প্রাপ্তি হয়ে রইলেন রিঙ্কু সিংহ। কেকেআরের জার্সিতে ১৪ ম্যাচে ৪৭৪ রান করেছেন রিঙ্কু।
চারটি হাফসেঞ্চুরি রয়েছে উত্তর প্রদেশের বাঁহাতি ব্যাটারের। অরেঞ্জ ক্যাপের দৌড়ে ৯ নম্বরে শেষ করলেন রিঙ্কু। ইডেনে নাইটদের শেষ ম্যাচেও লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে অভাবনীয় ইনিংস খেলেন। প্লে অফের দৌড়ে থাকার জন্য যে ম্যাচে কেকেআরের প্রাথমিক শর্তই ছিল, লখনউকে বিরাট ব্যবধানে হারাতে হবে। কিন্তু জেতা তো দূর অস্ত, লখনউয়ের কাছে ১ রানে হেরে যান নাইটরা। ১৪ ম্যাচে ১২ পয়েন্টেই থেমে যায় কেকেআরের দৌড়। পরপর দু'বছর গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হল শাহরুখ খান-জুহি চাওলার দলকে।
ব্যর্থ হতে বসেছিল লখনউয়ের প্লে অফ স্বপ্নও। প্রথমে ব্যাট করে ১৭৬/৮ তুলেছিল লখনউ। কেকেআরের লক্ষ্য ছিল ২০ ওভারে ১৭৭ রানের। তবে রান রেটে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরকে ছাপিয়ে যেতে গেলে ৪৭ বলে সেই রান তুলতে হতো নাইটদের। কেকেআর শুরুটা করেছিল আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে। ওপেন করতে নেমে ২৮ বলে ৪৫ রান করে যান জেসন রয়। সঙ্গী ওপেনার বেঙ্কটেশ আইয়ার ১৫ বলে ২৪ রান করেন। তারপরেও মাঝপর্বে খেই হারায় কেকেআর। একটা সময় ২৫ বল কোনও বাউন্ডারি মারেনি কেকেআর।
সেখান থেকে প্রত্যাঘাত রিঙ্কু সিংহের। কেকেআরের ব্যর্থতার মাঝে স্বপ্নের মরসুম কাটল উত্তর প্রদেশের ক্রিকেটারের। চলতি মরসুমে দল যখনই বিপদে পড়েছে, রক্ষাকর্তা হয়ে আবির্ভূত হয়েছেন রিঙ্কু। শনিবারও ৫ নম্বরে নেমে ৩৩ বলে অপরাজিত ৬৭ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে গেলেন।
আমদাবাদে গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে কেকেআরকে জিতিয়েছিলেন রিঙ্কু। শেষ ওভারে প্রয়োজন ২৯ রান, এরকম পরিস্থিতিতে যশ দয়ালের শেষ ওভারের ৫ বলে ৫ ছক্কা মেরে নায়ক বনে গিয়েছিলেন রিঙ্কু। যিনি নিজেও বলছেন যে, সেই ম্যাচে ৫ ছক্কাই তাঁকে নায়ক বানিয়ে দিয়েছিল।
লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে আর এক যশ, যশ ঠাকুরের কার্যত একই পরিণতি হচ্ছিল। শেষ ওভারে ২১ রান চাই, এই পরিস্থিতিতে ২০ তুললেন রিঙ্কু। মারলেন দুটি ছয় ও একটি বাউন্ডারি। লক্ষ্যের চেয়ে মাত্র এক রান দূরে থামতে হয় নাইটদের। তবে এবারের আইপিএলে কেকেআরের সেরা প্রাপ্তি হয়ে রইলেন বাঁহাতি রিঙ্কু। জাতীয় দলে তাঁর অন্তর্ভুক্তির দাবিও তুলছে বিভিন্ন মহল।