WTC final 2021: টেস্ট ফাইনালের পর কোহলিদের বায়ো বাবল থেকে বেরিয়ে ছুটি কাটানোর অনুমতি?
সাময়িক এই ছুটিতে ইংল্যান্ডের বাইরে যেতে পারবেন না ক্রিকেটাররা। করোনা পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে বিদেশি উড়ানে নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। তাই কোহলিরা ইংল্যান্ডের মধ্যেই পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাতে পারবেন।
লন্ডন: সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মাটিতে আইপিএল। তারপর অস্ট্রেলিয়া সফর। ফিরে এসে দেশের মাটিতে ইংল্যান্ড সিরিজ। তারপর ফের আইপিএল। করোনার ধাক্কায় যা মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়। এবার ফের সদলবলে বিরাট কোহলিরা বেরিয়ে পড়েছেন ইংল্যান্ড সফরে। নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের পর জো রুটের ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজও খেলবেন তাঁরা।
দীর্ঘদিন জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে থাকতে হবে কোহলিদের। করোনাকালে জৈব সুরক্ষা বলয়ে থাকাটা যে কতটা কঠিন, বিভিন্ন দেশ-বিদেশের ক্রিকেটার তা বলছেন। আইপিএলের সময় তো মানসিক অস্থিরতার কারণে কয়েকজন টুর্নামেন্টে স্থগিত হওয়ার আগেই সরে দাঁড়িয়েছিলেন।
এবার বিরাট কোহলিদের জন্য জৈব সুরক্ষা বলয়ে সাময়িক ছাড় দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের পরই সম্ভবত বায়ো বাবলের বদ্ধ পরিবেশ থেকে মুক্তি দেওয়া হবে কোহলিদের। কিছুদিনের জন্য স্বাভাবিক জীবনযাপন করে ফের তাঁরা প্রবেশ করবেন বায়ো বাবলে। তারপর জো রুটদের বিরুদ্ধে সিরিজ খেলবেন কোহলিরা। তবে জৈব সুরক্ষা বলয় থেকে সাময়িক বিরতি নিঃসন্দেহে মানসিক ক্লান্তি দূর করবে টিম ইন্ডিয়ার তারকা ক্রিকেটারদের। শোনা যাচ্ছে, বিরাট কোহলিদের জন্য সেরকমই সাময়িক বিরতির বন্দোবস্ত করা হতে চলেছে ইংল্যান্ডে।
ইংল্যান্ডে উড়ে যাওয়ার আগে ভারতীয় দলের ক্রিকেটারেরা সকলে মুম্বইয়ে জড়ো হয়েছিলেন। সেখানেই জৈব সুরক্ষা বলয়ে প্রবেশ করেছিলেন সকলে। একাধিকবার করোনা পরীক্ষা করা হয়েছিল তাঁদের। ইংল্যান্ডে পৌঁছনোর পর সাউদাম্পটনে বায়ো বাবলে ঢুকে পড়ে টিম ইন্ডিয়া। ইংল্যান্ড সফর শেষ করে পুনরায় আমিরশাহিতে আইপিএলের বায়ো বাবলে থাকতে হবে ক্রিকেটারদের। তাই খেলোয়াড়দের মানসিক স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখেই বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের পর জৈব সুরক্ষা বলয়ের কড়াকড়ি থেকে সাময়িক মুক্তি দেওয়া হতে পারে কোহলিদের। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের একটি সূত্র থেকে এরকম খবর জানা গিয়েছে।
কেন উইলিয়ামসনের নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল শেষ হবে ২২ জুন। রিজার্ভ ডে হিসেবে নির্ধারিত রয়েছে ২৩ জুন। এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে ২৪ জুন থেকে আর বায়ো বাবলে আটকে রাখা হবে না ভারতীয় ক্রিকেটারদের। যেহেতু ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজের আগে প্রায় দেড় মাস সময় হাতে থাকছে, তাই ছুটি কাটিয়ে ১৪ জুলাই পুনরায় বায়ো বাবলে একজোট হবেন ভারতীয় তারকারা। উল্লেখ্য, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে শুরু হবে ৪ অগাস্ট। নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের পর ভারতীয় দল ২০ দিনের জন্য বায়ো বাবল থেকে মুক্তি পাবে বলেই সূত্রের খবর। সেই সময়ে পরিবারের সঙ্গে ইংল্যান্ডের মধ্যেই যে কোনও জায়গায় ঘুরে বেড়াতে পারবেন ক্রিকেটাররা। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে এমন খবর জানিয়েছেন বিষয়টি নিয়ে অবগত ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের এক সূত্র।
আরও জানা গিয়েছে যে, সাময়িক এই ছুটিতে ইংল্যান্ডের বাইরে যেতে পারবেন না ক্রিকেটাররা। করোনা পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে বিদেশি উড়ানে নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। তাই কোহলিরা ইংল্যান্ডের মধ্যেই পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাতে পারবেন। সেক্ষেত্রে পুনরায় নির্দিষ্ট দিনে সমস্ত সতর্কতামূলক রীতি মেনে বায়ো বাবলে ঢুকতে হবে ক্রিকেটারদের।
ইংল্যান্ড সফরে রওনা হওয়ার আগেই বিরাট কোহলি ক্রিকেটারদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে নিজের মত প্রকাশ করেছিলেন। ভারত অধিনায়ক জানিয়েছিলেন যে, করোনা আবহে টানা জৈব সুরক্ষা বলয়ে থেকে ক্রিকেট খেলাটা দমবন্ধকর। সেই হোটেল থেকে মাঠ এবং মাঠ থেকে হোটেল। বায়ো বাবলের আবদ্ধ জীবন থেকে মুক্তির প্রয়োজনের কথাও তিনি বলেছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, জৈব সুরক্ষা বলয়ের বাইরে বেরতে পারলে ক্রিকেটাররা মানসিকভাবে চাঙ্গা ও চনমনে থাকতে পারবেন। অবশেষে তেমনটাই হতে চলেছে। ভারতীয় দলের জন্য ২০ দিনের একটা বিরতির ব্যবস্থা করতে চলেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। আসন্ন বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের পর কোহলি আর তাঁর দলকে তিন সপ্তাহের জন্য বায়ো বাবল থেকে মুক্তি দেওয়া হবে।
তবে যেহেতু করোনা পুরোপুরি চলে যায়নি, সেহেতু বিরাটরা একদম মুক্ত হয়ে ইংল্যান্ডে ঘুরতে পারবেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ভারতীয় দলের সঙ্গে যুক্ত একজন বলছেন, "দলের সকলের স্যুইচ অফ করে একটু রিল্যাক্স করারও প্রয়োজন আছে। আমরা কখনওই এটা এড়িয়ে যেতে পারি না যে, করোনা পুরোপুরি চলে যায়নি। তাই দলের জন্য পরিকল্পনটা সেভাবেই করা হবে যাতে সকলে পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাতে গিয়ে কোথাও যেন আটকে না পরে। অন্য কোনও দেশে গিয়ে আচমকা করোনা সংক্রমণের জন্য বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়ে গেলে সমস্যায় পড়তে হবে। তার চেয়ে ব্রিটেনের মধ্যেই দলের সকলের ঘুরে বেড়ানোর ছাড়পত্র দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।"