(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
Wimbledon Exclusive: লন্ডনে ফোন করে বাঙালি ভক্তকে খেলা দেখার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন সানিয়ার মা
Wimbledon 2022: ২০১০, ২০১১, ২০১৫ বহুবার উইম্বলডনে খেলা দেখতে গিয়েছেন প্রসেনজিৎ। এবার ভিসা সমস্যায় যেতে পারেননি। তাই আফশোস যাচ্ছে না টেনিসের বাঙালি সুপারফ্যানের।
কলকাতা: জুনের ২৫ তারিখ ভারতের সমস্ত ক্রিকেটপ্রেমীর কাছে বিশেষ এক দিন। ১৯৮৩ সালে সেদিনই গোটা বিশ্বকে হতবাক করে দিয়ে কার্যত অপ্রতিরোধ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে প্রথমবার ক্রিকেট বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত। কপিল দেবের (Kapil Dev) দলকে নিয়ে উৎসবে মেতে উঠেছিল গোটা দেশ।
প্রসেনজিৎ কুমার বসুর (Prasenjit Kumar Basu) কাছে দিনটি আরও স্পেশ্যাল কারণ, সেদিনই তাঁর মায়ের জন্মদিন। কিন্তু সেই ২৫ জুন যে আরও এক চিরস্মরণীয় অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে, হয়তো ভাবতেই পারেননি বাঙালি টেনিস ভক্ত।
শুরু হয়েছে উইম্বলডন (Wimbledon)। টেনিসের সবচেয়ে ঐতিহ্যশালী গ্র্যান্ড স্ল্যামকে ঘিরে উন্মাদনা সমর্থকদের মধ্যেও। তারই মাঝে এবিপি লাইভের সঙ্গে আড্ডা দিলেন প্রসেনজিৎ। যিনি বহুবার উইম্বলডনে গিয়ে খেলা দেখেছেন। নিজের সেই অভিজ্ঞতার কাহিনি শোনালেন প্রসেনজিৎ।
'২৫ জুন, ২০০৫ সালে প্রথম গিয়েছিলাম উইম্বলডনে খেলা দেখতে। দিনটি মনে আছে, কারণ সেদিন আমার মায়ের জন্মদিন। ১৯৮৩ সালের ২৫ জুন ভারত বিশ্বকাপ জিতেছিল। তার ঠিক ২২ বছর পর আমি প্রথমবার উইম্বলডনে খেলা দেখি। যদিও খেলা দেখতে যাওয়া কিছুটা অভাবনীয়ভাবেই। মেয়ে মেঘনার সঙ্গে আমস্টারডামে ছুটি কাটাচ্ছিলাম। সানিয়া মির্জা (Sania Mirza) দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচ খেলছিল শ্বেতলোনা কুজনেৎসোভার বিরুদ্ধে। আমস্টারডামে হোটেলে বসে টিভিতে ম্যাচ দেখছিলাম। হঠাৎ ঠিক করি, খেলা দেখব। যেমন ভাবা, তেমন কাজ,' বলছিলেন প্রসেনজিৎ। যোগ করলেন, '৩ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম উইম্বলডন দেখব বলে। সানিয়া মির্জা মিক্সড ডাবলস খেলছিল। সেই ম্যাচে গ্যালারিতে গিয়ে দেখলাম, সবাই শান্ত হয়ে বসে খেলা দেখছে। কোনও প্লেয়ার পয়েন্ট জিতলে ধীরে হাততালি দিচ্ছে। আমার মনে হল, এ আবার কী! খেলার মাঠে এত সংযত সেলিব্রেশন কেন! তারপরই চিৎকার করে উঠি, কাম অন সাইনা। গোটা গ্যালারি আমার দিকে তাকায়। সকলেই বেশ হতবাক যেন। অল ইংল্যান্ড ক্লাবে বেশ বিরল এরকম চিৎকার। কিছুক্ষণ পরে অবশ্য সকলে মিলে আমার সঙ্গে সানিয়ার সমর্থনে গলা ফাটাতে শুরু করে।'
এবার ভিসা সমস্যায় উইম্বলডন দেখতে যেতে পারেননি। কর্মসূত্রে এখন রয়েছেন দিল্লিতে। সেখান থেকে মোবাইল ফোনে বলছিলেন, 'আরও একটা ঘটনার কথা মনে পড়ছে, যা অবিস্মরণীয় হয়ে রয়েছে। রবিবার লন্ডনে রাহুল জেকব নামের এক বন্ধুর বাড়িতে লাঞ্চ করছিলাম। জেকবও আমার মতো টেনিসের ভক্ত। হঠাৎ একটা ফোন এল। হায়দরাবাদের নম্বর। ধরতেই ফোনের অপর প্রান্তের কণ্ঠস্বর বলল, আমি নাসিমা, সানিয়া মির্জার মা বলছি। শুনে বেশ চমকে উঠেছিলাম।'
কী কথোপকথন হয়েছিল সেই ফোনে? প্রসেনজিৎ বলছেন, 'নাসিমা বলেন, কাল উইম্বলডনে সানিয়ার ম্যাচ দেখতে আসতে চাও? তুমি মেয়েকে নিয়ে এসো। আমি তৎক্ষনাৎ রাজি হয়ে যাই। ২৭ জুন সানিয়ার অতিথি হয়ে উইম্বলডনে খেলা দেখলাম। সে এক দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা। ১৮ বছর বয়স তখন সানিয়ার। কী খেলাটাই না খেলেছিল! জানত কীভাবে জিততে হয়। প্রত্যেক খেলোয়াড়ের একটা অস্ত্র থাকে। সানিয়ার অস্ত্র হল ওর ফোরহ্যান্ড।'
২০০৯ সালে সেন্টার কোর্টে রজার ফেডেরারের প্রথম রাউন্ডের ম্যাচ, সেরিনা উইলিয়ামস, নোভাক জকোভিচের ম্যাচ দেখেছেন প্রসেনজিৎ। প্লেয়ার্স লাউঞ্জে অ্যান্ডি রডিকের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়েছিল। উইম্বলডন প্রসেনজিতের কাছে এক অন্য আবেগের জায়গা। এবছর আবার সেন্টার কোর্টের একশো বছর। প্রসেনজিৎ বলছেন, 'উইম্বলডন বিশ্বের সেরা টেনিস টুর্নামেন্ট। প্রাচীনতমও। সেন্টার কোর্টের একশো বছর বিরাট মুহূর্ত। ছাদ ঢাকা হল যেবার প্রথম বছর, সেদিনই সেন্টার কোর্টে ছিলাম। সেই অভিজ্ঞতা মনে পড়ে যাচ্ছে। ২০২০ সালে করোনার কারণে খেলা হয়নি। দারুণ আফশোসের জায়গা ছিল। উইম্বলডনে ভরা স্ট্যান্ড দেখতে দারুণ লাগে।'
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে প্রসেনজিৎ বলছেন, 'ফেডেরার-নাদাল ভীষণ আন্তরিক। মাটির মানুষ। খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতা দেখার মতো।' উইম্বলডনের সেরা স্মৃতি? প্রসেনজিৎ বলছেন, 'সেন্টার কোর্টে ফেডেরারের খেলা দেখা। ২০০৮ সালে ফেডেরার-নাদাল ফাইনাল। স্থানীয় সময় রাত পৌনে দশটায় শেষ হয়েছিল। এছাড়া জন ইসনার-নিকোলাস মাহুতের সেকেন্ড রাউন্ডে দুর্দান্ত লড়াই। অনেক স্মৃতি রয়েছে।'
২০১০, ২০১১, ২০১৫ বহুবার উইম্বলডনে খেলা দেখতে গিয়েছেন প্রসেনজিৎ। এবার ভিসা সমস্যায় যেতে পারেননি। তাই আফশোস যাচ্ছে না টেনিসের বাঙালি সুপারফ্যানের।
উইম্বলডন দেখা যাবে স্টার স্পোর্টস চ্যানেলে ও ডিজনি প্লাস হটস্টার অ্যাপে
আরও পড়ুন: করোনামুক্ত নন রোহিত, নতুন অধিনায়ক ও সহ-অধিনায়কের নাম ঘোষণা করে দিল টিম ইন্ডিয়া