Muslim Vendor Assaulted in Bihar: মুসলিম জেনে মারধর, গরম রডের ছ্যাঁকা, কান কেটে দেওয়ার অভিযোগ, বিহারে বেঘোরে মৃত্যু ফেরিওয়ালার, গ্রেফতার ২ নাবালক-সহ ৬
Bihar Mob Lynching: বিহারের নওয়াদা জেলা থেকে এই ঘটনা সামনে এসেছে।

পটনা: নাম-পরিচয় জেনে মুসলিম কাপড় বিক্রেতার উপর চড়াও। বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁকে, গরম রডের ছ্যাঁকা দেওয়া হয় গায়ে, কেটে দেওয়া হয় কান দু’টিও। সেই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বেঘোরে মারা গেলেন ওই ব্যক্তি। (Bihar Mob Lynching)
বিহারের নওয়াদা জেলা থেকে এই ঘটনা সামনে এসেছে। মৃত ব্যক্তির নাম মহম্মদ আতহার হুসেন। বয়স হয়েছিল ৫০ বছর। পেশায় কাপড় বিক্রেতা আতহার। সাইকেলে চেপে জামাকাপড় ফেরি করতেন। তিনি গগন দিওয়ান গ্রামের বাসিন্দা। গত ৫ ডিসেম্বর ভট্টাপার গ্রাম হয়ে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। (Muslim Vendor Assaulted in Bihar)
জানা গিয়েছে, বাড়ি ফেরার সময় সাইকেলের চাকা পাংচার হয়ে যায় আতহারের। সাইকেলের চাকা সারানোর জন্যই রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়েন তিনি। সাইকেল সারাইয়ের দোকানের খোঁজ করতে থাকেন। সেই সময় গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ঘিরে ধরে আতহারকে। তাঁর নাম ও পেশা জানতে চায়।
ঘটনার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতেও ছড়িয়ে পড়ে। ওই ভিডিওয় আতহার জানান, ১৫-২০ জন মিলে ঘিরে ধরে। সাইকেল থেকে টেনে নামিয়ে আনা হয় তাঁকে। ব্যাগে থাকা ১৮ হাজার টাকা প্রথমে কেড়ে নেওয়া হয়। এর পর শুরু হয় মারধর, অত্যাচার। জামা-কাপড় খুলিয়ে পুরুষাঙ্গেও আঘাত করা হয় আতহারকে। এর পর লোহার রড গরম করে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়।
ওই ভিডিও বার্তায় আতহার বলেন, “আমার হাত-পা বেঁধে দেওয়া হয়। একটি ঘরে পুরে শুরু হয় মারধর। পাথর দিয়ে মারে আমাকে, রড দিয়ে পেটায়। আমার হাত, আঙুলও ভেঙে দেয় ওরা। প্লাস দিয়ে আঙুলের ডগার অংশ এবং দুই কানও কেটে দেওয়া হয়। জামাকাপড় খুলে নেওয়া হয় আমার। লোহার রড গরম করে ছ্যাঁকা দেয়। চামড়া উঠে আসে। একজন রড দিয়ে আঘাত করে আমাকে। আর একজন বুকের উপর উঠে দাঁড়ায়। গলা চেপে ধরে, মুখ দিয়ে রক্ত বেরিয়ে আসে আমার। গোটা শরীর থেকে চামড়া উঠে আসছিল।”
Mohammad Athar Hussain (40) from Nalanda died six days after being brutally lynched in Nawada on 5 December, allegedly for being Muslim. In his dying statement, he said attackers identified his religion, tortured him, and beat him severely. His wife filed an FIR against 10 named… pic.twitter.com/x8X5irhyXc
— Iron Man (@theiron_man1996) December 13, 2025
আধমরা অবস্থায় উদ্ধার করে আতহারকে প্রথমে রোহ্-র প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। এর পর নওয়াদা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। শেষ পর্যন্ত পাওয়াপুরি VIMS-এ নিয়ে গেলে শুক্রবার রাতে সেখানেই মারা যান আতহার। আতহারের দেহের ময়নাতদন্ত হয়ে গিয়েছে
এই ঘটনায় ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে দুই নাবালকও রয়েছে বলে খবর। গত ৬ ডিসেম্বর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন আতহারের স্ত্রী শবনম পরভীন। আরও ১০ নিগ্রহকারীকে শনাক্ত করা যায়নি বলে জানা গিয়েছে। শবনম জানিয়েছেন, খবর পেয়ে ছুটে গেলে তাঁদের পরিবারের লোকজনকেও গালিগালাজ করা হয়, হুমকি দেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, রাত ২.৩০টে নাগাদ ১১২-তে ফোন করে গোটা ঘটনা জানান একজন। সেই মতো উদ্ধার করে আনা হয় আতহারকে।
অন্য দিকে, পাল্টা এফআইআর দায়ের করেছেন সিকন্দর যাদব নামের এক অভিযুক্ত। তাঁর দাবি, ওই রাতেই তাঁদের পাড়ায় চুরির ঘটনা ঘটে। আতহারই চুরি করতে ঢোকেন বলে দাবি তাঁর। সিকন্দরের অভিযোগ, সোনার চুড়ি, মঙ্গলসূত্র, রুপোর জিনিস, বাসনও চুরি যায়। তাঁর ভাই সত্যনারায়ণ চোরকে দেখতে পান। এর পর গ্রামবাসীরা ধরে ফেলে জিনিসপত্র উদ্ধার করেন। তবে আতহারের ভাই মহম্মদ সাকিব আলম জানিয়েছেন, নাম-পরিচয় জেনেই হামলা হয় তাঁর দাদার উপর। দু’টি অভিযোগই খতিয়ে দেখছে পুলিশ।






















