ABP Network India @2047 : কেউ ড্রোন উড়িয়ে ছড়াচ্ছেন সার, কেউ সৌরশক্তি ব্যবহার করে তুলছেন জল, প্রযুক্তির সাহায্যে মিরাকল ঘটাচ্ছেন এঁরা
কৃষি থেকে শিল্প, জল উত্তোলন থেকে ব্যাংকিং, সবেতেই বিকাশের ছাপ স্পষ্ট। স্বাধীনতার শতবর্ষে স্বপ্নের দেশ পাওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে দিচ্ছেন এই নারীরাও।

২০৪৭ সালের মধ্যে ‘বিকশিত ভারত’-এর লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে দেশ। সেই স্বপ্ন সফল হবে তখনই, যখন শহর থেকে গ্রাম, শিশু থেকে বৃদ্ধ, পুরুষ, মহিলা নির্বিশেষে সকলেই আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে আগ্রহী হবেন। নতুনকে গ্রহণ করাই অগ্রগতির সোপান। আর এই পথে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মহিলারাও। কৃষি থেকে শিল্প, জল উত্তোলন থেকে ব্যাংকিং, সবেতেই বিকাশের ছাপ স্পষ্ট। স্বাধীনতার শতবর্ষে স্বপ্নের দেশ পাওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে দিচ্ছেন এঁরাই।
কৃষিক্ষেত্রে সার দেওয়ার কাজ আগে করতে হত হাতে করেই। সে কাজ ছিল যথেষ্ট শ্রমসাধ্য, সেই সঙ্গে সময়সাপেক্ষও। কীভাবে এই কাজকে সহজ করা যায়, সেই ভাবনা অনেকদিন ধরেই মাথায় ঘুরছিল সুনীতা শর্মার। হঠাৎ মাথায় খেলে গেল বুদ্ধিটা। এখন ড্রোনের মাধ্যমে তা করে দেখাচ্ছেন তিনি। মঙ্গলবার ABP লাইভ ইন্ডিয়া@২০৪৭ সামিটে (ABP India @ 2047 Summit) নিজের জার্নির কথা ভাগ করে নিলেন তিনি। সুনীতা জানান, ড্রোনের ব্যবহার করে সার প্রয়োগ করা অনেক সহজ ও নিখুঁত হয়েছে। "আগে এক একর জমিতে সার দেওয়ার জন্য পাঁচ থেকে ছয়জন শ্রমিক লাগত। আজকাল একটি ড্রোন মাত্র সাত মিনিটে একই কাজ সম্পন্ন করতে পারে।" প্রথমে ভাবতে পারেননি ড্রোন ওড়াতে পারবেন। পরে যথাযথ প্রশিক্ষণ তাঁকে এখন দক্ষ করে তুলেছে। মাত্র ১৫ দিনের প্রশিক্ষণ কর্মসূচীতে অংশ নিয়েই তিনি দক্ষ হয়ে উঠেছেন। তার পুরো ক্রেডিটটাই দিচ্ছেন 'নমো ড্রোন স্কিম'। এই প্রকল্পের মাধ্যমেই তিনি বিনামূল্যে নিজের ড্রোন পেয়েছেন।
"টেক ফর অল: দ্য ডিজিটাল ডেমোক্রেসি"-র মঞ্চে তিনি ছাড়াও বক্তব্য রাখেন জসবিন্দর কৌর, , দেবকী দেবী, বৈশালীবেণ গাদিয়া এবং রমীলাবেন পারমারও যোগ দিয়েছিলেন। একই প্ল্যাটফর্মে এদিন হাজির ছিলেন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের এমন কয়েকজন নারী, যাঁরা প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে জীবন বদলে দিয়েছেন।
এই 'নমো ড্রোন স্কিম' এর সহায়তায় ড্রোন প্রযুক্তি কাজে লাগিয়েছেন জসবিন্দর কৌরও। তিনি জানান, প্রথমদিকে প্রশিক্ষণ কর্মসূচীতে যোগদানের আগে একটু দোনামনা করছিলেন। তবে, ছেলে এবং স্বামীর উৎসাহে, তিনি এই সিদ্ধান্ত নেন। নিজেকে কথা দিয়েছিলেন, প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করবেনই। এখন তিনি ড্রোনের সাহায্যে ১,৫০০ একর জমিতে সফলভাবে সার প্রয়োগ করেন।
সুনীতা দেবী জানান, তিনি সৌরশক্তি ব্যবহার করে জল তোলেন। এই জল তিনি কৃষিকাজের জন্য গ্রামবাসীদের বিক্রি করেন। এই প্রযুক্তি-নির্ভর উদ্যোগটি তাকে কেবল আয়ের সুযোগ করে দিয়েছে তাই নয়, দিয়েছে সামাজিক সম্মানও ।
একইভাবে, দেবকী দেবী জানান, কীভাবে তিনি সৌরচালিত বোরওয়েল স্থাপনের জন্য অর্থের ব্যবস্থা করেছিলেন। তাঁর প্রচেষ্টা সফল হয়েছে। তিনি এখন ভাল আয় করেন। সেই সঙ্গে গ্রামের মানুষের জলের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হয়েছেন।
রমীলাবেন পারমার স্থানীয় কৃষকদের কৃষি যন্ত্রপাতি ভাড়া দিয়ে সাহায্য করেন। অনেক ছোট কৃষক সরাসরি যন্ত্রপাতি কিনতে পারেন না তাদের জন্য সরঞ্জামের ব্যবহারের সুযোগ করে দেন তিনি । তাতে তাদের মোট উৎপাদন খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কম হয়। এর ফলে তিনিও ভাল রোজগার করছেন।
আবার বৈশালীবেন গাদিয়াও নিয়েছেন ব্যাংকিং-এর কাজের প্রশিক্ষণ। এর ফলে তিনি পেয়েছেন স্থিতিশীল আয়। জ্ঞান ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে, তিনি এখন সহজেই গ্রামবাসীদের প্রয়োজনীয় ব্যাংকিং সেবায় সহায়তা করে থাকেন।
দেখুন






















