Homeopathy Threat Culture: হোমিওপ্যাথিতেও 'থ্রেট কালচার'! সামনে এল বিস্ফোরক অভিযোগ
Medical College Threat Culture: হোম সেন্টারে পরীক্ষা নেওয়ার পিছনেও বড় দুর্নীতি জড়িয়ে রয়েছে বলে অভিযোগ ।
ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা: কোথাও ফেল করা পড়ুয়াকে অনার্স পাইয়ে দেওয়ার চাপ, কোথাও আবার কলেজে ঢুকলেই মারধরের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ। শুধু এমবিবিএস কলেজেই নয়, হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজেও কি ভাইরাসের মতো ছড়িয়ে পড়েছে থ্রেট কালচার? ওয়েস্ট বেঙ্গল জয়েন্ট হোমিওপ্যাথি ফ্রন্টের তরফে আনা হল একের পর এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। হোম সেন্টারে পরীক্ষা নেওয়ার পিছনেও বড় দুর্নীতি জড়িয়ে রয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হল ফ্রন্টের তরফে।
সরকারি হোমিওপ্য়াথি চিকিৎসক ফয়জুল হক বলছেন, 'আমার কলেজে ডিউটি থাকে। আমাকে বলছে তুমি যদি কালকে সকালে কলেজে আসো, তোমার যদি ক্ষমতা থাকে তুমি এসো। তোমাকে আমি মারব কলেজে আসলে।'
সরকারি জুনিয়র হোমিওপ্য়াথি চিকিৎসক কৌস্তভ রায়ের দাবি, 'বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের একটা থ্রেট কালচার, একটা হুমকির কালচার। সমস্ত মেডিক্যাল কলেজগুলিতে এটা বিদ্যমান। শুধুমাত্র এমবিবিএস কলেজেই নয়।'
আর জি কর মেডিক্য়াল থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্য়াল। মেদিনীপুর মেদিনীপুর কলেজ থেকে কলকাতা মেডিক্য়াল কলেজ। রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালগুলি থেকে উঠছে একের পর এক থ্রেট কালচারের অভিযোগ। আর এই আবহেই, রাজ্যের একাধিক হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজেও উঠল 'থ্রেট কালচার'-এর রমরমার অভিযোগ। west bengal joint homeopathy front-এর তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে আনা হল একের পর এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ।
সরকারি জুনিয়র হোমিওপ্য়াথি চিকিৎসক কৌস্তভ রায়ের অভিযোগ, 'এটা হোমিওপ্যাথি কলেজ, ডেন্টাল কলেজ সমস্ত দিকেই এদেরই বিভিন্ন ছাত্রনেতা তারা। সোশালের নাম করে টাকা চাওয়া থেকে শুরু করে, বিভিন্ন অবস্থায় তাদের মতের বিরোধিতা যে মুহূর্তে করা হয়, সেই মুহূর্তে বিভিন্ন রকমের হুমকি দেওয়া হয়। বিভিন্ন বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করা হয়। মধ্যরাতে ফোন করে বিভিন্ন রকমের থ্রেট কালচার করা হয়েছে।'
সরকারি হোমিওপ্য়াথি চিকিৎসক ফয়জুল হক বলেন, 'এই অরিজিৎ মান্না, ডক্টর অরিজিৎ মান্না সে শুধু আমাকে থ্রেট দেয় এমন নয়, তার ভুরি ভুরি উদাহরণ আছে যে তিনি আমাদের কলেজের সমস্ত জুনিয়র ডাক্তার এবং হোমিওপ্যাথি জগতের যত জুনিয়র ডাক্তার আছে, ছাত্র-ছাত্রী, প্রাক্তনী, সবাইকে ফোন করে হুমকি দেওয়াটা তার একটা কালচারে পরিণত হয়ে গেছে। গোটা হোমিওপ্যাথি সিস্টেমে থ্রেট কালচারের মূল পাণ্ডা তিনি হয়ে গেছেন।'
হোম সেন্টারে পরীক্ষা নেওয়ার পিছনেও বড় দুর্নীতি জড়িয়ে রয়েছে বলে উঠছে অভিযোগ। দিনের দিনে খাতা দেখে দেওয়া, ফেল করা পড়ুয়াকে পাশ করিয়ে দেওয়া, এমনকি ফেল করা পড়ুয়াকে অনার্স পাইয়ে দেওয়ার জন্য ক্রমাগত চাপ আসছে বলে অভিযোগ করেছেন হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজের আর এক চিকিৎসক মনসুর হাবিবুরউল্লা গাজি। তাঁর অভিযোগ, 'বছর পাঁচেক আগে হঠাৎ একটা মিটিংয়ে বলা হল এবারে হোম সেন্টারে পরীক্ষা হবে। তারমানে কী, যে ছাত্র যে কলেজের সেই কলেজে পরীক্ষা হবে। তারমানে গণ টোকাটুকি সেখানে যাচ্ছে। যা খুশি করা যাবে। যারা দাদা, এই দাদাগুলো গিয়ে সেখানে সেটা কন্ট্রোল করবে।'
এমনকি, ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডে নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে west bengal joint homeopathay front-এর তরফে। ডিএন দে হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অখিলেশ খাঁর অভিযোগ, 'হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডে আপনারা দেখবেন, ডিরেক্টর অফ হোমিওপ্যাথি যে অ্যাপেক্স পোস্ট, সেই ডিরেক্টর অফ হোমিওপ্যাথিতে একটা বিরাট কেলেঙ্কারি হয়েছিল। ইন্টারভিউ বোর্ডে...একজন ডিরেক্টর পোস্টের ইন্টারভিউ...সেখানে কী করে একজন রিটায়ার্ড প্রিন্সিপ্যাল থাকে? আমাদেরই কলিগ ডক্টর শ্যামল মুখার্জি ওখানে ছিলেন।'
হোমিওপ্য়াথি মেডিক্যাল কাউন্সিলের সহ সভাপতি শ্য়ামলকুমার মুখোপাধ্য়ায় বলেন, 'যত কথা এখানে বলা হয়েছে। প্রত্যেকটা ভুয়ো, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আরজি কর ঘটনাকে কেন্দ্র করে এরা ঘোলা জলে মাছ ধরতে চাইছে। উত্তরবঙ্গ লবি বলে কোনও লবি নেই। যদি লবি কিছু থেকে থাকে তা হল হোমিওপ্যাথিক লবি।'
থ্রেট কালচারের এই প্রবণতা কত গভীরে ঢুকে রয়েছে? এই লবির মাথায় কারা? কীভাবে থ্রেট কালচারের বিনাশ সম্ভব? এটাই বড় প্রশ্ন।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও পড়ুন: কলকাতায় জরুরি অবতরণ চিনগামী বিমানের! তবুও মৃত্যু অসুস্থ কিশোরীর