Kolkata: ডোমের পরীক্ষায় পাস ৩৭ জন, প্রথম স্থানাধিকারী হাসপাতালেরই অস্থায়ী ডোম
Kolkata: NRS-এ ডোমের পরীক্ষায় পাস করলেন মাত্র ৩৭ জন। লিখিত পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন যিনি, তিনি হাসপাতালেরই একজন অস্থায়ী ডোম।
সন্দীপ সরকার, কলকাতা: কিছুদিন আগেই জানা যায়, NRS মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডোমের চাকরি পেতে আবেদন করেছেন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রিধারীরাও। গত জুলাই মাসে এই খবর সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে যায় রাজ্যজুড়ে। কিন্তু, সেই ডোমের চাকরির লিখিত পরীক্ষায় ৫০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছেন মাত্র ১৩ শতাংশ চাকরিপ্রার্থী।
NRS মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে খবর, ডোমের চাকরির লিখিত পরীক্ষায় মূলত ময়নাতদন্ত সংক্রান্ত প্রশ্ন রাখা হয়েছিল। যার মধ্যে কয়েকটি ছিল এইরক, ময়নাতদন্তে কোন কোন অঙ্গ পরীক্ষা করা হয়? ছবি দেখে লিখতে হয় কোনটা কোন অঙ্গ, কোন অঙ্গের কী কাজ। ভিসেরা-তে কী কী নমুনা সংগ্রহ করতে হয়? প্রশ্ন প্রতি ১ নম্বর করে এরকম ৩৫টি প্রশ্ন করা হয়েছিল। সেখানেই মোট ২৮৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে, ন্যূনতম ১৭ নম্বরের প্রশ্নের উত্তর দিতে পেরেছেন মাত্র ৩৭ জন। এই ৩৭ জন পরীক্ষার্থীকে ৩১ অগাস্ট প্রাকটিক্যাল পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়েছে। বাছাই করা ৩৭ জনের মধ্যে এক নম্বরে যাঁর নাম রয়েছে, সেই রাজ মল্লিক ইতিমধ্যেই NRS মেডিক্যাল কলেজে অস্থায়ী ডোম পদে চাকরি করেন। ৩৫ নম্বরের মধ্যে ৩৪ নম্বর পেয়েছেন তিনি। দেখা গেছে মেধাতালিকার প্রথম পাঁচজনই ডোম সম্প্রদায়ের।
এখানে প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি কোনওভাবে অভিজ্ঞতাকেই বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে? যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, যোগ্যতা দেখে নয়, নম্বরের বিচারেই মেধাতালিকা তৈরি হয়েছে।
গত জুলাই মাসে এনআরএসে ডোম নিয়োগের(অস্থায়ী) বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। মাত্র ৬টি পদের জন্য আবেদন জমা পড়ে প্রায় ৮ হাজার। আবেদনকারীদের মধ্যে ২ হাজারেরও বেশি স্নাতক। ছিলেন ৫০০-র কাছাকাছি স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী। এছাড়াও ডোম হতে চেয়ে আবেদন করেন ১০০ ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রিধারী। ৭৮৪ জনকে ইন্টারভিউতে ডাকা হয়। তাঁদের মধ্যে ৮৪ জন মহিলা ছিলেন।
কোভিডের দাপট গত দেড়-দুই বছর ধরে বহু সংখ্যক মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন। অনেকে করোনা সন্দেহে ভর্তি থেকেছেন। কোভিড রিপোর্ট আসার আগে মৃত্যু হয়েছে। ফলে, শ্মশানঘাটে মৃতদেহের লম্বা লাইন দেখা গেছে। মৃতদেহ ওয়ার্ড থেকে বের করে শববাহী গাড়িতে পৌঁছে দেওয়া, সেখান থেকে শ্মশান পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া, এইসব কাজের জন্য রয়েছেন ডোমরা। কিন্তু, এই ডোমদের সংখ্যার একটা ঘাটতি দেখা যায় বছর দেড়েক ধরেই। এর পর রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, হাসপাতালে হাসপাতালে ডোমের সংখ্যা বাড়ানো হবে। যাঁরা বিভিন্ন হাসপাতালে চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করতে চান, সেখানে চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ হয়েছে। কোথাও হাসপাতালগুলি সরাসরি নিয়োগ করেছে। কোন হাসপাতাল কতজন ডোম নিতে পারবে তার নির্দেশ দিয়ে দিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। গত কয়েক মাস ধরে সরকারি হাসপাতালগুলিতে ডোম নিয়োগ অনেকটা বেড়েছে। উত্তরবঙ্গ থেকে শুরু করে দক্ষিণবঙ্গ সর্বত্র ডোম নিয়োগ করা হয়েছে।