Bangladesh News: হুমকি-হুঁশিয়ারিই সার, ভারতীয় পণ্যের প্রতি ভালবাসা অটুট বাংলাদেশিদের, নিউ মার্কেট চত্বরে চলছে কেনাকাটা
Kolkata News: কয়েকদিন ধরেই ভারতের বিরুদ্ধে হুমকি-হুঁশিয়ারি দিয়ে চলেছে বাংলাদেশ, যার শুরুটা করেছেন BNP-র শীর্ষনেতা রুহুল কবীর রিজভি।
পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা: ভারতীয় শাড়ি পুড়িয়ে ভারতের পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছিলেন BNP-র শীর্ষ নেতা রুহুল কবীর রিজভি। কিন্তু, তাঁর কথা কানে তুলছেন না তাঁর নিজের দেশের নাগরিকরাই। সোমবারও নিউ মার্কেটে দেখা গেল, চুটিয়ে ভারতের জিনিস কিনছেন বাংলাদেশ থেকে আসা লোকজন। রিজভির মন্তব্য় প্রসঙ্গে তাঁদের সাফ কথা, "ওঁরা কেনাকাটা করতে তাইল্য়ান্ড, সিঙ্গাপুরে যান, আমরা আসব ভারতেই।" (Bangladesh News)
কয়েকদিন ধরেই ভারতের বিরুদ্ধে হুমকি-হুঁশিয়ারি দিয়ে চলেছে বাংলাদেশ, যার শুরুটা করেছেন BNP-র শীর্ষনেতা রুহুল কবীর রিজভি। কিন্তু ভারত তো দূরের কথা, BNP নেতার কথায় সামান্য় গুরুত্ব দিচ্ছেন না, তাঁরই দেশ বাংলাদেশের নাগরিকরা। সম্প্রতি স্ত্রীর ভারতীয় শাড়ি পুড়িয়ে, ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছিলেন খালেদা জিয়ার দল BNP-র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল। তাঁকে বলতে শোনা যায়, "এই হল ভারতের শাড়ি। স্ত্রী দিল। সে নিজেই এই শাড়ি দিয়েছে। এই যে আপনাদের সামনে ছুড়ে ফেললাম।" (Kolkata News)
কিন্তু, রুহুলের কথা কানেই তুলছেন না বাংলাদেশের নাগরিকরা। সোমবার কলকাতার নিউ মার্কেটেই দেখা গেল, চুটিয়ে ভারতীয় পোশাক কিনছেন বাংলাদেশের নাগরিকরা। কলকাতায় আসা বাংলাদেশি নাগরিক আব্দুল রহমান বলেন, "ভারতের জিনিস ব্যবহার করে আরাম পাই। এই কারণে আমরা ভারতে আসি। ওঁরা তো কেনাকাটা করতে তাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর যান. আমরা তো আর তাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর যাব না, পাশের দেশ ভারতে আসব।"
বাংলাদেশের যশোরের বাসিন্দা শাকিলা খাতুন ভারতে চিকিৎসা করাতে এসেছেন। দক্ষিণ ভারতের ভেলোর থেকে কলকাতায় এসে কেনাকাটা শুরু করেন। জানালেন, শীতের পোশাক কিনছেন তিনি। রুহুলের কথা তুলে ধরলে বলেন, "এসব বলা উচিত নয়। ভারত আমাদের বন্ধুর মতো দেশ।" একই ভাবে রাজশাহির বাসিন্দা লুৎফর রহমান এদেশে এসেছিলেন চিকিৎসা করাতে। নিউ মার্কেট থেকে ব্য়াগ ভরে ভারতীয় জিনিস কেনাকাটা করতে করতেই, BNP-র সিনিয়র যুগ্মমহাসচিবের দাবি সটান খারিজ করে দিলেন।
সাংবাদিক: এটা কোন জায়গা জানেন?
লুৎফর: নিউ মার্কেট।
সাংবাদিক: আপনাদের BNP নেতা বলছেন নিউ মার্কেট বন্ধ হয়ে যাবে। বাংলাদেশিরা যাবেন না।
সাংবাদিক, এবিপি আনন্দ: আপনাদের একজন BNP নেতা, তিনি বলছেন নিউ মার্কেট বন্ধ হয়ে যাবে, বাংলাদেশিরা যাবেন না।
লুৎফর: এটা রাজনীতির খেলা। এসব বলে লাভ নেই। আমরা সবসময় আসি।
যশোরের বাসিন্দা মহম্মদ রফিকও স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন, যে যা-ই বলুন, ভারতীয় পণ্য়ের প্রতি তাঁদের ভালবাসা ছিল আছে থাকবে। তাঁর কথায়, "চাদর কিনছি, ওষুধ কিনছি, সোয়েটার কিনছি। উনি কী ভাবে বলেছেন, উনিই জানেন। আমরা তো ডাক্তার দেখাতে আসি। এখান থেকেই টুকটাক কেনাকাটা করি।"
বাংলাদেশের নাগরিকদের কাছে ভারতের পণ্য় কতটা পছন্দের, সেটা বোঝা গেছিল রিজভির ভারতীয় পণ্য় বয়কটের ডাক দেওয়ার দিনই। BNP নেতা, জ্বালিয়ে দেওয়ার জন্য় শাড়ি ছুড়ে ফেলতেই, কার্যত ছোঁ মেরে তা তুলে নেন এক মহিলা। কলকাতায় আসা বাংলাদেশের নাগরিকরাও বুঝিয়ে দিলেন কার্যত যে, রিজভির হুমকির কোনও প্রভাব তাঁদের উপর পড়েনি।
অন্য দিকে, বাংলাদেশের পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে গেল ১০০ টন আতপ চাল। আবার, আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ১৭২ টনের বেশি মাছ বাংলাদেশ থেকে ভারতে ঢুকেছে, যার আনুমানিক মূল্য ৫ কোটি টাকারও বেশি। পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি পণ্যের সিংহভাগই মূলত পাথর। তবে কয়েক বছর পর বন্দরটি দিয়ে চাল আমদানির অনুমতি মিলেছে। এর ধারাবাহিকতায় বন্দরটি দিয়ে চলতি বছর দ্বিতীয় দফায় ১০০ টন আতপ চাল আমদানি করা হয়েছে। রবিবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত চারটি ট্রাকে এসব চাল দেশের বন্দরটিতে পৌঁছায়।