Bankura News: 'হিন্দুরা বাঁধো জোট, '২৬-এ পদ্মফুলে সব ভোট', বাঁকুড়া দেওয়াললিখন BJP-র, কটাক্ষ করল TMC-CPM
BJP in Bankura: বাঁকুড়া ১ নম্বর ব্লকে দেওয়ালে দেওয়ালে হিন্দুবাদী বার্তা ছড়িয়ে দিতে দেখা যাচ্ছে বিজেপি-কে।

বাঁকুড়া: বিধানসভা নির্বাচনে এখনও একবছর বাকি। এখন থেকেই তার আঁচ পাওয়া যাচ্ছে। ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি আরও বেশি করে প্রকট হচ্ছে। আর সেই আবহেই বাঁকুড়ায় বিজেপি-র দেওয়াললিখনে হিন্দুত্বের বার্তা চোখে পড়ল। দেওয়ালে দেওয়ালে হিন্দুত্বের বার্তা লিখতে দেখা গেল গেরুয়া শিবিরকে। তাদের দাবি, ধর্ম নিয়ে তৃণমূলের তোষণ-নীতির প্রতিবাদেই এই প্রচারে নেমেছে তারা। সবমিলিয়ে তপ্ত রাজ্য় রাজনীতি। (Bankura News)
বাঁকুড়া ১ নম্বর ব্লকে দেওয়ালে দেওয়ালে হিন্দুবাদী বার্তা ছড়িয়ে দিতে দেখা যাচ্ছে বিজেপি-কে। সেখান থেকে যে দৃশ্য সামনে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, শিল্পী দেওয়ালে হিন্দুত্বের বার্তা লিখছেন, আর তাঁকে ঘিরে পদ্মপতাকা হাতে দাঁড়িয়ে বিজেপি-র নেতা-কর্মীরা। দেওয়াললিখনে শুধুমাত্র হিন্দুত্বের বার্তাই নয়, সেই নিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণও করা হয়েছে। হিন্দুত্বকে হাতিয়ার করেই কি তাহলে ২০২৬ সালে বৈতরণী পার করতে চায় বিজেপি? উঠছে প্রশ্ন। (BJP in Bankura)
বাঁকুড়া ১ নম্বর ব্লকে ঘুরে ঘুরে দেওয়াললিখন করতে দেখা যায় বিজেপি-কে। কোথাও লেখা হয়, 'হিন্দুদের বাঁচার প্রতীক পদ্মফুল', কোথাও আবার লেখা হয়, 'হিন্দু হিন্দু ভাই ভাই, '২৬-এ বিজেপি সরকার চাই'। 'হিন্দুরা বাঁধো জোট, '২৬-এ পদ্মফুলে সব ভোট' এমন লেখাও চোখে পড়ে দেওয়ালে। তৃণমূলের 'সংখ্যালঘু তোষণ'নীতির প্রতিবাদে এমন দেওয়াললিখন বলে জানিয়েছে জেলা বিজেপি।
বাঁকুড়ায় বিজেপি-র জেলা কমিটির সদস্য বিকাশ ঘোষ বলেন, "পশ্চিমবঙ্গের এই অবস্থা ছিল না। তৃণূল এখানে জাতির ভেদাভেদ শুরু করেছে। তাই ২০২৬ সালের নির্বাচনে হিন্দুরা একজোট হয়ে সব ভোট বিজেপি-কে দেব আমরা। এই বার্তা নিয়েই মানুষের কাছে যাব, হিন্দুদের কাছে যাব, যাতে ২০২৬ সালে তৃণমূলকে এ রাজ্য থেকে সরানো যায় তৃণমূলকে।"
এ নিয়ে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অংশুমান বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেন, "এগুলো পুরোপুরি নাটক। কারণ ২০২১ সালে বাঁকুড়ার মানুষ বিজেপি-কে জয়ী করেছিলেন। এই পাঁচ বছর তাঁদের যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছে। অনুন্নয়ন, মানুষের সঙ্গে যে ব্য়বহার করেছেন বিজেপি-র বিধায়ক, বাঁকুড়ার মানুষ মুখিয়ে আছেন ২০২৬ সালের বিধানসভার নির্বাচনে তৃণমূলকে বিজয়ী করার জন্য। ধর্মীয় বিভাজন, সাম্প্রদায়িকতা, মেরুকরণের রাজনীতি আগেও করেছে বিজেপি।"
এ নিয়ে দুই দলকেই কটাক্ষ করেছেন বাঁকুড়ার সিপিএম নেতা প্রভাতকুসুম রায়। তাঁর বক্তব্য, "উচ্চবর্ণের হিন্দু, নিম্নবর্ণের হিন্দু, হিন্দুদের মধ্যে এত ভাগ যেখানে, সেখানে কোন হিন্দুদের কথা বলছে? আসল কথা হল ভোটব্যাঙ্ক। ভোটব্যাঙ্ক তৈরি ছাড়া দ্বিতীয় পথ নেই। হিন্দু উস্কাও, হিন্দুদের এক করো, মুসলিমদের উস্কাও, মুসলিম ভোট এক করো। দেখতেই পাচ্ছেন, একদিকে শুভেন্দু অধিকারী, অন্য দিকে হুমায়ুন কবীর। রুটি, রুজি, চাকরি, শিক্ষা, সুস্থতার কথা নেই। ভারত ভাগ করা হচ্ছে হিন্দু-মুসলিমের নিরিখে।"
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ২০০ আসন পেরনোর ডাক দিলেও, প্রাপ্ত আসনের নিরিখে দুই সংখ্যা পেরোতে পারেনি বিজেপি। পুরসভা নির্বাচন, পঞ্চায়েত নির্বাচনেও কাঙ্খিত সাফল্য মেলেনি। আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে ফের মরিয়া লড়াইয়ে নামতে চাইছে বিজেপি। আর তা করতে গিয়ে ধর্মীয় মেরুকরণের রাস্তায় হাঁটতে দেখা গিয়েছে তাদের। বিধানসভার বাইরে খোদ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। অমিত শাহের উপস্থিতিতে বিজেপি-র মঞ্চ থেকেও একই বার্তা দিতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তাই পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসতে বিজেপি হিন্দুত্বের তাসই খেলতে চাইছে বলে বিতর্ক শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
