Bankura : ওজন দেড়-তিন কেজি, বিশ্বকর্মা পুজোয় বাঁকুড়ার জাম্বো জিলাপিতে 'মন্দার ছাপ'
রীতি মেনে ভাদু ও বিশ্বকর্মা পুজো উপলক্ষে জাম্বো জিলাপিতে মজল বাঁকুড়া জেলার মানুষ
পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া : রীতি মেনে ভাদু ও বিশ্বকর্মা পুজো উপলক্ষে জাম্বো জিলাপিতে মজল বাঁকুড়া জেলার মানুষ । দশকের পর দশক ধরে ভাদ্র সংক্রান্তিতে বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়ায় এই জাম্বো জিলাপি তৈরি হয়। এক একটি জিলাপির ওজন হয় দেড় থেকে তিন কিলোগ্রাম পর্যন্ত । শুধু বাড়িতে খাওয়া বা পুজোর প্রসাদ হিসাবে নয় অন্যকে সারপ্রাইজ গিফট দেওয়ার জন্যও এই জিলাপি কিনে নিয়ে যান খাদ্যরসিকরা ।
কেঞ্জাকুড়ার জাম্বো জিলাপি কত পুরানো তা কেউ জানেন না । তবে গত কয়েক দশকে ধীরে ধীরে তার সুখ্যাতি কেঞ্জাকুড়ার সীমা ছাড়িয়ে গেছে বাঁকুড়া জেলা তো বটেই, এমনকী পার্শ্ববর্তী পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম বর্ধমান জেলা ও ঝাড়খণ্ড, দিল্লির একাংশে । মূলত ভাদু ও বিশ্বকর্মা পুজো উপলক্ষে কেঞ্জাকুড়ার মিষ্টি প্রস্তুতকারকরা এই জিলাপি তৈরি করেন প্রতি বছর ভাদ্র সংক্রান্তিতে। অন্যান্য সব ধরনের মিষ্টি তৈরি বন্ধ রেখে এলাকার সব দোকানেই শুরু হয়ে যায় জাম্বো জিলাপি তৈরির কাজ । মূলত বিরি ডালের বেসন, ময়দা ও চাল গুঁড়ো দিয়ে তৈরি হয় এই জিলাপি। এর আকার বা ওজনে যেমন ভিন্নতা থাকে, তেমনই জিলিপির প্যাঁচেও ফুটে ওঠে রকমারি নকশা। প্রতি পিস হিসাবে নয়, ওজন দরেই বিক্রি হয় এই বিশালাকার জিলাপিগুলি । চলতি বছরে এই জিলাপির দাম বেশ কিছুটা কম। কিলোগ্রাম প্রতি জিলাপি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা দরে । কিন্তু তাতে কি তেমন কমেছে বিক্রিবাটা ? কেঞ্জাকুড়ার মিষ্টির কারবারিদের দাবি, করোনার থাবায় জিলাপির বাজারে কিছুটা মন্দা এসেছে।
মুক্তা দত্ত নামে এক দোকানদার বলেন, জিলাপির কদর এই বছরে অনেকটাই কম করোনা ভাইরাসের কারণে। অন্যান্য বছর ভালই বিক্রি হত। এই বছর সারাদিনে পঞ্চাশটির মতো বিক্রি হচ্ছে আমাদের। অনেকটাই লস। এই জিলাপি বাইরে যেখানে আত্মীয়-স্বজন আছে সেখানে যায়।
অশোক ভুঁই নামে অপর এক দোকানদার বলেন, এই জিলাপির সাইজ হচ্ছে দুই থেকে আড়াই কেজি। দাম ১৪০ টাকা প্রতি কেজিতে। আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয় গিফট হিসাবে। সব জায়গায় করোনা পরিস্থিতির কারণে বাজার অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে। একটা সময় দেড়শো থেকে দুশো পিস বিক্রি হত। এই বছর অনেকটাই কমে গেছে। অপর এক মিষ্টি প্রস্তুতকারক তারক নাথ কর্মকারও বলেন, এবছর বিক্রিবাটা একটু কম আছে।
সৌমেন সিংহ নামে এক ক্রেতা বলেন, এরকম জিলাপি আমরা আগে কখনো দেখিনি, এই প্রথমবার দেখছি। এটা নেওয়ার জন্য এতদূর থেকে আসা। আমার বাড়ি গঙ্গাজলঘাটিতে। ওইখান থেকে আসা এই জিলাপি নিতে। জিলাপি নিয়ে যাব।