Durga Puja Spcieal: বিলুপ্ত বনেদিয়ানা, গ্রামবাসীদের উদ্যোগে স্বমহিমায় ফিরল এই রাজবাড়ির পুজো
হারিয়ে যাওয়া সেই পুজো এখন বারোয়ারি পুজোর রূপ নিয়েছে। তবে পুজোর স্মৃতি ফেরাতে উদ্যোগ নিল বংশধরেরা ও গ্রামবাসীরা।
![Durga Puja Spcieal: বিলুপ্ত বনেদিয়ানা, গ্রামবাসীদের উদ্যোগে স্বমহিমায় ফিরল এই রাজবাড়ির পুজো Durga puja 2021 Extinct zamindari worship of durga returned to its glory with initiative of villagers Durga Puja Spcieal: বিলুপ্ত বনেদিয়ানা, গ্রামবাসীদের উদ্যোগে স্বমহিমায় ফিরল এই রাজবাড়ির পুজো](https://feeds.abplive.com/onecms/images/uploaded-images/2021/10/02/0b5d9f6a83c0e3e95644f83f4c8f4408_original.jpg?impolicy=abp_cdn&imwidth=1200&height=675)
গোপাল চট্টোপাধ্যায়, বীরভূম: রাজবাড়ীর জমিদারি বিলুপ্তর সঙ্গে সঙ্গে বিলুপ্ত দুর্গাপুজোর বনেদিয়ানা। হারিয়ে যাওয়া সেই পুজো এখন বারোয়ারি পুজোর রূপ নিয়েছে। তবে পুজোর স্মৃতি ফেরাতে উদ্যোগ নিল বংশধরেরা ও গ্রামবাসীরা। রাজবাড়ী মন্দিরে নতুন করে প্রতিষ্ঠিত পুজো এবার ১০ বছরে পা দিল।
রায়পুরের রাজবাড়ীর জমিদারি শুরুর সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছিল ইলামবাজারের ঘন জঙ্গল সুখবাজার গ্রামে মন্দির প্রতিষ্ঠা করে দুর্গাপুজো। পুজোর সঙ্গে থাকত রাজকীয় আয়োজন। পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে পুজো দেখার জন্য মানুষ ভিড় জমাত মন্দিরে। সকল রীতি মেনেই হত পুজো । কিন্তু জমিদারি বিলুপ্তির সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল প্রাচীন দুর্গাপুজোটি। রায়পুর গ্রামে সেই 'বনেদি' উৎসব ফেরাতে নতুন করে রাজবাড়ীর বাসন্তী মন্দিরে দুর্গাপুজোর উদ্যোগ নেন বংশধর থেকে শুরু করে গ্রামবাসীরা। সেই পুজো এ বার দশ বছরে পা দিল।
তবে প্রথা মেনে সুখ বাজারের পুজো চললেও তা কার্যত বনেদিয়ানা হারিয়ে বারোয়ারি পুজোর রূপ নিয়েছে। রীতি মেনে রাজবাড়ী বাসন্তী মন্দিরে দুর্গাপুজোর আয়োজন করা হয়। সপ্তমীর দিন একটি পত্রিকা বের হয় স্থানীয় যে সমস্ত এলাকায় রয়েছে তার ইতিহাস থাকে সেই পত্রিকার মধ্যে। নবমীর দিন প্রায় ১ থেকে ২ হাজার মানুষের জন্য আয়োজন করা হয় ভোগ। সেই মেনুতে থাকে- পোলাও- আলুর দম । তারপর রীতি মেনেই বিসর্জন হয় মায়ের।
রায়পুর রাজবাড়ীর পরিবারের সদস্য বাদল সিংহ ও ইতিহাস থেকে জানা গিয়েছে, প্রায় ৩০০ বছর আগে বীরভূম জেলার রায়পুর গ্রামের অজয় নদের তীরে ভাগে ভাগে তৈরি হয় রায়পুরের রাজবাড়ি। মেদিনীপুরে চন্দ্রকোনা থেকে ব্যবসা বাণিজ্য করার জন্য ও বর্গী আক্রমণের হাত থেকে বাঁচতেই সেই সময় তিনি বীরভূমে চলে এসেছিলেন রায়পুরে । মেদিনীপুরে চন্দ্রকোনা থেকে বহু তাঁত শিল্পীকে নিয়ে বীরভূমের রায়পুর গ্রামে চলে এসেছিলেন লালচাঁদ সিংহ। এই এলাকায় এসে রায়চৌধুরী পরিবারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে জমিদারিত্ব শুরু করেছিলেন তাঁর ছেলে শ্যামকিশোর সিংহ। এই শ্যামকিশোর সিংহের তিন ছেলে । জগমোহন, ভুবনমোহন ও মনমোহন সিংহ । ভুবনমোহন সিংহের নামানুসারে 'ভুবনডাঙা' গ্রামের নামকরণ হয়েছিল । মনমোহন সিংহের তিন ছেলে । নীলকণ্ঠ, শ্রীকণ্ঠ ও সিতিকণ্ঠ সিংহ । কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনস্মৃতিতে এই শ্রীকণ্ঠ সিংহ 'শ্রীকণ্ঠবাবু' নামে উল্লিখিত রয়েছে ।
বাদল সিংহ এও জানান রাজবাড়ীর জমিদারির পুজো আগে ইলামবাজারে সুখ বাজারেই হত । তৎকালীন সময়ে রাজকীয় আয়োজন হত। তবে রীতি মেনেই বিভিন্ন অনুষ্ঠান থাকে। তিনি বলেন, "আমরা নিজেরাই নাটক লিখে প্রদর্শন করি , এছাড়াও ভোগ হয়, একটি পত্রিকা বের হয়, স্থানীয় ইতিহাস নিয়ে । কিন্তু করোনা অতিমারির ফলে অনুষ্ঠান বন্ধ, বাকি সব রীতি মেনেই হয় ।
এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা তিনি জানান ছোট থেকেই পুজো দেখে আসছি। তখন সুখ বাজারে পুজো হত এখন সেটা বারোয়ারি পুজোতে পরিণত হয়েছে । সেই স্মৃতি ধরে রাখতে জমিদার বাড়ি সদস্য ও আমরা গ্রামবাসীরা মিলিত হয়ে বাসন্তী মন্দির দুর্গা পুজো করি। ভীষণ আনন্দ হয়, বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়। সবাই একসঙ্গে মিলিত হয়ে উপভোগ করি । পর্যটকদের বক্তব্য, রাজবাড়ির সঙ্গে বহু ইতিহাস জড়িয়ে আছে। তা বহু দিনের ইচ্ছা ছিল। আজ বাড়ি যাব। এসেছি ঘুরে দেখলাম ভীষণ ভালো লাগল।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/metaverse-mid.png)