Durga Puja 2023:দশ হাতে দশ ফুল, শান্তিনিকেতন বোনের পুকুর ডাঙ্গায় হীরালিনি উৎসবে দেবী যেন শান্তির প্রতীক...
Boner Pukur Danga Of Sonajhuri: দেবী এখানেও দশভূজা। শুধু অস্ত্রের বদলে তাঁর দশ হাতে দশটি ফুল দেওয়া হয়।দু'দশক ধরে এই ভাবেই শান্তিনিকেতন বোনের পুকুর ডাঙ্গায় সোনাঝুরি জঙ্গলের আরাধনা হয়ে আসছে দেবী দুর্গার।
ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: এখানে দশ হাতে দশ অস্ত্রের পরিচিত মহিষাসুরমর্দিনীর মূর্তি নেই। তবে দেবী এখানেও দশভূজা। শুধু অস্ত্রের বদলে তাঁর দশ হাতে দশটি ফুল দেওয়া হয়। এখানে তিনি শান্তির প্রতীক। গত দু'দশক ধরে এই ভাবেই শান্তিনিকেতন (Shantiniketan Durga Puja 2023) বোনের পুকুর ডাঙ্গায় (Boner Pukur Danga Of Sonajhuri) সোনাঝুরি জঙ্গলের আরাধনা হয়ে আসছে দেবী দুর্গার (Durga Puja 2023)।
যে পথে পরিবর্তন...
উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, ২০০১ সালে যখন এই পুজো শুরু হয় তখন দেবীর হাতে অস্ত্র ছিল। কিন্তু এর পর ২০০২-এ আমেরিকায় ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে বিস্ফোরণ ও ইরাক যুদ্ধে বিশ্বে সন্ত্রাসের নগ্ন রূপ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তাই সেই বছর থেকেই 'বিশ্ব শান্তির' বার্তা দিতে শিল্পী বাঁধন দাস দেবীর হাতে অস্ত্রের বদলে পদ্মফুল তুলে দেন। তাঁর হাতেই শুরু হয়েছিল এই পুজো। তিনি এর নাম দিয়েছিলেন হীরালিনি দুর্গা উৎসব। ২০০২ সালে শিল্পীর অকাল প্রয়াণের পরে পুজোর ভার এসে পড়ে বোন চিত্রা ঘোষ ও তাঁর স্বামী শিল্পী আশিস ঘোষের উপরে। শরৎকালে যেমন দুর্গোৎসব হয়ে থাকে, তেমনই আদিবাসী জনজাতির মানুষেরা ‘বেলবরণ’ উৎসবে মাতেন। সোনাঝুরি জঙ্গলের চারপাশে বেশ কিছু আদিবাসী পরিবারের বসবাস রয়েছে। বোনের পুকুর ডাঙা, ফুলডাঙা, বল্লভপুর ডাঙা ও সরকার ডাঙা নামে প্রভৃতি গ্রামের আদিবাসী মানুষজনই এই পুজোর সমস্ত আয়োজন করে থাকেন। এছাড়াও, প্রতিবেশী ঝাড়খণ্ড রাজ্য থেকেও আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন এই পুজোয় অংশ নেন।
কী হয়?
পুজোটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল যে, এখানে প্রত্যেক বছর কোনও নতুন মূর্তি বানানো হয় না। পুরনো পাঁচটি মূর্তিকেই নতুন রূপ দিয়ে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পুজোর আয়োজন করা হয়। এই বছর লোহার দুর্গামূর্তি তৈরি হয়েছে। লক্ষ্মী, কার্তিক, গণেশ, সরস্বতী, মহিষাসুর, সকলের কাঠামোই তৈরি হয়েছে লোহা দিয়ে। আর বেদি তৈরি হচ্ছে কাঠ দিয়ে। তার উপর বিভিন্ন কারুকাজ করা থাকছে। শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরির হীরালিনী উৎসব নিয়েআশিস ঘোষ বললেন, "আমার শিক্ষক শিল্পী বাঁধন দাস এই পুজোর সূচনা করেছিলেন। এখন আদিবাসী মানুষজনের সহযোগিতায় এই পুজো চালিয়ে আসছি। আর পাঁচটা পুজোর থেকে এটি সম্পূর্ণ আলাদা। তাই মানুষ জন খুব উৎসাহের সঙ্গে এখানে আসেন। পুজোর ৪ দিন আদিবাসী, সাঁওতাল জনজাতির উৎসব ও অনুষ্ঠান হয় এখানে।" আর এক উদ্যোক্তা চিত্রা ঘোষ বলেন, "আদিবাসী সমাজকে এই পুজো এক করতে পারে। এটাই আমার ভালো লাগা।" সেই ভালো লাগার কথা মনে রেখেই সেজে উঠছে সোনাঝুরি।
আরও পড়ুন:দুর্গাপুরে পুজো উদ্বোধনে শুভেন্দু, শাহের পর এবার নিশানা বিরোধী দলনেতার, বললেন..