Visva Bharati:ইউনেস্কোর হেরিটেজ সম্মান পাওয়ার পরেও তরজা অব্যাহত শান্তিনিকেতনে
UNESCO Heritage: ইউনেস্কোর হেরিটেজ সম্মান পাওয়ার পরেও শান্তিনিকেতনকে কেন্দ্র করে তরজা অব্যাহত। সম্মান-বিতর্কে আশ্রমিক ও প্রাক্তনীদের একাংশকে জঞ্জাল বলে আক্রমণ করেছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।
ভাস্কর মুখোপাধ্যায় ও বিজেন্দ্র সিংহ, শান্তিনিকেতন: ইউনেস্কোর হেরিটেজ সম্মান পাওয়ার পরেও শান্তিনিকেতনকে কেন্দ্র করে তরজা অব্যাহত। সম্মান-বিতর্কে আশ্রমিক ও প্রাক্তনীদের একাংশকে জঞ্জাল বলে আক্রমণ করেছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। পাল্টা উপাচার্যকে নিশানা করে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় পড়েছে পোস্টার। বিতর্কে জড়িয়েছে রাজনীতিও।
কী ঘিরে বিতর্ক?
বাংলার গর্ব শান্তিনিকেতনের মুকুটে জুড়েছে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের পালক। আনন্দের অন্ত নেই শান্তিনিকেতনের পড়ুয়া, অধ্যাপক, শিক্ষাকর্মী থেকে আশ্রমিক, প্রাক্তনীদের। কিন্তু, এই আনন্দের তাল কাটল কিছু বিতর্কিত মন্তব্য এবং পোস্টারের জেরে! সোমবার বিশ্বকর্মা পুজো উপলক্ষ্যে শিল্পমেলার উদ্বোধন করতে গিয়ে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী আশ্রমিক ও প্রাক্তনীদের একাংশকে জঞ্জাল বলে আক্রমণ করেন। সরাসরি কারও নাম না করলেও, অনেকেই মনে করছেন, এর নেপথ্যে রয়েছে আশ্রমিক ও ঠাকুর পরিবারের সদস্য সুপ্রিয় ঠাকুরের একটি মন্তব্য। তিনি বলেছিলেন, 'অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। খুব ভাল লাগছে শুনে। কিন্তু, আশা করি আমরা এই যে বড় সম্মান দেখানো হল, সেটা উপযুক্ত হয়ে উঠতে পারব। সেই সম্বন্ধে আজকাল মাঝেমাঝে সন্দেহ জাগে। তো আশা করি বিশ্বভারতী যে এই বিরাট সম্মান পেল, তার উপযুক্ত হয়ে উঠতে পারবে।'
এদিন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেন, 'অনেকে বলেছেন, যারা নিজেদের আশ্রমিক এবং রাবীন্দ্রিক বলে দাবি করেন, যে এটা কি বিশ্বভারতী টিকিয়ে রাখতে পারবে? তার মানে প্রথমেই নেতিবাচক ভাবনাচিন্তা। তার মানে এই সমালোচকের যে দৃষ্টিতে দেখা, অর্থাৎ এটা হওয়াতে তাঁরা খুশি হননি। এখানে কৃতিত্ব সবারই।' শুধু বাগযুদ্ধেই শেষ নয়। এদিন ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায় উপাচার্য-কে আক্রমণ করে সাঁটানো বেশ কিছু পোস্টার। কোনওটায় লেখা, হেরিটেজ হওয়া আটকাতে ইউনেস্কোকে চিঠি দিয়েছিলেন উপাচার্য। কোনওটায় অভিযোগ, ইউনেস্কোর দলকে অপমান করে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন উপাচার্য। স্বাভাবিকভাবেই বাংলার একমাত্র কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে গত কয়েক বছরে যেভাবে একের পর এক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, 'ইউনেস্কো হেরিটেজ হিসাবে ঘোষণা করে। শান্তিনিকেতনকেও করেছে। এটা গর্বের কথা। কিন্তু, সেই সেই শান্তিনিকেতনকে বাঁচাবে কে? প্রশ্ন সেখানে। শান্তিনিকেতন কি বাঁচবে? না শান্তিনিকেতন অশান্তির নিকেতন হবে, প্রশ্ন তো বাংলার মানুষের সেটা। শান্তিনিকেতনের সেই ঔজ্জ্বল্য, সেই বৈভব আজ নেই... এক দিকে দিদি, আর এক দিকে মোদি।' সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম আবার বলেন, 'বিশ্বভারতীকে ধ্বংস করা হচ্ছে। শান্তিনিকেতনের যে আবহাওয়া, যে রাজনৈতিক পরিমণ্ডল, সামাজিক পরিমণ্ডল, যে সাংস্কৃতিক
পরিমণ্ডল ধ্বংস হচ্ছে, তখন দাঁড়িয়ে ইউনেস্কো অন্তত এই যে হেরিটেজের ট্যাগ দিয়েছে তাকে বাঁচাতে পারলে তাতে আমি গর্বিত হব।'
টানাপোড়েনের আবহেই ইউনেস্কোর সম্মান ধরে রাখার বিষয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ-সহ সব পক্ষকেই দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দিছেন প্রসার ভারতীর প্রাক্তন সিইও এবং বর্তমানে তৃণমূল সাংসদ জহর সরকার। সোমবার বিকেল ৫টার সময় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাসনা গৃহের সামনে থেকে শুরু হয় শোভাযাত্রা। রবীন্দ্রভবনে গিয়ে কবিগুরুর চেয়ারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান উপাচার্য। এরপর কলাভবন, পাঠভবন ঘুরে সেন্ট্রাল অফিসের সামনে গিয়ে শেষ হয় শোভাযাত্রা। সেই সঙ্গে শেষ হোক যাবতীয় বিতর্ক। চাইছেন রবীন্দ্র প্রেমীরা।
আরও পড়ুন:সন্দেহের তালিকায় আরও বিধায়ক-কাউন্সিলর! CBI তালিকায় কাদের নাম?
Education Loan Information:
Calculate Education Loan EMI