Nurse's Death Mystery : নার্সের মৃতদেহের ময়নাতদন্ত নিয়ে উত্তাল, বিজেপি-সিপিএম ধস্তাধস্তি; তুলকালাম কলকাতা পুলিশ মর্গে; কী চাইছে পরিবার ?
Hooghly News: মাত্র ৩ দিন আগে সিঙ্গুরের নার্সিংহোমে নার্সের কাজে যোগ দেন বছর ২৪-এর ওই নার্স। বুধবার রাতে নার্সিংহোমের চারতলায় ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।

ময়ূখঠাকুর চক্রবর্তী ও অনির্বাণ বিশ্বাস, কলকাতা : আস্থা নেই রাজ্য সরকারে, কেন্দ্রীয় হাসপাতালে ময়নাতদন্ত চায় মৃত নার্সের পরিবার। হুগলির সিঙ্গুরে নার্সিংহোমে কাজে যোগ দেওয়ার তিনদিনের মাথায় উদ্ধার হয় ঝুলন্ত দেহ। এই ঘটনায় সরাসরি খুনের অভিযোগ তুলেছে মৃত নার্সের পরিবার। প্রায় ৬ ঘণ্টা ধরে রাস্তায় বসে বিক্ষোভও দেখান তাঁরা। যদিও মৃতার পরিবারের সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। এই পরিস্থিতিতে এইমস কিংবা কমান্ড হাসপাতালে ময়নাতদন্ত চেয়ে পুলিশকে চিঠি পরিবারের। শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালের পর এবার পুলিশ মর্গ, ময়নাতদন্তে আপত্তি। জোর করে না জানিয়েই কলকাতা পুলিশের মর্গে দেহ আনার অভিযোগ। এদিকে গাড়িতে নার্সের মৃতদেহ থাকা অবস্থায় রণক্ষেত্রের পরিস্থিতি তৈরি হয় কলকাতা মেডিক্যালের সামনে। দেহের 'দখল' নিয়ে সিপিএম-বিজেপি লড়াই তুঙ্গে ওঠে। কলকাতা পুলিশ মর্গের সামনে সিপিএম-বিজেপি হাতাহাতি। একদিকে সিপিএমের কর্মী-সমর্থক, অন্যদিকে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। কলকাতা মেডিক্যালের সামনে থেকে বিক্ষোভকারীদের সরানোর চেষ্টা করে পুলিশ। সেখানেই গাড়ির ভিতরে রয়েছেন মৃতার পরিবারের সদস্যরা।
এসএফআই ও সিপিএমের তরফে অভিযোগ করা হয়, বিজেপি তৃণমূলের পক্ষ থেকে এখানে এসেছে পরিবারকে কিনতে। সেই চেষ্টা চালাচ্ছে। গাড়ি ঘিরে রেখে দিয়েছে। গাড়ির ভিতরে বিজেপি নেতারা বসে পরিবারকে কেনার চেষ্টা করছেন। ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। তৃণমূল যা করে, একই জিনিস করছে। এখানে তৃণমূল আসার হিম্মত দেখাতে পারছে না। কেস খেয়ে যাবে। ওইজন্য বিজেপি এসে পরিবারকে কেনার চেষ্টা করছে।
অন্যদিকে বিজেপির দাবি, পরিবার এখানে পোস্ট-মর্টেম চাইছে না। লিখে দেওয়া হয়েছে। এসএফআইয়ের অভিযোগ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা তমোঘ্ন ঘোষ বলেন, "শুরু থেকে লড়াইটা আমরাই দিচ্ছি। এই রাজনীতি ওরা বন্ধ করুক। পরিবার লিখিতভাবে দিয়েছে, তাঁরা কমান্ড হাসপাতাল অথবা এইমসে পোস্ট মর্টেম চান। আমাদের মূল লক্ষ্য এটাই, সেটাই করানো দরকার। নোংরা রাজনীতি করছে। এটা বন্ধ করুক।"
বিস্তারিত...
মাত্র ৩ দিন আগে সিঙ্গুরের নার্সিংহোমে নার্সের কাজে যোগ দেন বছর ২৪-এর ওই নার্স। বুধবার রাতে নার্সিংহোমের চারতলায় ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। মৃত নার্সের এক সহকর্মী বলেন, আমি দেখতে পাই...রাতে দরজা বন্ধ ছিল...জানালা দিয়ে দেখি ঝুলছে। যদিও, মৃতার পরিবারের সরাসরি অভিযোগ, তাঁর মেয়েকে খুন করা হয়েছে। এরপর নার্সের মৃতদেহের ময়নাতদন্ত নিয়ে শুরু হয় টানাপোড়েন। কিছুক্ষণ আগে হুগলি জেলা পুলিশের তরফে স্পষ্টভাবে বলে দেওয়া হয়েছে, মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য তারা শ্রীরামপুরের ওয়ালশ হাসপাতালে পাঠিয়েছিল। কিন্তু, ওই হাসপাতালের সুপার দেহ সেখানে ময়নাতদন্ত না করিয়ে তা রেফার করে দেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ মর্গে। পুলিশের দাবি,মৃতের পরিবারের সদস্যদেরও শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করাতে কোনও আপত্তি ছিল না। কিন্তু, ওয়ালশ হাসপাতাল দেহ রেফার করে দেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের পুলিশ মর্গে। কলকাতা পুলিশ মর্গে দেহ নিয়ে আসা হয়। কিন্তু, মৃতের পরিবারের সদস্যরা এখানে পোস্ট-মর্টেম করাতে চাইছেন না। তাঁরা চাইছেন, এইমস হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করাতে।
কিন্তু, মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছেন, এইমস হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করাতে হলে আদালত থেকে সম্মতি নিয়ে আসতে হবে। কলকাতা মেডিক্যালের কর্তৃপক্ষ এইমস হাসপাতালে রেফার করতে পারবেন না। এদিকে আদালতের সম্মতি আনা আজ কার্যত অসম্ভব। ১৫ অগাস্টের যে কাজের সময় সেটাও শেষ হয়ে গেছে। ফলে, আগামীকালে আগে সেটা সম্ভব নয়। ফলে, দেহ কোথায় থাকবে, পোস্ট-মর্টেম আজ আদৌ হবে কি না , কী পরিস্থিতি হবে সবই বিশবাঁও জলে রয়েছে।






















