RG Kar Lady Doctor's Death: 'বিকাল ৩টের মধ্যে সন্দীপ ঘোষকে লম্বা ছুটিতে যেতে বলুন, না হলে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেব', 'অগ্নিশর্মা' প্রধান বিচারপতি
National Medical College: আরজি কর থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরেই সন্দীপ ঘোষকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ করে পাঠানো হয়।
সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : আরজি কর কাণ্ডে পদত্যাগী অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে আজ এই সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দেন, 'বিকাল তিনটার মধ্যে সন্দীপ ঘোষকে বলুন ছুটির আবেদন করে লম্বা ছুটিতে যেতে। না হলে আমরা প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেব।' প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, আপনারা তাঁকে এভাবে পুরস্কৃত করতে পারেন না। পদত্যাগের চার ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে ফের দায়িত্ব দেওয়া হল ! এটা কীভাবে সম্ভব ? সন্দীপ ঘোষ এতই প্রভাবশালী ?' প্রশ্ন প্রধান বিচারপতির। 'আপনার আচরণ তো অভিভাবকের মত হওয়া উচিত ছিল। আপনার উচিত এখনই বাড়ি ফিরে যাওয়া।' আর.জি কর মেডিক্যালের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে মন্তব্য প্রধান বিচারপতির। এছাড়া প্রধান বিচারপতি আরজি কর মামলায় কেস ডায়েরিও তলব করেন। সেই অনুযায়ী কেস ডায়েরি আদালতে জমা করেছে পুলিশ। প্রধান বিচারপতি তা খতিয়ে দেখছেন। ' প্রসঙ্গত, আরজি কর থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরেই সন্দীপ ঘোষকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ করে পাঠানো হয়। যদিও অধ্যক্ষ হিসেবে তাঁকে মানতে নারাজ ন্য়াশনাল মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া-চিকিৎসকরা। অধ্যক্ষের ঘরের সামনে প্রশাসনিক ভবনের গেটেই তালা ঝুলিয়ে দেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে ১৫ দিনের ছুটির আবেদন করেছেন সন্দীপ ঘোষ।
আজ মামলার গতিপ্রকৃতি-
কেস ডায়েরি প্রধান বিচারপতিকে দেওয়া হয়েছে এবং তিনি তা খতিয়ে দেখছেন। ২টো ৪৫ থেকে ৩টের মধ্যে এই মামলায় অন্তর্বর্তী পর্যায়ের যে নির্দেশের প্রয়োজন রয়েছে তা প্রধান বিচারপতি দেবেন। পুলিশের তরফে এই ঘটনার পর কী কী হয়েছে, পুলিশ কী পদক্ষেপ নিয়েছিল তা সময় ধরে ইতিমধ্যেই আদালতে জমা করা হয়েছে। পুলিশের বক্তব্য, সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ হাসপাতালে অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার চিকিৎসকের পরিবারকে ফোন করে গোটা বিষয়টি জানান। এরপর সকাল ১০টা বেজে ১০ মিনিটে আরজি করে পুলিশের আউটপোস্টে খবর যায়। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ থানার কাছে খবর চলে যায়। সকাল সাড়ে ১১টার মধ্যে পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা উপস্থিত হন। তারপর দুপুর ১টা নাগাদ নির্যাতিতার বাবা-মা হাসপাতালে এসে উপস্থিত হন। পুলিশের বক্তব্য, যেটা বলা হচ্ছিল যে পরিবারকে ৩ ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়েছে সেটা একেবারেই সঠিক নয়। কারণ, তাঁরা ১টায় উপস্থিত হলে, তার ১০ মিনিটের মধ্যে সেমিনার হলে যেখানে নির্যাতিতার দেহ রাখা ছিল, সেখানে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁদের চেয়ার দিয়ে বসানো হয়। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা সেমিনার হলে পর্যবেক্ষণ করছিলেন। ফলে, তিন ঘণ্টা পরিবারকে বসিয়ে রেখে দেহ দেখতে দেওয়া হয়নি বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে সেই অভিযোগ খণ্ডন করে পুলিশ।
মামলার প্রথমার্ধে প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেছিলেন, কেন অস্বাভাবিক মামলা রুজু করা হয়েছে, কেন খুনের মামলা রুজু করা হয়নি ? এনিয়ে পুলিশের বক্তব্য, এধরনের কোনও ঘটনা ঘটলে সেখানে সঙ্গে সঙ্গে কোনও অভিযোগ না এলে অস্বাভাবিক মামলা রুজু করা হয়। সেই মামলায় ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, তাহলে অধ্যক্ষ বা অন্যান্য যেসব আধিকারিক ছিলেন তাঁরা কেন অভিযোগ করলেন না ? পুলিশের আর কোনও বক্তব্য পেশ করার দরকার নেই। ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়ে এসেছে। এরপর তিনি কেস ডায়েরি খতিয়ে দেখে পরবর্তী পর্যায়ের নির্দেশ দেবেন।