Suri Cooperative Bank: গরুপাচারের কালো টাকা সাদা করা হতো! সিউড়ি সমবায় ব্যাঙ্কে ৩৩০ বেনামি অ্যাকাউন্ট
Birbhum News: গরুপাচার মামলার তদন্তে নেমে এর আগে সিউড়ির সমবায় ব্যাঙ্কে ১৭৭টি বেনামি অ্যাকাউন্টের হদিশ পেয়েছিল সিবিআই।
প্রকাশ সিনহা, সিউড়ি: সিউড়ির সমবায় ব্যাঙ্কে (Suri Cooperative Bank) শয়ে শয়ে 'বেনামি' অ্যাকাউন্টের হদিশ পেল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (CBI)। গরুপাচারকাণ্ডের তদন্তে নেমে ফের সিউড়ির সমবায় ব্যাঙ্কে সিবিআই। ১৭৭টির পরে সমবায় ব্যাঙ্কে আরও ১৫৩টি 'বেনামি' অ্যাকাউন্টের হদিশ। 'কেন, কী উদ্দেশ্যে ৩৩০টি বেনামি অ্যাকাউন্ট? টাকা যেত কাদের কাছে? গরুপাচারের কালো টাকা সাদা করতেই শয়ে শয়ে বেনামি অ্যাকাউন্ট', সিউড়ির সমবায় ব্যাঙ্কে ম্যারাথন তল্লাশি চালিয়ে নথি উদ্ধারের দাবি সিবিআই (Birbhum News)।
কী উদ্দেশ্যে ৩৩০টি বেনামি অ্যাকাউন্ট? টাকা যেত কাদের কাছে?
গরুপাচার মামলার তদন্তে নেমে এর আগে সিউড়ির সমবায় ব্যাঙ্কে ১৭৭টি বেনামি অ্যাকাউন্টের হদিশ পেয়েছিল সিবিআই। বুধবার ফের ম্যারাথন তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নথি উদ্ধার করা হয়। তাতেই ১৫৩টি বেনামি অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলেছে বলে জানা গিয়েছে। গোয়েন্দাদের দাবি, গরুপাচারের কালো টাকা সাদা করতেই ওই ডেমো অ্যাকাউন্টগুলি খোলা হয় এবং সেখান থেকেই কালো টাকা সাদা করা হয়। সিবিআই আধিকারিকরা জানিয়েছেন, যত দিন যাচ্ছে, ততই নতুন নতুন অ্যাকাউন্টের খোঁজ মিলছে।
এ দিন সকালে ব্যাঙ্কে একটি অ্যাকাউন্টের তালিকা ধরিয়ে দেন সিবিআই আধিকারিকরা। সেই সংক্রান্ত সমস্ত অ্যাকাউন্টের বিশদ তথ্য দিতে হবে বলে জানিয়ে দেন। এর পর গ্রামে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। যাঁদের না জানিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে, তাঁদের বয়ান রেকর্ড করা হয়। তার পরই আরও ১৫৩টি অ্যাকাউন্টের খোঁজ মেলে। তবে সিবিআই আধিকারিকদের দাবি, এখানেই শেষ নয়। আরও অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সমবায় ব্যাঙ্ক ছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারি এবং সরকারি ব্যাঙ্কে এমন বহু অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তাই হিসেব কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, এখনই বলা সম্ভব নয়।
সিবিআই সূত্রে খবর, গ্রামবাসীদের অধিকাংশ জানিয়েছেন, তাঁরা সই পর্যন্ত করতে পারেন না। টিপসই দিয়ে কাজ চালান। তাঁদের মধ্যে কেউ ব্যাঙ্কে যাননি। পঞ্চায়েতে কিছু কাজ বিয়ে নথি জমা করেছিলেন। এখন জানছেন, তাঁদের নামে অ্যাকাউন্ট রয়েছে সমবায় ব্যাঙ্ক। তাহলে কি গরুপাচারের কালো টাকা সাদা করতেই ওই ডেমো অ্যাকাউন্টগুলি ব্যবহার করা হয়! সিবিআই অন্তত তেমনই মনে করছে।
আরও পড়ুন: Presidency University: অনুমতি দিল না প্রেসিডেন্সি কর্তৃপক্ষ, গেটেই সরস্বতী পুজোর আয়োজন TMCP-র
এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাইলে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, "আগেও অ্যাকউন্ট পাওয়া গিয়েছে। এখনও পাওয়া যাচ্ছে। এত টাকা যেখআনে অবৈধ ভাবে লেনদেন করা হয়েছে, কোথাও তো রাখার ব্যবস্থা করতে হবে! কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে, যারা রেখেছে তারা তো দোষীই কিন্তু সমবায় ব্যাঙ্কে কী ভাবে এত টাকা বেআইনি ভাবে রাখা হল! ব্যাঙ্কের ম্যানেজার-সহ সকলের বিরুদ্ধেও কড়া পদক্ষেপ করা উচিত।"
এ দিকে, তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, "একটা কথা বার বার বলছি। একটি তদন্ত, তারই বিভিন্ন অধ্যায় নানা ভাবে উন্মোচিত হচ্ছে। আপনি যেমন চাইছেন তদন্ত দ্রুত শেষ হোক, আমরাও চাই তদন্ত শেষ হোক দ্রুত। সত্য উদঘাটিত হোক। দুর্নীতি যে সহ্য করা হবে না, তা গোড়া থেকেই বলে আসছি আমরা।। আগামী দিনেও করে দেখাব। কিন্তু এই তদন্ত যদি আদি-অনন্ত কাল ধরে চলতে থাকে...সিবিআই আগেও এমন বহু তদন্ত শেষ করতে পারেনি। তাদের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। কারণ সিবিআই-এর এফআইআর-এ নাম থাকা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে তো তদন্ত শুরই হল না এখনও!"
সিবিআই সূত্রে খবর, গ্রামবাসীদের অধিকাংশ জানিয়েছেন, তাঁরা সই পর্যন্ত করতে পারেন না।
এ দিন এবিপি আনন্দের মুখোমুখি হয়ে গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, তাঁর যা সই, ব্যাঙ্কে থাকা তাঁর নামের অ্যাকাউন্টে থাকা সই সম্পূর্ণ আলাদা। অর্থাৎ তাঁর সই জাল করে কেউ বা কারা ওই অ্য়াকাউন্ট খোলা হয়েছে বলে সন্দেহ তাঁর। এমনকি তাঁদের নামে সমবায় ব্যাঙ্কে যে অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তা জানতেনই না বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসীদের অনেকেই।