RG Kar Case: 'নিয়ম ভেঙে নিয়োগ ৮৪ MBBS হাউজস্টাফ', CBI -এর হাতে সন্দীপের বিরুদ্ধে কোন কোন নথি?
Sandip Ghosh: একাধিক লাইসেন্সহীন সংস্থাকেও সন্দীপ ঘোষ টেন্ডার দিয়েছেন বলে অভিযোগ সিবিআইয়ের
পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা: সন্দীপ ঘোষের বেলেঘাটার বাড়িতে সিবিআই তল্লাশিতে উদ্ধার চাঞ্চল্যকর নথি। সন্দীপের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের নথি ও তদন্ত রিপোর্ট উদ্ধার তাঁর বাড়ি থেকেই। আদালতে নথি জমা দিয়ে দাবি সিবিআইয়ের। এছাড়াও সন্দীপের বিরুদ্ধে মিলেছে বেনিয়মের একাধিক অভিযোগ। '২০২২-২৩ সালে বেআইনি ভাবে নিয়োগ করা হয় ৮৪ জন এমবিবিএস হাউজস্টাফকে। নিয়োগ কমিটির সই ছাড়াই চলে নিয়োগপ্রক্রিয়া। লাইসেন্সহীন ৩ সংস্থাকেও টেন্ডার দেন সন্দীপ ঘোষ', দাবি সিবিআইয়ের
২৫ অগাস্ট বেলেঘাটার বাড়িতে তদন্তে জন্য যায় সিবিআই। সেই বাড়িতেই মেলে একাধিক নথি। সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে যে তদন্ত রয়েছে তার অভিযোগপত্র এবং তদন্ত রিপোর্টের আসল রিপোর্ট মেলে সন্দীপের বাড়ি থেকেই। এটা কীভাবে হল তার খোঁজ নিচ্ছে সিবিআই। যে ৮৪ জন এমবিবিএস হাউজস্টাফ নিয়োগ করা হয়। তার জন্য ১৩ সদস্যের একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু নিয়োগের নথিতে এই সদস্যদের সই নেই। ফলে সিবিআইয়ের ধারণা পুরোপুরি বেআইনিভাবে হাউজস্টাফ নিয়োগ হয়েছে। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, ল্যাবের যন্ত্রপাতি থেকে শুরু জল ও আসবাব সংক্রান্ত বিষয়েও টেন্ডার হয়েছে। যে টেন্ডার পেয়েছে লাইসেন্সহীন সংস্থা। এসবও সন্দীপ ঘোষই করেছে বলে নথি সামনে এনে অভিযোগ সিবিআইয়ের।
এর আগে ২ বার বদলি হওয়া সত্ত্বেও কয়েক দিনের মধ্যেই তিনি ফিরে এসেছিলেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি থেকে শুরু করে গার্ডেনরিচের বাসিন্দা তাপসচন্দ্র পাল, সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ বহু আগে থেকে করলেও, কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি তাঁর বিরুদ্ধে। এখন সিবিআই যখন আর্থিক অনিয়মের তদন্তে নেমে সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করেছে, তখন সামনে আসছে তার প্রভাব-প্রতিপত্তির একাধিক উদাহরণ।
আলিপুরের বিশেষ CBI আদালতে জমা দেওয়া রিপোর্টে কেন্দ্রীয় এজেন্সি দাবি করেছে, ভেন্ডারদের বিভিন্ন কাজের বরাত দেওয়া নিয়ে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে যে অভিযোগ জমা পড়েছিল, সেই সংক্রান্ত আসল নথি ও প্রতিলিপি উদ্ধার হয়েছে সন্দীপ ঘোষের বাড়ি থেকেই! অর্থাৎ যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁর বাড়িতেই অভিযোগের সব ফাইল ছিল। আদালতে জমা দেওয়া রিপোর্টে CBI আরও দাবি করেছে, সন্দীপ ঘোষ আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে অধ্যক্ষ থাকাকালীন, ২০২২ ও ২৩ সালে নিয়ম না মেনে ৮৪ জন MBBS হাউস স্টাফ নিয়োগ করা হয়।
দুর্নীতির মামলায়, আরজি কর মেডিক্য়াল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের পাশাপাশি তাঁর অতিরিক্ত নিরাপত্তারক্ষী আফসার আলিকেও গ্রেফতার করেছে CBI। মঙ্গলবার তাঁদের আদালতে পেশ করে, সেই আফসার আলি সম্পর্কেও চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরেছে CBI। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সূত্রে খবর, আদালতে জমা দেওয়া রিপোর্টের ১০ নম্বর পয়েন্টে তারা জানিয়েছে, সন্দীপ ঘোষের নিরাপত্তারক্ষী হওয়ার সূত্রেই আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন কাজের বরাত পেয়েছিলেন আফসার। আরজি কর মেডিক্য়ালে 'ক্য়াফে' খুলেছিল আফসারের স্ত্রীর মালিকানাধীন সংস্থা। ক্য়াফে তৈরির জন্য যে টেন্ডার ডাকা হয়েছিল, তাতেও গরমিল ছিল বলে আদালতে দাবি করেছে CBI। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, টেন্ডারে অংশ নেয় ৪টি সংস্থা। কিন্তু, সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে সুসম্পর্কের সুবাদে শেষমেশ বরাত পান আফসারের স্ত্রীর সংস্থা। আশ্চর্যের বিষয় হল, আদালতে CBI দাবি করেছে, খাতায় কলমে ৪টি সংস্থা টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অংশ নিলেও, সবার নথিতেই দেখা গেছে হাতের লেখা একজনেরই। বরাত পাওয়ার পর যে ১ লক্ষ টাকা ফেরতযোগ্য থাকে না, সেটাও আফসারের স্ত্রীর সংস্থাকে সন্দীপ ঘোষ ফেরত পাইয়ে দিয়েছিলেন।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও পড়ুন: ফের আক্রান্ত স্বাস্থ্যক্ষেত্র! সাগর দত্ত মেডিক্যালে হামলা-ভাঙচুর